বঙ্গ সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক সম্মান, ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেল দুর্গাপুজো
বাঙালির জন্য গর্বের খবর। ইউনেস্কোর তরফে হেরিটেজ স্বীকৃতি পেল বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো। ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের স্বীকৃতি পেল দুর্গাপুজো। গত ১৩ ই ডিসেম্বর থেকে ১৮ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আয়োজিত হচ্ছে ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির ১৬ তম অধিবেশন। সেই অধিবেশনেই 'কলকাতার দুর্গাপুজো'-কে ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটির তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে
এর আগে ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব সংস্কৃতির তালিকায় পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেয় দুর্গাপুজো। এ উৎসব যাতে হারিয়ে না যায় সে বিষয়েও জোর দেবে বলে ঘোষণা করেছিল ইউনেস্কো। তারপর বিশ্ব বাংলা এবং কলকাতার ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সদস্যদের উদ্যোগে ইউনেস্কোতে পাঠানো হয় দুর্গাপূজাকে। অবশেষে গত বুধবার বিকেলে ইন্ডিয়া অ্যাট ইউনেস্কোর টুইটার হ্যান্ডেল থেকে টুইট করে দুর্গাপুজোর কালচারাল হেরিটেজ তকমা পাওয়ার সুখবরটি জানানো হয়।
বছর দুয়েক আগে বাঙালির এই উৎসবকে 'মেগা ফেস্টিভ্যাল' হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল। এমনকি 'বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য' ভাবনাটিও নজর কেড়েছিল ইউনেস্কোর। ২০০১ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও উৎসব নিয়ে একটি সার্ভে শুরু করেছিল ইউনেস্কো। সেই সার্ভে অনুযায়ী হেরিটেজের তালিকায় স্থান দেওয়া হল বাংলার দুর্গাপুজোকে। এই উৎসবকে ঘিরে বাঙালির আবেগ, আনন্দ, প্রত্যাশা ও উত্তেজনার অন্ত নেই। সেই উত্তেজনার পারদ আরও কিছুটা যেন বাড়িয়ে দিল ইউনেস্কো। বঙ্গ সংস্কৃতির ঐতিহ্য পেল আন্তর্জাতিক সম্মান।
বাংলা ও বাঙালির উৎসবের আন্তর্জাতিক সম্মান লাভ এই প্রথমবারই নয়, এর আগে ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী ছৌ লোকনৃত্যকে হেরিটেজ তকমা দিয়েছিল ইউনেস্কো। দুর্গাপুজোর হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর উচ্ছাসে মেতে উঠেছেন বাংলার লোকশিল্পী, মৃৎশিল্পী, পুজো উদ্যোক্তা ও ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের কর্মকর্তারা।
ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, "দুর্গাপুজোকে ধর্ম ও শিল্পের সর্বজনীন মিলন ক্ষেত্রের সর্বোত্তম উদাহরণ হিসেবে দেখা হয় এবং সহযোগী শিল্পী ও ডিজাইনারদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হিসাবে দেখা হয়। এই উৎসব শহুরে এলাকায় বড় আকারে পালিত হয় এবং মণ্ডপগুলির পাশাপাশি রয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢাক এবং দেবীর পূজা।" উৎসব চলাকালীন সব শ্রেণি, ধর্ম ও জাতিগত বিভাজন ভেঙে দর্শকদের ভিড়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াই ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়েছে ইউনেস্কোর দরবারে।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment