মেদিনীপুরে করোনা রোগীদের বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে মানবিক সংস্থান
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ উপচে পড়েছে রাজ্য থেকে দেশ। বাংলার একগুচ্ছ সংগঠন, এনজিও এবং ফাউন্ডেশনগুলো নিঃস্বার্থ ভাবে পরিশ্রম করে করোনা দূরীকরণে লড়াই করছে। কেউ বিনামূল্যে করোনা রোগী ও তাদের পরিবারকে খাবার পাঠাচ্ছে। কেউ অক্সিজেন সিলিন্ডারের জোগান দিচ্ছে। কেউ ব্লাডব্যাংকে রক্ত ভরার কাজ করছে। কেউ করোনা রোগীদের গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছে। করোনার আবহে এ রাজ্যের প্রত্যেক প্রান্তে ভেসে উঠছে মানবিকতার সব জ্বলন্ত চিত্র।
মেদিনীপুরের মানবিক সংস্থান নামের একটি সংস্থা করোনার বিরুদ্ধে মাঠে নেমে গত একবছর ধরে লড়াই করে চলেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন টালমাটাল করে দিচ্ছে গোটা রাজ্যকে তখন মানবিক সংস্থান বিশেষত যাঁরা বাড়িতে একা থাকেন, তাঁদের যাতে বাইরে বেরিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে না হয়, তাই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দু'বেলা তাঁদের বাড়িতে গিয়ে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেবে।
মানবিক সংস্থানের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যারা কোভিড পজিটিভ হয়ে হোম বা সেল্ফ কোয়ারান্টাইনে আছেন, এছাড়াও অনেক বয়স্ক মানুষ মেদিনীপুর শহরে একা থাকেন। অনেক বয়স্ক দম্পতির সন্তান-সন্ততিরা রাজ্যের বাইরে কিংবা দেশের বাইরে কর্মসূত্রে থাকেন। তাঁরা কোভিড আক্রান্ত হলে তাঁদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাঁরা পরিমিত খাবার পাননা। তাই তাঁদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এই সংস্থাকে হোয়াটসঅ্যাপে কোভিড পজিটিভ রিপোর্টের ছবি পাঠাতে হবে। ছবিটি পাওয়ার পর তারা কোভিড রোগীদের বাড়িতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে। কখনও কখনও কোভিড রোগীদের গোটা পরিবারের খাবারও বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে এই সংস্থার তরফ থেকে।
মানবিক সংস্থানের এই উদ্যোগে নিয়মিত অর্থের জোগান দিচ্ছেন সংস্থার সদস্যরা। এ ছাড়াও বহু শুভানুধ্যায়ী ব্যক্তিরাও তাঁদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা প্রতিদিন প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ টি মিল ডেলিভারি করছে মেদিনীপুর শহরে। এমনকি খড়্গপুর শহরে প্রতিদিন ২৮ টি মিল ডেলিভারি চলছে।
আজ থেকে এগারো বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মানবিক সংস্থান। বর্তমানে সদস্যদের অনুদান ও কিছু প্রোজেক্ট ভিত্তিক সরকারি অনুদানে চলে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্যর উপর কাজ চলে সারা বছর ধরে। মেডিক্যাল ক্যাম্প, বিজ্ঞান সেমিনার, ওয়ার্কশপ, রক্তদান শিবির, পথশিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা....এই সব মূলত এই সংস্থা করে থাকে সারা রাজ্য তথা দেশ জুড়ে।
কোভিড পরিস্থিতিতে গত এক বছর ধরে বিনামুল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা, মাস্ক, স্যানিটাইজার, শুকনো খাবার বিলির পাশাপাশি চলেছে তাঁদের সচেতনতা প্রচার।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment