Header Ads

কলকাতার যে দোকানে আজও কলাপাতায় কচুরি পরিবেশন করা হয়


'কচুরি' যে খাবারের কথা শুনলে বাঙালির জিভে জল চলে আসে। বাঙালির অন্যতম এক মুখরোচক খাবার হলো কচুরি। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে উত্তর কলকাতার কচুরি সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। এখানকার কচুরিতে আলাদা বৈচিত্র্য রয়েছে। উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে ঘোড়ায় চড়া নেতাজী মূর্তির ঠিক উল্টোদিকে অবস্থান করছে 'আদি হরিদাস মোদকের দোকান'। যে দোকানের কচুরির স্বাদ কলকাতার সকলের চোখে-মুখে লেগে আছে৷ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে রানি রাসমণি, শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, গিরিশ ঘোষ, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রাজা রামমোহন রায়ের মতো মহান ব্যক্তিগণ এই দোকানের কচুরির স্বাদ গ্রহণ করেছেন। 


২৫০ বছর ধরে হরিদাস মোদকের কচুরির গন্ধে মম করছে গোটা তিলোত্তমা। হরিদাস মোদকের কচুরির মূল আকর্ষণ হলো কচুরির সাথে খোসাসমেত আলুর তরকারি। ছয় প্রজন্ম পেরিয়ে যাওয়ার পরও রমরমিয়ে চলছে এই দোকান৷ বংশ পরম্পরায় দারুণভাবে টিকে আছে হরিদাস মোদকের দোকানের ঐতিহ্য। উত্তর কলকাতার কথা হরিদাস মোদকের কচুরি ছাড়া কল্পনা করাই যায়না৷ এই প্রতিবেদনের আসল কথা এখনও বলা হয়নি আপনাদের। হরিদাস মোদকের দোকানে আজও কলাপাতায় কচুরি পরিবেশন করা হয়।

'আদি হরিদাস মোদকে'র দোকানঘরটি বহু পুরানো হলেও এখানে পা রাখলে কথা বলবে ইতিহাস। ছয়-ছয়টা প্রজন্মের মানুষজনের স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই দোকানের সাথে। দোকানঘরের ভেতরে রাখা সারি সারি কাঠের বেঞ্চ-টেবিল৷ রঙ-চটে দেওয়ালে লাগানো আছে মহাপুরুষদের বাঁধানো ছবি ও তার গায়ে ঝুলছে রজনীগন্ধার সরু মালা। দোকানের ভেতর লোকজনের কোলাহল। কচুরিভর্তি ঝুড়ি হাতে একজন এগিয়ে এসে সবুজ কলাপাতায় রেখে দেয় ঘিয়েরঙা দুটো কচুরি তারপর একজন এসে দিয়ে যায় হাতাভরা ছোলার ডাল নাহলে খোসাযুক্ত আলুর হলদে তরকারি। 

তরকারি দিয়ে দুটো কচুরি খাওয়াও যেন একপ্রকার নস্টালজিয়া আদি হরিদাস মোদকের দোকানে। কলকাতার এখন কোনো দোকানেই কলাপাতায় কচুরি পরিবেশন করা হয়না। আদি হরিদাস মোদকই কলকাতার একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেখানে আজও কলাপাতায় কচুরি পরিবেশন করা হয়। 

আদি হরিদাস মোদকের কলাপাতায় দেওয়া কচুরির মায়াতে কলকাতার বহু মানুষেরই সকাল শুরু হয়৷ ২৫০ বছর ধরে এই ধারাকে বজায় রাখা সত্যিই কঠিনতর ব্যাপার।

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments