আপনি কি জানেন কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এক বাঙালি
বিভিন্ন রকম সরকারি কাজ পরিচালনার জন্য বাঙালি বারে বারে সমাদৃত হয়েছে। বাঙালি যে কতভাবে কি কি করেছেন তা কোনো বাঙালির পক্ষে জানা অসম্ভব। সব বাঙালিদের কাজের খতিয়ান বানাতে চাইলে কোটি কোটি পাতার বই হয়ে যাবে। এক সময় পরাধীন ভারতে বিভিন্ন রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হতো।
১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত কাশ্মীর রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন অ্যালবিয়ান রাজকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ১৮৯৪ সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির সহকারী কালেক্টর এবং ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন। তিনি একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক সামলেছেন। ব্রিটিশদের সময়ে দাঁড়িয়ে বহু জনদরদী কাজ করেছিলেন যাতে পরাধীন ভারতের মানুষকে একটু হলেও বাঁচার আশা জোগানো যায়।
১৯০৭ সালের মে মাস থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত রাজকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কোচিনের দেওয়ান নিযুক্ত হন এবং সে দায়িত্ব পালন করেন যে সময়ে কোচিন স্টেট ম্যানুয়াল প্রবর্তনের ভার তিনি নিয়েছিলেন।
এরপর দেওয়ান বিশ্বেশ্বর রায়ের অধীনে তিনি মহীশূরে কাউন্সিলরদের হিসাবে যোগদান করেছিলেন। দেওয়ান হিসাবে বিশ্বেশ্বর রায় পদত্যাগ করার পরে তিনি দেওয়ান এম কান্তরাজ উরস এর অধীনে প্রথম কাউন্সিলর হন। এম কান্তরাজ উরস শারীরিক অসুস্থতার জন্য দেওয়ান থেকে পদত্যাগ করলে তিনি ১৯২২-২৬ সাল পর্যন্ত মহীশূরের দেওয়ান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯২৪ সালের কাবেরী জল চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেন রাজকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি ১৯১২ সালে দ্য অর্ডার অফ ইন্ডিয়ান এম্পায়ার, ১৯২১ সালে দ্য অর্ডার অফ দ্য স্টার অফ ইন্ডিয়া এবং ১৯২৫ সালে নাইটহুড পুরষ্কার লাভ করেছিলেন।
১৯২৭ সালে তিনি কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। জম্বু ও কাশ্মীরের বেশিরভাগ মানুষ অত্যন্ত গরীব থাকায় তাদের সাথে সরকারের কোনো যোগাযোগ ছিলনা এবং শিক্ষার দিক থেকেও পিছিয়ে ছিল যা তিনি দূর করার চেষ্টা করেছিলেন। তখন ব্রিটিশ সরকার তো শোষণ করতোই তার সাথে সেখানকার প্রজাদের জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠতো ডোগরা রাজাদের বিলাসিতার জন্য, যা তিনি ভালোভাবে নেননি। এসব কারণে তিনি প্রতিবাদ করেন এবং ওনার সাথে মতবিরোধ হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। ব্রিটিশ শাসনে তিনিই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি নৈতিক কারণে পদত্যাগ করেছিলেন।
প্রতিবেদন- অমিত দে
তথ্যসূত্র- হুজ হু, টাইসন এন্ড কোম্পানি, ১৯২৭, পৃষ্ঠা নম্বর ১৪।
Post a Comment