Header Ads

করোনা রোগীদের স্বার্থে অ্যাম্বুলেন্স দান জলপাইগুড়ির এক স্কুল শিক্ষিকার


করোনার প্রথম পর্ব থেকে বন্ধ  রয়েছে স্কুলগুলি। ফলে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তেমন একটা কাজের চাপ নেই। তাদের হাতে কাজ না থাকলেও বাড়িতে বসে মাসের শেষে তারা বেতন পাচ্ছেন। করোনার প্রথম ধাপ শুরু হওয়ার পর থেকে এক বছর হয়ে গেছে। তবুও স্কুলের দরজা সেই বন্ধ অবস্থায় আছে। এমতাবস্থায় এক ব্যতিক্রমী কাজ করলেন জলপাইগুড়ি ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কেয়া সেন।  


কাজ না করে বাড়িতে মাইনে নেওয়ার ব্যাপারটা মোটেও ভালো লাগছিল না কেয়া দেবীর। রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারি বিএফপি স্কুলের শিক্ষিকা কেয়া সেন সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। তিনি সাত লক্ষ টাকা দিয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স কিনে সেটি তুলে দিলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। করোনা রোগীদের জন্য সেই অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করা হবে। যেটা জলপাইগুড়ি শহরে এই মুহূর্তে খুবই প্রয়োজন। 

বাড়িতে বসে কাজ না করে মাইনে নিতে কিছুটা আত্মসম্মানে লাগছে কেয়া দেবীর। এ কথা তিনি পরিবারের সকলকে জানান। তিনি এও বললেন যে করোনা রোগীদের জন্য উনি কাজ করতে চান৷ যা শুনে তাঁর বড় ছেলে স্পন্দন তাঁকে অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার ব্যাপারটা বলেন। তিনিই মাকে প্রস্তাব দেন একটি অ্যাম্বুলেন্স কিনে তা কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তুলে দিতে। সেই মতো মাসিক কিস্তিতে সাত লক্ষ টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি কেনা হয়৷ গত মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের মাধ্যমে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে 'শ্রদ্ধা' নামক এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তিনি তুলে দেন অ্যাম্বুলেন্সটি। 

কেয়া দেবীর এই দান সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি এই প্রথমবারই যে কোনো সামাজিক কাজ করলেন এমনটাও কিন্তু নয়। এর আগেও সমাজের বহু স্তরের প্রান্তিক মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রীদের নানান কাজে নানান ভাবে তিনি সাহায্য করেছেন। তাঁর এই কাজে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি প্রচণ্ড গর্ববোধ করেছে। সংস্থার সম্পাদক সুমন বসু রায় জানিয়েছেন তাঁরা অ্যাম্বুলেন্সটিকে যথাসাধ্য ভাবে রোগীদের জন্য ব্যবহার করবেন। 

কেয়া সেনের কথায়, "প্রায় পুরো মাস আমি বাড়িতে বসেই মাইনে পাচ্ছি। এমনটা হবে বলে কেউ জানতো না। মাসে অন্তত ২৬ দিন আমাদের স্কুলে থাকার কথা। এভাবে মাইনে নিতে আমার লজ্জা লাগছিল। তাই আমি একটি অ্যাম্বুলেন্স কিনে তা জেলা পরিষদের মাধ্যমে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে তুলে দিলাম৷ আমি চাই এই মহামারী পরিস্থিতিতে সবাই এগিয়ে আসুন সাধ্যমতো। তাহলেই আমরা করোনাকে হারিয়ে জয়ী হতে পারবো।"

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments