Header Ads

এফএমে বাংলা গান না চালানোর প্রতিবাদে এবার মুখ খুললেন রাঘব চট্টোপাধ্যায়


চাঁদ কেন আসেনা আমার ঘরে, তুমি নেই বলে, কলকাতা  রে ভাই কলকাতা, তোমার চোখে মরণ দেখেছি এই গানগুলো সকলেরই ভালো লাগে। এই গানগুলো বাংলার সম্পদ। একমাত্র সঙ্গীত শিল্পী  রাঘব চট্টোপাধ্যায়ের জন্য আমরা এই গানগুলো পেয়েছি। যতবার তাঁর গান শুনি কখনোই পুরাতন হয়না। চিরনূতন রূপে বিরাজ করে তাঁর গান। বাংলা মৌলিক গানে তিনি এককালে রাজত্ব চালিয়েছেন। টেলিভিশন, রেডিও প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে তিনি ছিলেন সর্বেসর্বা। 


রোমান্টিক হোক বা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত এমন কোনো গান নেই যা তিনি পারেন না। গানে গানে প্রতিটি প্রহরকে তিনি উদ্বেল করে তোলেন। আমাদের শৈশব কেটেছে তাঁরই গান শ্রবণ করে৷ উন্নতমানের ভাষা, আবহ ও কণ্ঠের মেলবন্ধনে তাঁর তুলনা হয়না। উৎসব-অনুষ্ঠানে মাইকেও বাজানো হতো তাঁর গান। বাংলার রেডিওতেও তাঁর গানের একটা আলাদা জায়গা ছিল। তিনি এককালে বহু মিউজিক অ্যালবাম রিলিজ করেছেন। খ্যাতিও অর্জন করেছেন। 

আজকে সেই সময়টা বদলে গেছে। নতুন প্রজন্ম যেন সরে যাচ্ছে তাদের বানানো গানগুলো থেকে৷ বাংলা রেডিওতে হ্রাস পাচ্ছে বাংলা গানের পরিধি। সহজ জীবন থেকে একজন মৌলিক গায়ককে বেছে নিতে হচ্ছে কঠিনতর জীবন৷ যে জীবনে একবিন্দু সুখ নেই৷ মাটি আঁকড়ে ধরে তাদের ভরসা শুধুই বাংলা মৌলিক গান বাঁচানোর লড়াই। গত বছর পুজোর আগে তিনি একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে পুজো কমিটি ও ক্লাবগুলোকে মণ্ডপে-মণ্ডপে অনুরোধ করে বাংলা গান চালানোর কথা বলেছিলেন। 

এবার তিনি সরব হলেন বাংলা শিল্পী পক্ষের সাথে একটি বিশেষ প্রতিবাদে। রেডিওতে বাংলা গান না চালানোর বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে তারা আন্দোলন চালাচ্ছে। বাংলা শিল্পী পক্ষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেন তিনি৷ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি মুখর হলেন প্রতিবাদে। 

ইতিমধ্যেই বাংলা শিল্পী পক্ষের সুরে এফএম চ্যানেলে বাংলা গান না বাজানোর প্রতিবাদে চড়াও হয়েছেন ভূমি ব্যান্ডের ভোক্যালিস্ট সৌমিত্র রায়, সঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রজিৎ দে ইন্দ্র, সৈকত বন্দোপাধ্যায়, সঙ্গীত শিল্পী পর্ণাভ বন্দোপাধ্যায় ও ক্যালকাটা ব্লুজের ভোক্যালিস্ট ইমন সেন এবং সঙ্গীত শিল্পী রূপঙ্কর বাগচি। এবার সঙ্গীত শিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায়। আর কে কে মুখ খুলছেন জানা যাবে খুব শীঘ্রই। তবে তার জন্য হয়তো একটু অপেক্ষা করতে হবে। 

রাঘব চট্টোপাধ্যায় ভিডিও বার্তাতে জানান "রেডিওতে বাংলা গান একেবারেই চলছে না৷ দু'একটা রেডিও চ্যানেলে মাঝে মধ্যে তবুও বাজছে। আমরা তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমরা একবার কয়েকজন শিল্পীরা মিলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম৷ তাদের চ্যানেলের উপর মহলের যারা বড়ো কর্তা  মানে যারা বস তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় বাংলা গান বাজবে না। সমস্ত হিন্দি গান বাজবে। আমরা দেখেছি রেডিও চ্যানেলগুলো কিছু বাংলা চলচ্চিত্রের গান বাজাচ্ছে, যার পিছনে হয়তো একটা ব্যবসায়ীক স্বার্থ কাজ করে। বাংলা চলচ্চিত্রের বাইরেও আধুনিক গান আছে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদের মতো শিল্পীদের কত কত গান আছে বাংলাতে। অথচ সেগুলো একেবারেই চালানো হচ্ছে না৷ আমরা অনেক শিল্পী আছি যারা সারা জীবন ধরে বাংলা গান গেয়ে বাংলা গানকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছি। আমাদের বহু শিল্পী আছেন যারা বাংলা গানকে সঙ্গে নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন। এ প্রজন্মরেও বহু ছেলেমেয়ে বাংলা গান করছে, বাংলা ব্যান্ড তৈরি হচ্ছে। বাংলা আমাদের নিজস্ব মা, জন্মভূমি ও মাতৃভূমির ভাষা। সেই ভাষার গান নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখি। অতএব বাংলা গান নিয়ে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়ে ও আমাদের কথাটা অন্তত ভাবুন। আমি সমস্ত রেডিও চ্যানেলগুলোকে অনুরোধ করবো আপনারা প্রাইম টাইমে বাংলা গান চালান। একটু সময় নিয়ে হলেও আপনারা দয়া করে বাংলা গানগুলো চালান।" 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

1 comment:

  1. রাজনৈতিক সংস্রব ছাড়া এধরণের গাঁট ছাড়ানো সম্ভব না। এফ এম চ্যানেলগুলো যারা চালাচ্ছে তারা এফ এম স্পেকট্রাম লীজ নিয়ে বসে আছে। তারা যা খুশী তাইই করবে। এব্যাপারে অনুরোধ উপরোধ করে কিছু লাভ নেই যদি না সরকারী হস্তক্ষেপ দ্বারা অনতিবিলম্বে এর বিরুদ্ধে একটা অর্ডিনান্স জারি করে 4.6.3 clause এর সংশোধন করা হয়। সংশোধন অনুযায়ী এফ এম চ্যানেলগুলোকে সম্প্রচারিত গানগুলির অন্তত 50% স্থানীয শিল্পীদের গান প্রাইম টাইমে চালাতে বাধ্য করতে হবে। সরকার উদাসীন থাকলে কিচ্ছু করতে পারবেন না। লীজের নিয়ম অনুযায়ী চ্যানেল স্পেকট্রাম যে নিয়েছে তাদের যা খুশী তাই সম্প্রচার করতে পারে।

    ReplyDelete