Header Ads

মাত্র ২০ দিনে 'পকেট ভেন্টিলেটর' বানিয়ে তাক লাগালেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী


কোভিড পরিস্থিতিতে ভেন্টিলেটরের সংকট দেখা যাচ্ছে। উন্নতমানের ভেন্টিলেটরের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে বিদেশের ওপর। রোগীদের শ্বাসকষ্ট হলে প্রয়োজন পড়ে ভেন্টিলেটর। যা সময়মতো না পেলে মৃত্যু হতে পারে করোনা রোগীদের। ভেন্টিলেটরের অভাবে ইতিমধ্যেই বহু করোনা রোগীর মৃত্যু ঘটেছে। তাই করোনাকালে ভেন্টিলেটর অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বস্তু। রাজ্য তথা দেশজুড়ে যে ভেন্টিলেটরের অভাব ঘটছে তার চাহিদা মেটাতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিলেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী। যিনি পকেট ভেন্টিলেটর আবিষ্কার করে সাড়া জাগিয়েছেন। 


কলকাতার বিজ্ঞানী রমেন্দ্রলাল মুখোপাধ্যায় 'পকেট ভেন্টিলেটর' আবিষ্কার  করে তাক লাগিয়ে দিলেন। পকেট ভেন্টিলেটর নামটা শুনেই সহজেই আন্দাজ করে নেওয়া যায় যে এর আয়তন বেশ ছোটো। সত্যিই তাই। আকারে ছোটো হওয়ার জন্যই এই ভেন্টিলেটরের নামকরণ করা হয়েছে পকেট ভেন্টিলেটর। করোনা রোগীদের বিপদের সময় শ্বাসকষ্টে দারুণ উপকার দেবে এই ভেন্টিলেটর৷ পোর্টেবল এই ভেন্টিলেটর ব্যাটারিচালিত।  

দামে কম এবং মানে ভালো ও ওজনে অত্যন্ত হালকা এই পকেট ভেন্টিলেটর। রমেন্দ্রলাল মুখোপাধ্যায় নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে আবিষ্কার করে ফেলেছেন এই অভিনব বস্তুটি। শুনতে হয়তো আপনাদের অবাক লাগবে যে রমেন্দ্রবাবু একজন করোনা জয়ী, সুতরাং এক করোনাজয়ীর আবিষ্কার হলো পকেট ভেন্টিলেটর। কয়েকমাস আগে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা করোনা আক্রান্ত হন। করোনাতে তার শরীরের অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা ৮৮ এর নীচে নেমে গিয়েছিল একসময়৷ যদিও অবশ্যি ভাগ্যের জোরে সে যাত্রা থেকে মুক্ত হয়ে যান তিনি। এরপরই তিনি নিজস্ব উদ্যোগে ভেন্টিলেটর তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। তারপর তিনি মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই বানিয়ে ফেললেন পকেট ভেন্টিলেটর।  

কীভাবে কাজ করবে পকেট  ভেন্টিলেটর? এই ভেন্টিলেটরে দুটি ডিভাইস আছে। একটি পাওয়ার ইউনিট ও একটি ভেন্টিলেটর ইউনিট, যা মাউথপিসের সঙ্গে যুক্ত। সুইচ অন করলেই ভেন্টিলেটর বাইরে থেকে বাতাস সংগ্রহ করে আল্ট্রা ভায়োলেট চেম্বারের মধ্যে তা জীবাণু মুক্ত করে রোগীকে শ্বাস নিতে সাহায্য করবে। একই ভাবে রোগী যখন শ্বাস ছাড়বে তখন আরেকটি ইউভি চেম্বার দিয়ে সেই কার্বন ডাই অক্সাইড বেরিয়ে যাবে।  

জানা গেছে, করোনা রোগীর নিঃশ্বাসে থাকা ভাইরাসও মেরে ফেলতে সক্ষম এই ভেন্টিলেটর। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও একেবারে হ্রাস পায়৷ মাত্র ২৫০ গ্রামের এই ভেন্টিলেটরে রয়েছে পুনরায় চার্জ দেওয়ার ব্যাটারি, যা স্মার্টফোনের ইউএসবি পোর্ট দিয়ে চার্জ করা হয়। ভেন্টিলেটরটি একবার চার্জ দিলে টানা ৮ ঘন্টা চলবে।  

রমেন্দ্রলাল মুখোপাধ্যায়ের নতুন কিছু আবিষ্কারের ঘটনা এই প্রথমবারই নয়। এর আগেও তিনি এ ধরণের প্রচুর আবিষ্কার করেছেন। তাঁর প্রবল বিশ্বাস যে, কোভিড ও মিউকরমাইকোসিস রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই ছোট্ট ভেন্টিলেটরটি বেশ কাজে দেবে। করোনার আবহে তাঁর এই পকেট ভেন্টিলেটর বিপ্লবের চাইতে কম কিছু নয়। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments