Header Ads

দুই বাঙালির হাত ধরে ইতিহাসে প্রথমবার মঙ্গলের বুকে উড়বে হেলিকপ্টার


তিরিশ বছর আগের কথা, মহিষাদলের এক ছটফটে ছেলে, লোকে যাকে ফড়িং বলে ডাকে। সেই ফড়িং মঙ্গলে হেলিকপ্টার ওড়ানোর কথা বলে বসলো অনেককে। সকলে প্রায় মজের ছলেই হেসে ব্যাপারটা উড়িয়ে দিলেন। সে তাতে এতটুকুও ভেঙ্গে পড়লো না। সে আস্থা রাখলো নিজের আত্মবিশ্বাসের প্রতি৷ সে নিজের স্বপ্নে বুঁদ হয়ে রইলো। সেই ফড়িং এর আসল নাম অনুভব দত্ত যিনি আজকে মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এরোডাইনেমিক্স গবেষক অনুভব দত্ত। সেদিনের সেই ছলনার জবাব দিতে নিজেকে একটু একটু করে গড়ে তুললেন তিনি৷ দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে গেলেন গভীর গবেষণা। তাঁর এই গবেষণা এবার সফল হওয়ার পথে। আর মাত্র কটা দিন পরেই অনুভব দত্তের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। 


চলতি মাসের ১৮ তারিখ মঙ্গলের আকাশে উড়বে হেলিকপ্টার। এক মহাজাগতিক সন্ধিক্ষণের দিকে তাকিয়ে ভারত সহ গোটা বিশ্ব। কেবল অনুভব দত্তই নয় মঙ্গলে হেলিকপ্টার ওড়ানোর নেপথ্যে রয়েছেন ভার্জিনিয়ার নাসার রিসার্চ সেন্টারের এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার ও গবেষক সৌম্য দত্ত এবং প্রজেক্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বব বলরাম। সৌম্য  দত্ত বর্ধমানের বাসিন্দা ও বব বলরাম কর্ণাটকের বাসিন্দা।লালগ্রহের জন্য তৈরি এই কপ্টারের নাম 'এনজেনুইটি'। তিরিশ বছর আগে যারা হয়তো কল্পনা করেননি যে মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এরোডাইনামিক্সের বাঙালি গবেষকের সেই নীল নকশাই ভাষা পাবে একদিন৷ আজকে   নাসার তত্ত্বাবধানেই সম্পন্ন হচ্ছে গোটা প্রজেক্টটি। 

লালগ্রহের বক্ষে যদি এই কপ্টার উড়ান সফল হয়, তাহলে ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে দুই বাঙালির নাম। নাসার 'পারসিভারেন্স' রোভার প্রজেক্টের বৃহত্তর অংশ প্রতিবেশী গ্রহে এই হেলিকপ্টার প্রেরণ। ২০২০ সালের ৩০ শে জুলাই পৃথিবী থেকে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল ইনজেনুইটি। আগামী ১৮ ই ফেব্রুয়ারী মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করবে পারসিভারেন্স রোভার। আর আকাশে চক্কর কাটবে ইনজেনুইটি৷ যার ওজন ১.৮ কিলোগ্রাম। যার মধ্যে রয়েছে ২ টি রোটর। যেটি মঙ্গলের পৃষ্টদেশ থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে সক্ষম।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ৩০ হাজার ফুট ওপরে উড়তে পারা আর মঙ্গলের আকাশে উড়তে পারা উড়ানের মধ্যে কোনো বৈসাদৃশ্য নেই। যদিও এর জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত করে রেখেছেন গবেষকরা। ভেতরে জোড়া হয়েছে একটি ভ্যকিউম চেম্বার। যা আসমানে হেলিকপ্টারটিকে ভাসতে সাহায্য করবে। এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই সফলভাবে উতরে গেছে পৃথিবীর বুকে তৈরি একইরকম সিমুলেশন পরীক্ষাগারে।  

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments