Header Ads

২২ শে শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবসে নতুনরূপে প্রকাশ পেল অডিও বুক 'কাবুলিওয়ালা'



একসময় বহু আফগান কাজের সন্ধানে কলকাতা আসতেন। তারা মূলত আফগানিস্তানের ফল, আতর ও মশলা ফেরি করতো কলকাতার রাস্তায় রাস্তায়। ১৮৮২ সালে কলকাতা শহরের মধ্যে বসবাসকারী আফগানদের  নিয়ে গল্প লিখলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যে গল্পের নাম 'কাবুলিওয়ালা'। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় গল্প হলো 'কাবুলিওয়ালা।'


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গল্পটি পাঠকমহলে এতোটাই প্রশংসিত হয় যে সকলে আফগান দেখলেই তাকে 'কাবুলিওয়ালা' বলে ডাকে। বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষাতে চলচ্চিত্রেও রূপায়িত হয় 'কাবুলিওয়ালা'। গল্পের মূল চরিত্র একজন কাবুল থেকে আসা এক ফেরিওয়ালাকে নিয়ে। গত শতাব্দীজুড়ে এই গল্প বাংলায় আফগানদের একটি কল্পনাবিলাসী চিত্র রূপায়ণ করেছে। 

রহমত শেখ কাবুল থেকে ফল  বিক্রি করার জন্য কলকাতায় আসেন। কলকাতার এক লেখকের মেয়ে মিনির সাথে তার ভাব হয়। যাকে মিনি কাবুলিওয়ালা বলে ডাকতে থাকে। মিনি কাবুলিওয়ালার সাথে প্রতিদিন সময় কাটাতে থাকে। মিনিকে দেখে কাবুলিওয়ালার নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ে যেত।  হঠাৎ একদিন কাবুল থেকে এক চিঠিতে মেয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে তিনি কাবুলিওয়ালা কাবুলে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার কাছে অভাব থাকার জন্য ধারে তিনি অনেক জিনিসপত্র দিতেন। কাবুল ফিরে যাওয়ার আগে এক ক্রেতার কাছে তিনি টাকা খুঁজতে যান। ঐ ক্রেতার কাছে টাকা চাইলে ক্রেতাটি কাবুলিওয়ালাকে অপমান করেন। কাবুলিওয়ালার সাথে তার হাতাহাতিও শুরু হয়ে যায়। কাবুলিওয়ালা শেষমেশ ক্রেতাকে ছুরির আঘাতে হত্যা করেন।  

খুনের অপরাধে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয় কিন্তু কাবুলিওয়ালার উকিলের অনুরোধে তার দশ বছরের কারাদণ্ড হয়। তিনি দশ বছর পর কারাদণ্ড থেকে মুক্ত হয়ে আবারো কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি এমন একটি দিনে কলকাতায় ফিরে আসেন যেদিন মিনির বিয়ে। তিনি মিনির কাছে গেলে মিনি তাকে কিছুতেই চিনতে পারেনা। তিনি মনে মনে চিন্তা করতে লাগলেন যে তার মেয়েও তাকে চিনতে পারবে তো? রহমত স্পষ্টই বুঝতে পারে যে তার মেয়ে তাকে ভুলে গেছে। মিনির বাবা তাকে কাবুলে ফিরে যাওয়ার জন্য টাকা দেন ও মেয়ের জন্য উপঢৌকন পাঠান। 

গত ২২ শে শ্রাবণ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৯ তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এই কালজয়ী গল্প 'কাবুলিওয়ালা' অডিও বুক আকারে মুক্তি পেল কোয়েশ্চেন মার্ক ফিল্মসের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত বিখ্যাত গল্পগ্রন্থ 'গল্পগুচ্ছ' অডিও আকারে প্রকাশ করছে তারা। চলতি বছরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিবসের দিন থেকে নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ। 'গল্পগুচ্ছে'র একটি গল্প হলো 'কাবুলিওয়ালা'। 'গল্পগুচ্ছ' অডিও বুকের ষষ্ঠ নিবেদন হলো 'কাবুলিওয়ালা'।

গল্পপাঠে ও বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মৈত্র সৌমিক, মিনির ভূমিকায় অঙ্কিতা শীল, মায়ের ভূমিকায় স্মৃতি মিত্র এবং কাবুলিওয়ালার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মার্শাল টিটো। গল্পের সম্পাদনায় ইডিওগ্রাফি। গল্পের শব্দগ্রহণ, আবহসঙ্গীত ও স্পেশাল এফেক্টসে জ্যোতিষমান সাহা৷ গল্পে অ্যানিমেশন করেছেন শুভ্রদীপ রাজ মুখার্জী। টাইটেল ক্যালিগ্রাফি ও ইলুস্ট্রেশন করেছেন প্রিয়া দাস। গল্পটি প্রযোজনা করেছেন অভিনন্দন মণ্ডল, দীপায়ন সামন্ত এবং অনুভব অধিকারী। সমগ্র গল্পটির পরিকল্পনা ও পরিচালনায় অধিকারী অনুভব।      

চলচ্চিত্রে বহুবার আপনারা 'কাবুলিওয়ালা' দেখেছেন। এমনকি শ্রুতি নাটকও শুনেছেন। এবার একটু অন্যভাবেই না হয় শুনে নিন 'কাবুলিওয়ালা'। বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হলো 'গল্পগুচ্ছ'। অডিও বুক আকারে গল্পগুচ্ছের গল্পগুলোকে নতুন ভাবে চেখে দেখতে হলে আজই শুনে ফেলুন গল্পগুচ্ছের নতুন অডিও স্টোরিটি। 


প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments