Header Ads

শ্যামপুরে উদ্ধার হওয়া বাঘরোলকে নিজ বাসভূমে ফিরিয়ে দিতে প্রচারাভিযান


ভারতের চিপকো আন্দোলনের কথা প্রায় সকলেই জানেন। ১৯৭৪ সালের ২ রা মার্চ উত্তরপ্রদেশে বন ঠিকাদারদের দ্বারা গাছ ও বনাঞ্চল ক্ষেত্রগুলি ধ্বংস করে তেহরি বাঁধ নির্মাণের  বিরুদ্ধে প্রখ্যাত পরিবেশবিদ সুন্দরলাল বহুগুনা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে লড়াই করেছিলেন। কাঠুরেরা যখন গাছ কাটতে এসেছিল তখন তার বহু মানুষ জঙ্গলের গাছগুলোকে জড়িয়ে ধরে গাছেদের প্রাণ রক্ষা করেছিল৷ চিপকো আন্দোলনে তাঁর স্লোগান ছিল 'বাস্তুশাস্ত্রই স্থায়ী অর্থনীতি'। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৩ সাল অবধি মোট ৫০০ কিমি ট্রান্স-হিমালয় পায়ে হেঁটে তিনি গ্রামে গ্রামে ভ্রমণ করেছিলেন চিপকো আন্দোলনের পক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহের জন্য৷ তাঁর অদম্য প্রচেষ্টায় সফল হয়েছিল চিপকো আন্দোলন। বন্ধ হয়েছিল তেহরি বাঁধ নির্মাণ। 


গত ৯ ই জানুয়ারি ছিল সুন্দরলাল বহুগুনার জন্মদিন। তাঁকে স্মরণ করে গতকাল হাওড়ার শ্যামপুরে উদ্ধার হওয়া বাঘরোলকে নিজ বাসভূমে ফিরিয়ে দিতে জোরদার প্রচারাভিযান চালালো একদল পরিবেশ কর্মী, কচিকাঁচা ও পরিবেশ সচেতন মানুষজন। 

হাওড়া জেলার দক্ষিণাংশে শ্যামপুরের কল্যাণপুর মালঞ্চবেড়িয়া গ্রামে কয়েকদিন আগে একটি পূর্ণবয়স্কা বাঘরোলকে জল যাওয়ার পাইপের মধ্যে দেখে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। মানুষের আতঙ্কে সেই বাঘরোলটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় বন দপ্তর। কিন্তু তার পুরুষ সঙ্গীটি ওই এলাকায় বারবার এসে নানা রকম আওয়াজ করতে শুরু করে।


হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের শ্যামপুর ইউনিটের সদস্যা সঙ্গীতা গিরির তৎপরতায় বনদফতরের সঙ্গে ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে বাঘরোলটিকে ওই এলাকায় ছেড়ে দেবার দাবী ওঠে। বন দপ্তর জানায় - যদি এলাকাবাসী নিশ্চিত করেন যে তাকে কোন ক্ষতি করবে না, তাহলেই তা এলাকায় ছাড়া হবে। এরপরই গতকাল হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ ও ফিসিং ক্যাট প্রোজেক্ট সংগঠন যৌথভাবে একটা উদ্যোগ নেয়।

মালঞ্চবেড়িয়া গ্রাম সহ পাশ্ববর্তী পিছলদহ, জাল্লবাজ গ্রামেও ছোটদের ও কিশোর কিশোরীদের নিয়ে পদযাত্রা করে, ও রাতে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে বাঘরোল নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া হয়।


উপস্থিত ছিলেন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের পরিবেশকর্মী কল্যাণী পালুই, সম্পাদক শুভ্রদীপ ঘোষ, সহ সম্পাদক সম্রাট মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ সায়ন দে, সদস্য চিত্রক প্রামানিক, সাথী সংগঠন গ্রিন মিডোর সদস্যরা, শ্যামপুর ও বাগনানের আরো সাথী সংগঠনের সদস্য ও বন বিভাগের কর্মীরা।

শিশুরা জোর গলায় বলেছে - "আমাদের বাঘরোল আমাদের এলাকাতেই ছাড়তে হবে।" ছোটদের কাছে আমাদের রাজ্যপ্রাণী বাঘরোল আপন হয়ে উঠছে। যা পরিবেশকর্মীদের কাছে বেশ আনন্দের ব্যাপার। 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments