Header Ads

সবুজপ্রেমী এক অটো চালক যিনি অটোর ছাদে বানিয়েছেন আস্ত বাগান


সবুজের সমাহার মনকে করে তোলে সতেজ। সবুজ ধ্বংস হলে বিপন্ন হবে প্রাণীকূল। তাই সবুজের একান্ত প্রয়োজন। "একটি গাছ, হাজার প্রাণ" এই প্রচলিত স্লোগানের গুরুত্ব কলকাতার মতো মেট্রোপলিটন সিটিগুলোতে যেন দিন দিন হারাচ্ছে। সবুজের বিনাশ ঘটিয়ে মানবসমাজ ব্যস্ত নগরায়নে। নগরের আনাচে-কানাচে সবুজের দেখা মেলা বড়োই কঠিন। নগর মানেই কংক্রিটের জঙ্গল, যানবাহনের সোঁ সাঁ চিৎকার, দমকলের সাইরেনের আওয়াজ, কলকারখানার গাঙানোর আওয়াজ, অতিরিক্ত শব্দদূষণ আর বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং এর ভিড়। নগরজীবনে নিস্তব্ধতার কোনো ঠাঁই নেই। 


শহরে-নগরে সবুজের অবাধ আনাগোনা না দেখা গেলেও বহু মানুষের সবুজের শখ রয়েছে। যেমন কলকাতার বিজয় পাল নামের এক অটোচালক যার সবুজের প্রচণ্ড শখ। সেই শখের বশে তিনি এক অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়ে বসেন। অটোর ছাদে বাগান তৈরি করার পরিকল্পনা করেন তিনি। অটোর মাথায় মাটি ফেলে কতগুলো ঘাস পুঁতে দেন। এরপর থেকে তিনি লোকমুখে প্রশংসা পেতে শুরু করলেন। কেবল ঘাস নয়, আরো অনেক কিছু করার পরিকল্পনা ছিল তার। তাই তিনি ঘাসের ওপর লেবু, তুলসী, টগর ও গোলাপ গাছ লাগিয়ে দেন। তারপর ধীরে ধীরে তার অটো বাগান অটোতে রূপান্তরিত হয়। 

বিজয় পাল অটো চালিয়েই সংসার চালান। গণেশ টকিজের কাছে একটি ছোট্ট ভাড়া বাড়িতে তিনি থাকেন৷ তার ভাড়া করা বাড়িতে জায়গা না থাকার জন্য তার সবুজের শখ পূর্ণ হচ্ছিল না। তিনি তার সবুজের শখ পূরণের কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এমতাবস্থায় ২০১৭ সালে কলকাতার রাস্তায় এক 'সবুজ ট্যাক্সি'র দেখা পান তিনি। যা দেখে তিনি তাজ্জব হয়ে যান। এই সবুজ ট্যাক্সিটিকে অনুসরণ করে তিনিও অটোর মাথায় বাগান তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। বাগানটি তৈরি করতে ১১,০০০ টাকা খরচ করেন তিনি। 

২০১৯ সালে বিজয়বাবুর বানানো 'বাগান অটো' নিয়ে চর্চা শুরু হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে তুমুল ভাইরাল তার অটোর ছবি৷ তিনি চান অন্যান্য গাড়ি চালকরা তাকে অনুসরণ করুক। তিনি মনে করেন, এরকম ভাবে গাড়ির ছাদে বাগান বানালে শহরের বায়ুদূষণ অনেকটাই কমবে। কলকাতায় এই বাগান অটোর দর্শন পেতে হলে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে গিরীশ পার্ক মেট্রোর কাছে। সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেই বাগান অটোটিকে দেখা যায়। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments