Header Ads

ডিপ্রেশন বর্তমান যুগের মানুষের এক প্রধান সমস্যা


সমাজটা বদলে গিয়েছে। বদলে গিয়েছে মানুষের জীবনযাত্রা, ব্যবহার। আজকাল খেলার মাঠ, সেই খোলামেলা জীবন, ঘুড়ি ওড়ানো সব ভুলে বাচ্চা থেকে বয়স্ক সবাই অন্তর্মুখী। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আমরা ঘরমুখী। এই একরকম জীবনযাত্রার জন্যে যুবসমাজ অবসাদ, Anti drepressant, Panic এই শব্দগুলোর সাথে বেশি পরিচিত হয়ে পড়ছে। আজকাল একটা শব্দের সঙ্গে আমরা প্রায়ই পরিচিত হই সেটা হল অবসাদ বা Depression. WHO র তথ্য অনুযায়ী প্রতি ২০ জনে ১ জন করে Depression এ ভোগেন। আমরা কমবেশি সবাই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে মানসিক অবসাদে পড়ি। ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি মানসিক অবসাদে ভোগেন। এই অবসাদের স্বাভাবিক উপসর্গ বুঝতে পারলেও অনেক সময়ই আমরা এড়িয়ে যাই উপসর্গগুলো। একটা মেয়ে বা ছেলে একাকিত্ব বোধ করছে বা Socially Isolated থাকতে চাইছে, আমরা বলি অমিশুকে। কিন্তু কেন? কোনো মানুষের আচরণের পরিবর্তন দেখলে আমরা তাকে হয় মানসিক রোগী কিংবা সটান পাগল বলে চালিয়ে দি। কিন্তু কারণ জানার চেষ্টা করিনা। 


অবসাদের সাথে Anxiety ভীষণভাবে জড়িত।  বর্তমান পরিস্থিতিতে অবসাদ নেই বা Anxiety নেই এইরকম মানুষ কম। তবে কোনো রোগ যখন সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি পর্যায়ে দেখা যায় তাকে Disorder বলে। এই অবসাদের জন্যে আমদের শরীরে অবস্থিত কিছু Neurotransmitter, Brain এর Frontal Part দায়ী। Anxiety এর কারণ হিসাবে আমরা সেরোটোনিন বলে একটা Neurotransmitter কে দায়ী করতে পারি। সেরোটোনিনের লেভেল কম থাকলে বমির ভাব, ভয়, Apprehension এইগুলো দেখা যায়। শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন হিসাবে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ পালস রেট এইসব বোঝায়। মানসিক অবসাদে মানুষের তিরিক্ষি মেজাজ, একা থাকার প্রবণতা, কোনো কিছু ভালো না লাগার, নেতিবাচক চিন্তাভাবনা, ঘুম না হওয়ার মতো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। এই অবসাদে Bipolar syndrome দেখা যায়। কখনো অবসাদ অবস্থা এতটাই বেশি থাকে যে সামাজিক ও পারিবারিক কোনো কাজ ভালো লাগে না। আবার সেই মানুষ বেশ কিছুদিন পর অতিরিক্ত Active, কার্য করার ইচ্ছে, অনেক  কথা,  ঘুম কম ইত্যাদি দেখা যায়। অবসাদ তিনটে ধরণের, ১. Mild ২. Moderate এবং  ৩.severe. Severe এর ক্ষেত্রে আমরা আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। শুধু করোনা নয়, বর্তমানে মানুষের কাজের চাপ, বেকারত্ব, অনিয়মিত জীবনযাত্রা, কখনো কখনো প্রেমঘটিত কারণেও হতাশা আসে। 

রূপালী পর্দায় এইরকম অবসাদ থেকে আত্মহত্যা অনেক হয়েছে। Casting couch বা ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে অনেকে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু বিদর্ভের চাষীরা!! তাদের তো রূপালী পর্দার মতো আলোর ছটা নেই, তাই ভুলে গিয়েছে সবাই তাদের হাহাকার আর আত্মহত্যার গল্প। অবসাদ হল এমন একটি জিনিস যেটাকে কমানো বেশ কঠিন। ওষুধ ও Counselling এর সাহায্যে চেষ্টা করা হয়, সুফল ও মেলে। কিন্তু এর মধ্য যদি Schizophrenia র মতো রোগ থাকে তাহলে বেশ মুশকিল। আশা করব, মানুষ অবসাদে ভুগলে তার পাশে দাঁড়ানোর, আশ্বাস দেওয়া, ভালো বই, জীবনযাত্রা ভালো করার। অবসাদের জন্যে মানুষ অনেক সময় ড্রাগ আসক্ত হয়ে পড়ছে, অবসাদ মানেই নেতিবাচক না। অবসাদ দূর করতে যোগ, ধ্যান, প্রাণায়াম বেশ কার্যকরী। 

অবসাদের প্রকৃত কারণ হিসাবে বৈজ্ঞানিক বা ডাক্তাররা কিছু বলতে পারেন নি, তবে জিনগত, ব্যবহারগত, পরিবেশগত কারণই প্রধান। বর্তমানে করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অবসাদ হওয়া স্বাভাবিক। আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছুদিন এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, তবে আজ আমি সুস্থ। অবসাদগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকুন, দূরে ঠেলে দেবেন না।

No comments