Header Ads

প্রথম বাঙালি তথা ভারতীয় হিসেবে ডাঃ রিমিংটন পুরস্কার পেলেন বাংলার ম্যানগ্রোভ ম্যান


সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে ১০ বছর ধরে প্রাণপণে লড়াই করে চলেছেন বাংলার 'ম্যানগ্রোভ ম্যান' উমাশঙ্কর মণ্ডল। গোসাবার সাতজেলিয়া দ্বীপের চরঘেরির বাসিন্দা উমাশঙ্কর মণ্ডল পেশায় একজন ভূগোলের শিক্ষক। সম্প্রতি তিনি প্রথম বাঙালি তথা ভারতীয় হিসেবে পেলেন ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড বা ডাব্লিউ ডাব্লিউ এফ ফান্ডের ডাঃ রিমিংটন পুরস্কার। 


সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম চরঘেরিতে উমাশঙ্কর বাবু ছোটো থেকে বড় হয়েছেন। সুন্দরবনের ব্যাঘ্র এলাকার ঠিক পাশেই তাঁর বাড়ি। কর্মসূত্রে তিনি থাকেন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে। সেখানকার একটি স্কুলে ভূগোলের শিক্ষকতা করেন তিনি। তাঁর স্ত্রীও স্কুলের  শিক্ষিকা। বাইরে থাকলেও গ্রামকে ভোলেননি তিনি। সুন্দরবনের বাসিন্দা ও ভূগোলের ছাত্র হিসেবে তিনি বুঝেছিলেন, বাদাবনের মানুষকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র ম্যানগ্রোভই। গত দশ বছরে সাড়ে ছয় লক্ষেরও বেশি ম্যানগ্রোভ রোপণ করেছেন তিনি। 

উমাশঙ্কর বাবুর নিজস্ব উদ্যোগে 'পূর্বাশা ইকো হেল্পলাইন সোসাইটি' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গড়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ম্যানগ্রোভ রোপণের আদর্শ মডেল তৈরি করেছেন। পাশাপাশি এলাকার আর্থ সামাজিক চিত্রটাই বদলে ফেলেছেন তিনি৷ 

আয়লার পর চরঘেরির আশেপাশে বাইন, গরান প্রভৃতি ম্যানগ্রোভের চারা লাগানোর কাজ শুরু করেন তিনি। নদীতে ভেসে আসা অনেক ম্যানগ্রোভের বীজ সংগ্রহ করে তিনি স্থানীয় ২২০ জন মানুষকে একত্র করে বীজ ও গাছ লাগানোর বিপুল কর্মকাণ্ড শুরু করেন৷ ম্যানগ্রোভ অরণ্য সৃজন ও রক্ষণে তিনি এক ও অদ্বিতীয়। বিশ্ব উষ্ণায়নের থাবা থেকে পৃথিবীকে মুক্ত করার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এমনকি কিছু অসহায় মানুষের পাশে থাকার দায়িত্বও নিয়েছেন। ছাত্র থেকে শুরু করে সাধারণ গ্রামবাসী সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে তিনি অরণ্য অভিযান শুরু করেছেন। সুন্দরবনে বাঘেদের জন্য যে বাস্তুতন্ত্র প্রয়োজন সেই বাস্তুতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে লড়ছেন তিনি। যার স্বীকৃতি স্বরূপ ডাঃ রিমিংটন পুরস্কার পেলেন তিনি। ২০১৮ সাল থেকে পরিবেশ রক্ষায় ডাঃ রিমিংটন পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। ব্যাঘ্র সংরক্ষণে দুর্দান্ত অবদানের জন্য এর আগে এই পুরস্কার পেয়েছেন মালয়েশিয়ার শাহ রেজা। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments