Header Ads

আমেরিকান উড হাঁস চরে বেড়াচ্ছে জলাভূমিতে, বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হাওড়ার ঘোষপাড়া


আমেরিকান উড হাঁস যাকে ক্যারোলিনা হাঁসও বলা হয়। প্রধানত উত্তর আমেরিকাতে এই প্রজাতির হাঁস দেখতে পাওয়া যায়। উত্তর আমেরিকার অন্যতম বর্ণময় জল হাঁস হলো উড ডাক। উত্তর আমেরিকার উড হাঁসের জনগোষ্ঠীর বেঁচে থাকা এবং পুনরুদ্ধার বিখ্যাত বন্যজীবনের সাফল্যের গল্প। ১৮০০ এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯০০ এর দশকের মধ্যে উড হাঁসের বিলুপ্তিটি আসন্ন বলে মনে করা হয়েছিল। "দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠা, সম্ভবত নির্মুল হওয়ার সম্ভাবনা" ও মহাশূন্যের পূর্ব অংশে পাখিবিদদের মধ্যে প্রায় নির্মূল, মাত্র কয়েকটি প্রজাতির অনুভূতিগুলি পুনরায় দেখা যায়।     
  

আমেরিকান উড ডাক পৌঁছে যায় ধ্বংস বা এক্সটিংশনের কাছাকাছি। কিন্তু গোটা উত্তর আমেরিকাতে উড ডাক সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। পক্ষীবিদরাও উড ডাককে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রচণ্ড চেষ্টা চালায়। তাদের বংশবিস্তারে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়। এভাবে কিছু বছরের মধ্যেই উড হাঁসের সংখ্যা বৃদ্ধি থাকে। আজকে এরা সম্পূর্ণ নিরাপদ। 

এবার এই আমেরিকান উড ডাকের দেখা মিললো হাওড়ার বালির ঘোষপাড়ার এক জলাভূমিতে। যেন প্রকৃতির এক বিরল চমক। এমন পাখি এর আগে হাওড়ার কোনো মানুষই দেখেননি। রীতিমতো এই পাখিটিকে দেখতে ভিড় উপচে পড়ে ঘোষপাড়াতে। সকলেই পাখিটিকে দেখে তাজ্জব। বহু ফটোগ্রাফার ছবি তুলতেও ছুটে আসেন। পাখিটিকে ঐ এলাকার একটি গাছের ডালে বসে থাকতে দেখা যায়। ফটোগ্রাফাররা যত্ন সহকারে পাখিটির চরে বেড়ানোর দৃশ্য লেন্সবন্দি করেন।            
             
হাওড়ার পক্ষী বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন কারও বাড়িতে হয়তো উড হাঁসটি পোষা ছিল। ডানা বড় হওয়ার পর সেই বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। যদিও এর সত্যতা পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে পক্ষী বিশেষজ্ঞদের ধারণা হয়তো ঠিক হতেও পারে। কিন্তু লকডাউনের ফলে মাত্রারিকক্ত দূষণ আর নেই। চারিদিকে পরিস্কার আকাশ, স্বচ্ছ জলাভূমি, আরামদায়ক প্রকৃতির আবির্ভাবে বন্যেরা নিজেদের মতো করে বেঁচে থাকার উপায় খুঁজে পাচ্ছে। রাস্তায় যানবাহনের ভিড়, জনসমাগম না থাকার জন্য প্রকৃতি যেন সবুজে ভরে উঠছে। এই বছর সময়মতো বসন্তকাল, গ্রীষ্মকাল ও বর্ষাকাল দেখা যাচ্ছে। ঋতু পরিবর্তন, জলবায়ু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। ফলে এমন অতিবিরল দৃশ্য দেখা দিতেই পারে। 

লকডাউনের মধ্যে আমরা দেখেছি বহু খবরের শিরোনামে কখনও হাওড়াতে মাছরাঙার আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার দৃশ্য, মুম্বাইয়ের লোকালয়ে ময়ূর চরে বেড়ানোর দৃশ্য, বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় ও সারেঙ্গার লোকালয়ে হরিণের দলের আগমন, রায়গঞ্জে পরিযায়ী পাখির ভিড়, কলকাতার গঙ্গাতে ডলফিনের দেখা পাওয়া বা ব্যারাকপুরে ময়ূরের ডাক পাওয়া এবং আরো অনেক বিরল ঘটনার সাক্ষী ২০২০ সালটা। হাওড়ার বালিতে হঠাৎ করে উড ডাক দেখা পাওয়ার মূলে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার কারণও দায়ী হতে পারে। 

পাখিটির খবর শোনামাত্রই বন দফতরের লোকেরা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা পাখিটির শরীরের ওপর নজর দিচ্ছেন৷ পাখিটি যদি অসুস্থ না হয় তাহলে নিজের ইচ্ছামতো ঐ জায়গাতেই থাকবে। পাখিটিকে যাতে বিরক্ত বা উতক্ত না করা হয় সে বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। আমেরিকান উড হাঁসের আচমকা এই আগমনে খুশী হাওড়ার পক্ষীপ্রেমী সকল মানুষ।   
       
প্রতিবেদন- লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক

No comments