মেমারিতে জিটি রোডের দু'পাশে থাকা একাধিক শিরীষ গাছের মৃত্যু নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও সেভাবে দেখা যায়নি৷ কোনো উইপোকার উপদ্রবও নেই। তবুও পূর্ব বর্ধমানের মেমারির হাটপুকুর থেকে দেবীপুর পর্যন্ত জিটি রোডের দুই পাশে থাকা পঞ্চাশটি প্রকাণ্ড 'শিরীষ গাছ' শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। অথচ একই এলাকায় থাকা বাকি অন্য সব গাছগুলি সুস্থ ও সতেজ আছে। এরকম ঘটনার সাক্ষী হয়ে বৃক্ষপ্রেমী, পরিবেশ কর্মী ও মেমারির বাসিন্দা মহলের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
শিরীষ গাছগুলির হঠাৎ করে শুকিয়ে যাওয়ার পিছনের কারণ হিসেবে মেমারিবাসীদের আশঙ্কা, ব্যক্তি স্বার্থসিদ্ধির জন্য এ যুগের 'আধুনিক কালিদাসরা' হয়তো নিস্তব্ধ নিশুতি রাতের আঁধারে বিষাক্ত পদার্থ প্রয়োগ করে মূল্যবান শিরীষ গাছগুলোকে মেরে ফেলছে৷ এই বিষয়টিকে নিয়ে তদন্তের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন সেখানকার পরিবেশ কর্মী ও বৃক্ষ প্রেমীরা।
মেমারির হাটপুকুর থেকে দেবীপুর হয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ডার পর্যন্ত জিটি রোডের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ কিলোমিটার। বহুকাল আগে থেকেই ওই সড়ক পথের দু'ধারে নানা ধরনের গাছ আছে। ওইসব গাছগুলির মধ্যে কিছু শিরীষ গাছের বয়স ৫০ থেকে ৭০ বছর বা তারও বেশি। অভিযোগ উঠছে, মেমারিতে রেল ওভারব্রিজ তৈরির ঘোষণার পরেই মেমারির চেকপোস্ট এলাকায় ১০ থেকে ১৫ টি পুরানো গাছ কেটে ফেলা হয়। এজন্যই বাসিন্দাদের আশঙ্কা নিশ্চয় 'আধুনিক কালিদাস'দের ষড়যন্ত্র রয়েছে শিরীষ গাছের মৃত্যুর নেপথ্যে। কারণ, জীবন্ত গাছ কাটার অনেক ঝক্কি রয়েছে।
মেমারির বনদপ্তরের কর্মী ভবেশ সর্দার ষড়যন্ত্রের কোনো ব্যাপার দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে স্পষ্ট বলছেন "জলস্তর নেমে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জল ঘাটতি ও অত্যধিক বয়স হয়ে যাওয়াই শিরীষ গাছগুলো মারা যাবার আসল কারণ।" কিন্তু পরিবেশকর্মীদের মতে, "প্রয়োজনীয় জল ঘাটতি যদি শিরীষ গাছগুলোর মৃত্যুর কারণ হয়ে থাকে তাহলে একই জায়গায় থাকা অন্য বয়স্ক গাছগুলো বেঁচে আছে কী করে?" এভাবেই ঘটনার আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে উদ্বেগ বাড়ছে। মেমারিবাসীরা উপযুক্ত ঘটনার সমাধানের জন্য বন আধিকারিকদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালালেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ঘটনাটির জট যেন কিছুতে কাটতেই চাইছে না৷
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment