শবর, লালমোহন বাবু, তোপসে, ফেলুদা, অজিত ও ব্যোমকেশকে একপর্দায় নিয়ে এলেন পরিচালক সুজয় পাল ভূতের রাজা এন্ড কোম্পানিতে
নতুনত্বের চমকে ও ভিন্ন ঘরানায় বাংলা সিনেমা বারে বারে দিয়েছে উপহার। বিগত পাঁচটা বছরে তো বাংলা সিনেমার ধারাই যেন বদলে গেছে। নস্টালজিক, ঐতিহাসিক গবেষণামূলক, কল্পবিজ্ঞান, গোয়েন্দা কাহিনী, ভৌতিক, ডার্ক ওয়েব, হিউম্যান ট্রাফিকিং, ইউথেনেসিয়া, সাইকোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার, মিউজিক্যাল, অভিযান, মহাকাশ, ফুড ফ্যান্টাসি, অ্যান্থোলজি এরকম অসংখ্য বিষয় নিয়ে কাজ চলছে। ফিচার ফিল্মের সাথে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মগুলিও আপনাকে মুগ্ধ করতে পারে। হইচই, আড্ডা টাইমস, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, ইউটিউবের পাশাপাশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও আসছে অনবদ্য সব সিনেমা।
এরকমই একটি ফিল্ম উপহার দিতে চলেছে শুভ মহরত
এন্টারটেইনম্যান্ট ও বি চ্যানেল। ছবির নাম 'ভূতের রাজা এন্ড কোম্পানি'। এই
ছবিটি পরিচালনা করেছেন সুজয় পাল।
কলকাতা হল সাহিত্যের শহর। এশিয়ার সবচেয়ে বড়
বইমেলা, ভারতের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরী, বই পড়ার আড্ডা কফিহাউস, পৃথিবীর সবচেয়ে বড়
পুরানো বই এর মার্কেট কলেজ স্ট্রিট কলকাতাতেই অবস্থিত। সুতরাং কলকাতার সাথে
লাইব্রেরীর সম্পর্ক চিরাচরিত। এক কালে বাংলার প্রায় সব বাড়িতেই ছোটো ছোটো
লাইব্রেরী ছিল কিন্তু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ই-বুক ইত্যাদির চাপে এখন সেটাও কমে
যাচ্ছে। সাথে হেরিটেজ লাইব্রেরীগুলিও প্রোমোটার রাজের আক্রমণে ধুঁকছে যা যথেষ্ট
চিন্তার। ঐতিহাসিক শহর কলকাতার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তিনশো বছরের ইতিহাস
আগলে থাকা বহু বাড়ি। চ্যাপলিন থিয়েটার বহু আন্দোলনের পরও ২০১৩ তে ভেঙে ফেলা
হয়েছে। গুরুপদ হালদার রোডের গুরুপদ হালদার নির্মিত বাড়িও ভেঙে ফেলা হয়েছে। খিদিরপুরে
মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়িও প্রোমোটারের চোখ রাঙানি সহ্য করেছে। এই নিয়েই গল্পের
জাল বুনন। ভূতের ভবিষ্যতে একটি বাড়িকে ভূতেরা আগলে রাখার জন্য অনেক কারসাজি
করে। আমি সুভাষ বলছি সিনেমায় নিজের বাড়ি আগলে রাখা। হারকিউলিস সিনেমাতেও
প্রোমোটার থেকে বাঁচতে হারুর হাস্যকৌতুক কাহিনী। এরকম বহু বাংলা সিনেমাতেই
প্রোমোটার রাজদের অত্যাচারের কাহিনী ফুটে ওঠে।
ভূতের রাজা এন্ড কোম্পানি আবার এক নতুন
মাত্রা দিতে চলেছে প্রোমোটার রাজের কাহিনীকে সিনেমা রুপান্তরে। শুধু ভূতের রাজাই
নয় পরিচালক সুজয় পালের গল্পে আসছেন বাংলার বিখ্যাত সব গোয়েন্দারা। শবর, লালমোহন বাবু
থেকে তোপসে, ফেলুদা, অজিত, ব্যোমকেশ কে নেই তাতে। প্রোমোটার রাজ, বাংলার লাইব্রেরী, বাংলার
হেরিটেজ, ভৌতিকতা, ভূতের রাজা সব নিয়ে আবার একটি জমকালো সিনেমা নিয়ে আসতে চলেছেন
পরিচালক সুজয় পাল।
এই ছবিতে অভিনয় করেছেন বিখ্যাত অভিনেতা বিশ্বনাথ
বসু, অচিন্ত্য দত্ত, প্রদীপ ভট্টাচার্য্য, পঙ্কজ মুন্সী, শিশু অভিনেতা সায়ন রায় এবং
অন্যান্যরা। এছাড়াও এই ছবিতে কন্ঠস্বর দিয়েছেন বাংলা চলচিত্রের অন্যতম অভিনেতা
শ্বাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, রুপঙ্কর বাগচি ও বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী।
এই ছবির কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক
সুজয় পাল নিজেই। এতে সহ পরিচালনা করেছেন মণিদীপা শীল। এই ছবিতে সিনেমাটোগ্রাফির
কাজ করেছেন মানস ভট্টাচার্য। মানস ভট্টাচার্য সিনেমাটোগ্রাফির সাথে রংবিন্যাসেরও
কাজ করে থাকেন। তিনি ময়ূরাক্ষী, মহালয়া, উড়োজাহাজের মতো ছবিতে রং বিন্যাসের কাজ
করেছেন। যদিও ভূতের রাজা এন্ড কোম্পানি সিনেমায় তাঁকে দেখা গেছে সিনেমাটোগ্রাফারের
ভূমিকায়। সম্পাদনা ও রংবিন্যাসের কাজ করেছেন এক কালের বিখ্যাত শিশু অভিনেতা অরিত্র
দত্ত বণিক। আবহসঙ্গীতের কাজ করেছেন শুভ্র দেব। সাউন্ড ডিজাইনিং ও মিক্সিং এর কাজ
করেছেন সূচীশুভ্র সেন।
শীঘ্রই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মু্ক্তি পেতে
চলেছে ‘ভূতের রাজা এন্ড কোম্পানি’। আগের বছর পুজোর আগে শেষ হয়েছিল শুট্যিং। এই সিনেমার
মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন টিম ‘ভূতের রাজা
এন্ড কোম্পানি’ এবং দর্শকেরা। কয়েকদিন আগেই মুক্তি
পেয়েছে এই সিনেমার ট্রেলার। আশা করা যায় এই
সিনেমা আপনাদের মন জয় করবে।
প্রতিবেদন- অমিত দে
প্রতিবেদন- অমিত দে
Post a Comment