Header Ads

১৭৮ বছর পর দার্জিলিং-এ দেখা মিলল বিরল প্রজাতির মুনালের


এক বিরল প্রজাতির পাখি হলো মুনাল। যে পাখিটির অপরূপ বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ার মতো। লাল পালকে ঢাকা বর্ণময় শরীর। হলুদ বাদামী বা ফ্যাকাশে সবুজ ছায়া শক্তিশালী তার পা। মাঝারি আকারের লেজ যার ওপরের অংশ তামা-রঙিন ও নীচের অংশ কুচকুচে কালো। মাথায় তার মুরগীর মতো ঝুঁটি। তার মুখ উজ্জ্বল নীলকণ্ঠী। নেপালের জাতীয় পাখি হলো মোনাল৷ এই পাখিটি দেখতে অনেকটা বন মোরগের মতো৷ বিরল প্রজাতির এই পাখিটির নাম স্যাটর ট্রাগোপান। আর একটি নাম হলো ক্রিমশন হর্নড ফেজান্ট। হিমালয়ের পাহাড়ি অঞ্চলেই এদের বেশি দেখা যায়। এছাড়াও আফগানিস্তান, ভুটান, পাকিস্তান ও পশ্চিম চীন এদের আদি বাসস্থান। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং-এও বহু দশক আগে দেখা যেত মুনাল পাখিদের। 


১৭৮ বছর পর দার্জিলিং-এ আবারো দেখা মিলল 'মুনাল' পাখির। সিনচেল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারিতে খুশীর জোয়ার। এখানেই দেখতে পাওয়া গেল স্যাটর ট্রাগোপানের। ভারতবর্ষের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন স্যাংচুয়ারি হলো সিনচেল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি। দার্জিলিং-এর এই স্যাংচুয়ারিতে রয়েছে হরেক প্রজাতির পশুপাখি। বিরল এই পাখির দেখা মেলায় স্বভাবতই খুশী পরিবেশ ও পক্ষীপ্রেমী মানুষজন।   

গত ৪ ঠা ফেব্রুয়ারি ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন ডে-তে দার্জিলিং-এর বন দপ্তর থেকে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। যে সেমিনারের আলোচ্য বিষয় ছিল পাখি সংরক্ষণ। সেমিনারে আলোচনার মাধ্যমে জানা যায় এই বিরল প্রজাতির স্যাটর ট্রাগোপান পাখির দেখা পাওয়া গিয়েছে সিনচেল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারিতে। এরপর গত আগস্ট মাসে দার্জিলিং ওয়াইন্ড লাইফ ডিভিশনের কর্মীরা সিনচেল বনাঞ্চলে মুনালের ছবি তুলতে সক্ষম হন। তাঁরা পাখিটির সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর চারদিন আগে মুনালের ছবিগুলি প্রকাশ করেছেন। 

বন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বিরল প্রজাতির এই স্যাটর ট্রাগোপান ব্রিটিশদের সময়কালে প্রায় ১৭৮ বছর আগে এই সিনচেল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারিতে দেখা গিয়েছিল। এতোদিন পর বর্তমানে আবার এই পাখি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। বন বিভাগের কর্মীরা জানিয়েছেন, তিনটি পুরুষ ও তিনটি মহিলা প্রজাতির পাখি এই অঞ্চলে দেখতে পাওয়া গিয়েছে। 

বনকর্মীরা আরো জানাচ্ছেন, "এলাকায় দূষণ কমেছে, হয়তো আমরা সঠিক পথে চলছি বলেই এই বিলুপ্তপ্রায় সুন্দর পাখির দেখা পেয়েছি। অনেক ছবি তোলা হয়েছে। এবার আমরা নিশ্চিত পাখির অস্তিত্ব নিয়ে৷ তবে, এখন আমাদের দায়িত্ব অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। আমাদের এখন থেকে নিয়মিত গবেষণা করে মুনালের সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।" 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments