জনবিন্যাস বদলে যাওয়া রিষড়া একসময় ছিল ফুটবলার তৈরির আঁতুড়ঘর
শুধু কলকাতা নয় ফুটবল বাংলার কোণায় কণায় জনপ্রিয় ছিল। ফুটবলকে ঘিরে আজও বাঙালির আবেগ ঘনীভূত হয়। শুধু ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান, জর্জ টেলিগ্রাফ-ই নয় এরকম বহু ক্লাব। এপার বাংলা, ওপার বাংলা জুড়ে তখন চলত ফুটবলের তুমুল প্রতিযোগিতা।
ফুটবলের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে রিষড়া। এই জনপ্রিয়তার কথা বিদেশেও কেউ কেউ জানেন। ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনা স্বয়ং এখানে এসে মিষ্টি মুখ করে গেছেন। এখনও এখানের ক্লাবগুলো মেতে থাকে ফুটবল জ্বরে।
রিষড়া স্পোর্টিং ক্লাব, দি রিষড়া ক্লাব, অরোরা, টাউন ক্লাব হল রিষড়ার সবচেয়ে পুরানো ক্লাব। অরোরা ক্লাব, দি রিষড়া ক্লাব প্রায় ৯০ বছরের পুরানো। রিষড়া স্পোর্টিং ক্লাবের বয়সও ১১০ অতিক্রান্ত। রিষড়া ক্লাব এবং অরোরা ক্লাবের একসাথে খেলা হলে এখানে মানুষের মধ্যে একটা উন্মাদনার সৃষ্টি হতো।
বর্তমানে রিষড়ার জনবিন্যাস বদলাচ্ছে, যার ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে তার ফুটবল স্মৃতি। একের পর এক বিখ্যাত ফুটবলার উঠে আসার শহর এখন হারিয়ে ফেলছে তার সংস্কৃতি।
এখান থেকে উঠে এসেছেন ফুটবলার শিশির ঘোষ যিনি খেলেছেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও ভারতের রাষ্ট্রীয় দলে। শিশির ঘোষ একসময় হেড করার জন্য সুনাম করেছিলেন। সমীর চৌধুরী, সুপ্রিয় দাশগুপ্ত, চঞ্চল ভট্টাচার্য, কিংশুক দেবনাথ, সুধীর কর্মকার, রবি কর্মকারের মতো বিখ্যাত ফুটবলাররা উঠে এসেছিলেন রিষড়ার ক্লাবগুলো থেকে।
ফুটবলের পাশাপাশি হকি, অ্যাথলেটিক্সেও এখানের ক্লাবগুলোর সুনাম রয়েছে। ওখানকার স্থানীয় মানুষ, ক্রীড়াপ্রেমিকদের কথায় রিষড়ায় এখন সেভাবে ফুটবলের ঝোঁক দেখা যাচ্ছে না। রিষড়ার লেনিন মাঠ বাদে আর সেভাবে কোনো নতুন মাঠ তৈরি হয়নি। পরিকাঠামোরও বর্তমানে সমস্যা রয়েছে। অনেকে আবার খেলার প্রতি অনীহা তৈরিতে অভিভাবক দেরও দোষারোপ করছেন।
বর্তমানে বাংলার ফুটবলের যে সমস্ত বড় ক্লাব আছে তাতে আফ্রিকান বা বিদেশী ফুটবলারদের নিয়ে আসা হচ্ছে কিন্তু বাঙালি সেভাবে সুযোগ পাচ্ছে না। যার ফলে ফুটবলকে পেশা করার লোক কমে যাচ্ছে। এমনটাই মনে করেন একাংশ বাঙালি ক্রিড়াবিদ।
প্রতিবেদন- অমিত দে
Post a Comment