Header Ads

প্রয়াত হলেন মিও আমোরে ব্র্যান্ডের কর্ণধার অর্ণব বসু


মিও আমোরে বাংলা ও বাঙালির নিজস্ব ব্র্যান্ড। যার কেকের খ্যাতি গোটা বাংলা জুড়েই। বিখ্যাত কেক  কোম্পানি মনজিনিস আর সুইটজ ফুড প্রাইভেট লিমিটেডের প্রায় পঁচিশ বছরের সম্পর্কে ছেদ পড়েছিল ২০১৫ সালে৷ ১৯৯২ সাল থেকে রমরমিয়ে ব্যবসা করছে মনজিনিস। কেকপ্রেমীদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছিল মনজিনিস। তাদের কেক, পেস্ট্রি উৎপাদন করতো সুইটজ ফুড প্রাইভেট লিমিটেড নিজেই৷ এরপর দুই সংস্থার ভাঙ্গনের পর সুইটজ ফুড প্রাইভেট লিমিটেড নিজস্ব প্রোডাক্টের কেক, পেস্ট্রি নিয়ে জন্ম দেয় মিও আমোরে নামক একটি ব্র্যান্ডের। 



মিও আমোরের ব্যবসা ছড়িয়ে আছে কলকাতা, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, কটক ও ভুবনেশ্বরের মতো শহরে৷ গ্রুপ হিসেবে তারা পরিচিতি লাভ করেছে 'সুইটজ ইন্ডিয়া' নামে। তার অধীনে বেশ কয়েকটি কোম্পানিও খোলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে বোড়াল, সাঁকরাইল ও জলপাইগুড়িতে খোলা হয়েছে কারখানা। পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় যেমন বেঙ্গালুরু, ভুবনেশ্বর ও গুয়াহাটিতেও রয়েছে তাদের কারখানা৷ এছাড়াও উইঙ্কিজ কেকেরও একটা ব্র্যান্ড আছে তাদের। পশ্চিম ভারত এবং রাজস্থান বাদে ভারতের সব জায়গাতেই ছড়িয়ে পড়েছে মিও আমোরের কেক। ব্রিটেনিয়া কোম্পানির উইঙ্কিজ কেককেও টেক্কা দিচ্ছে তাদের কেক। কুকিজ আর কেকে দুনিয়ার বৃহত্তম ব্র্যান্ড আমেরিকার পিলসব্যেরিতে এ দেশের বাজারে সমস্ত প্যাকেজড কেক এখনও পর্যন্ত শুধু তাদের কোম্পানিই বানাচ্ছে।  

গত বৃহস্পতিবার প্রয়াত হলেন এরাজ্যের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড মিও আমোরের কর্ণধার অর্ণব বসু। তিনি ছিলেন একজন সফল বাঙালি ব্যবসায়ী। বাংলার বাণিজ্যকে  তিনি নতুন দিশা দেখিয়েছিলেন। তিনি সমৃদ্ধ করেছেন বাঙালির কেক ব্যবসাকে। উৎসব অনুষ্ঠানে বিশেষ করে বড়দিনের সুস্বাদু কেক মানেই বাঙালির প্রথম পছন্দ এখন মিও আমোরে। এমন কেকের স্বাদ ভাগ করা সত্যিই কঠিন ব্যাপার। মৃত্যুকালে অর্ণব বসুর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি৷ 

দিনের পর দিন তাদের ব্যবসা বেড়েই চলেছে। বর্তমানে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ব্যবসা করে মিও আমোরে৷ ২০০০ এর মতো কর্মচারী কাজ করেন এখানে। প্রায় ২৫০ টি আউটলেট রয়েছে তাদের। অর্ণব বসুর শৈশব কেটেছে মুম্বাই শহরে। তাঁর বাবা রেলে কাজ করতেন। মুম্বাইয়ের কোলবার রেল স্কুলে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৯৭২ সালে তাঁর বাবার বদলি হওয়ার পর তিনি কলকাতার সেন্ট জের্ভিয়াস কলেজে ভর্তি হন। 

পড়াশোনা শেষ করার পর কিছুদিন তিনি বেকার অবস্থায় দিন কাটিয়েছিলেন৷ তারপর হিন্দুস্থান লিভারে তিনি কাজ শুরু করেন৷ তিনমাসের মধ্যেই এখানে কাজ করা শেষ করে তিনি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ হায়দ্রাবাদের প্রোবেশনারি অফিসার হিসেবে যোগ দেন। তারপর সৌদি আরবে তিনি কেক ও পেস্ট্রিজ তৈরির কাজ শুরু করেন৷ তিনি ঠিক করেছিলেন সৌদি আরবেই থেকে যাবেন বাকী জীবনটা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর অনুরোধে দেশে ফিরে আসেন৷ তারপর পারিবারিক ব্যবসা শুরু করেন মনজিনিস কোম্পানিতে। 

একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে কর্মসূত্রে বিদেশে বসবাস করেন। তাঁর কোনো ছেলেমেয়েই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নেই। তাই তিনি কোম্পানির দায়িত্ব দিয়ে গেছেন তাঁর পেশাদারদের। 

প্রতিবেদন- লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক

No comments