Header Ads

৩২ বছর বয়সেই ইংরেজি সাহিত্যে নোবেলের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ দত্ত


নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চেনেননা এমন বাঙালি নেই কিন্তু ইংরেজি সাহিত্যে নোবেলের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন আরো এক রবীন্দ্রনাথ যাকে আমরা কেউ চিনিনা বললেই চলে। 


ইংরেজি সাহিত্যে নোবেলের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ দত্ত। পরাধীন ভারতে একটা কথা প্রচলিত ছিল 'বাঙালি হয়ে ইংরেজি জানোনা'। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ইংরেজি সাহিত্যে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিলেন। অনেক বাঙালিই বাংলা সাহিত্যের পাশাপাশি ইংরেজি সাহিত্য রচনাতেও ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী। এরকমই একজন বাঙালি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ দত্ত। রবীন্দ্রনাথ দত্তকে অনেকেই রবি দত্ত নামেই চিনতো তখনকার সময়ে। 

রবীন্দ্রনাথ দত্ত ছাব্বিশ বছর বয়সে রচনা করেন 'Echoes from East and West'. এই লেখার জন্য তিনি ১৯১৬ খ্রীস্টাব্দে ইংরেজি সাহিত্যে নোবেলের জন্য মনোনীত হন।

রবীন্দ্রনাথ দত্ত ১৮৮৩ সালের ১লা অক্টোবর শঙ্কর ঘোষ লেনে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও বর্তমানে শঙ্কর ঘোষ লেনে ওনার কোনো আবক্ষ মূর্তি আছে কিনা আমার জানা নেই। ওখানকার কোনো বাঙালি রবীন্দ্রনাথ দত্তকে জানেন কিনা সে বিষয়েও সন্দেহ আছে। ওনার পিতা ছিলেন জ্ঞানেন্দ্রনাথ দত্ত। নেতাজীর আত্মীয়ও ছিলেন রবীন্দ্রনাথ দত্ত। 

তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ. এবং এম.এ. পাশ করেন।  ১৯০৮ সালে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে বার হবার জন্য ডাক পান যদিও তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তিনি ইংরেজি এবং ভাষাবিদ্যা সম্পর্কে পড়াতেন। সেই সময়ে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। তিনি ইংরেজ মহিলা এমিলি এটকিনসনকে বিবাহ করেন। 

এত কম বয়সেই ওনার লেখা নোবেলের জন্য মনোনীত হয়। হয়তো তিনি ভবিষ্যতে আরো কোনো লেখার জন্য নোবেল পেতে পারতেন কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি ১৯১৭ সালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই মৃত্যু বরণ করেন। তিনি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বরাহনগরেই বসবাস করতেন।

হয়তো তিনি নোবেল পাননি কিন্তু একজন বাঙালি হিসেবে ইংরেজি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য তিনি মনোনীত হয়েছিলেন এর চেয়ে গর্বের বিষয় আর কিই বা হতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমরা বাঙালিরা কেউই রবীন্দ্রনাথ দত্তকে মনে রাখিনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল জয়ের পর এটি ছিল দ্বিতীয় কোনো বাঙালি ও সম্ভবত প্রথম এশিয়ান যিনি ইংরেজি সাহিত্যে নোবেলের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।

প্রতিবেদন- অমিত দে


No comments