Header Ads

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রসিদ্ধ চানাচুর 'সর্বমঙ্গলা চানাচুর'


অবসর সময়ে রুচির স্বাদ বদলাতে বাঙালির চানাচুর চাই চাই-ই। ঘরোয়া আড্ডা, বৈঠক, পিকনিক ও জমায়েতে বাঙালিরা চানাচুর খেতে দারুণ পছন্দ করেন৷ কেউ মুড়ির সাথে, কেউ চায়ের সাথে আবার কেউ খালি মুখে জিভের জল আটকাতে চানাচুর খান। চানাচুরের টক-ঝাল-মিষ্টি স্বাদ প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। চানাচুর পছন্দ করেন না এমন লোক বাংলাতে নগণ্য। কেবল মুখরোচক বস্তু হিসেবেই নয়, ভিন্ন রকম মুখরোচক খাবারেও চানাচুর ব্যবহৃত হয়। ঝালমুড়ি বা মশলা মুড়ি, ফুচকার মশলা, সিঙাড়ার চার্ট, পাঁপড়ের চার্ট, চিঁড়ে ভাজার সাথেও চানাচুর পরিবেশন করা হয়।  


কচিকাঁচা থেকে বৃদ্ধ-বনিতা সকলের কাছেই চানাচুর দারুণ প্রিয়। বাসে-ট্রেনে-বিমানে চড়ার সময়ও বাঙালিরা চানাচুর খান। মেঘলা দিন, বৃষ্টিভেজা দিন বা শীতের দিনে চানাচুর মুখে নেওয়ার আনন্দই আলাদা। যাই হোক চানাচুরের অতিরিক্ত প্রশংসা না করে জিভের স্বাদ না বাড়িয়ে বাংলার এক বিখ্যাত চানাচুর নিয়ে কথা বলা যাক৷ সর্বমঙ্গলা চানাচুরের নাম শুনেছেন? যদি নাম না শুনে থাকেন, তাহলে এই চানাচুর কোম্পানিটি নিয়ে বলি৷ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিখ্যাত চানাচুর হলো সর্বমঙ্গলা চানাচুর। স্বাদে এই কোম্পানির চানাচুর অতুলনীয়। টক-ঝাল-মিষ্টি স্বাদে ভরপুর এমন চানাচুরের জুড়ি মেলা ভার। 

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রাধানগর অঞ্চলের জনপ্রিয় চানাচুর হলো সর্বমঙ্গলা চানাচুর। ২০১২ সাল থেকে পথচলা শুরু হয় সর্বমঙ্গলা চানাচুরের। দেখতে দেখতে সাফল্যের সাথে আট বছর অতিক্রম করে ফেলেছে এই কোম্পানি। পশ্চিম মেদিনীপুর  জেলার বিভিন্ন দোকান ও স্টলে এই চানাচুর পাওয়া যায়। কেবল দোকান বা স্টলেই নয়, বাসে-ট্রেনে হকাররাও বিক্রি করেন এই চানাচুর। পুরো জেলা জুড়ে এই চানাচুরের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ছাড়িয়ে সর্বমঙ্গলা চানাচুরের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে পাশ্ববর্তী জেলাগুলিতেও৷ রূপে-গুণে দেখতে অসাধারণ এই চানাচুর। বাংলা হরফে উন্নতমানের প্যাকেজিং ও প্রোডাক্ট সহকারে বাজারে বিক্রয় হয় এই চানাচুর। সর্বমঙ্গলা চানাচুরের প্রতিষ্ঠাতা হলেন জগন্নাথ নন্দী নামের একজন বাঙালি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই অঞ্চল পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্থল। কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন ও সব্জী ব্যবসা এই অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। শুধু তাই নয় কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠশিল্প, ফার্ণিচার ও আরো অনেক ছোটো-বড় ব্যবসার সুযোগ আছে এখানে। আর্থিক দিক দিয়ে বেশিরভাগ পরিবার শান্তিতে দিন কাটান এই অঞ্চলে। 

শহুরে-গ্রাম্য বাবুরা বলেন বাঙালিরা নাকি ব্যবসা পারেন না। যে কথা মেনে নেওয়া একদমই ভুল৷ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার গ্রামাঞ্চলে ও ছোট্ট পৌর এলাকাতে বাঙালিরা হাসিমুখে বুক ফুলিয়ে ব্যবসা করেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে অসংখ্য কোটিপতি বাঙালি বসবাস করেন৷ সর্বমঙ্গলার মতো অনেক স্বনির্ভর গোষ্ঠী বহুদিন আগে থেকেই এখানে গড়ে উঠেছে। সর্বমঙ্গলা কোম্পানি কেবল চানাচুরই নয়, ঝুরি ভাজা, বাদাম ভাজা, গাঁঠিয়া, ঝাল মটর, চিঁড়ে ভাজা ও চিঁড়ের পোলাও নিজস্ব কারখানাতে ঘরোয়া উপায়ে তৈরি করে৷ যারা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল নিজের চোখে একবার পরিদর্শন করতে চান তারা একবার সর্বমঙ্গলা চানাচুরটা কিনে চেখে দেখতে পারেন৷ যদি পারেন বাড়ির জন্য চার-পাঁচ প্যাকেট কিনেও নিয়ে যেতে পারেন। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments