Header Ads

পঙ্গপালের পরবর্তী গন্তব্য কী এবার বাংলা?


সারা বিশ্বে করোনা ভয়ঙ্কর ভাবে থাবা বসিয়েছে। এই আবহের মাঝেই পঙ্গপাল হানা দিলো ভারতে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে কৃষিক্ষেত্রে প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পঙ্গপালের আক্রমণে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার পেরিয়ে পঙ্গপালের বিশাল ঝাঁকটি বর্তমানে অবস্থান করেছে ঝাড়খণ্ডে। এই পঙ্গপাল ঝাঁকটির পরবর্তী  গন্তব্য কী পশ্চিমবঙ্গ? যেহেতু এই ঝাঁকটি ঝাড়খণ্ডে  অবস্থান করছে সেহেতু মনে হতেই পারে যে পঙ্গপালের পরবর্তী গন্তব্য হয়তো পশ্চিমবঙ্গ। ১৯৬১ সালে পশ্চিমবঙ্গে পঙ্গপাল হানাতে যে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছিল তার থেকেও খারাপ অবস্থা হতে পারে যদি আবারো পশ্চিমবঙ্গে হানা দেয় পঙ্গপালের দল।


চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীর ২০ তারিখ ফুড এন্ড এগ্রিকালচার  অরগানাইজেশান অফ দ্য ইউনাইটেড নেশন তাদের এক রিপোর্টে ভারত ও আফ্রিকাতে পঙ্গপাল হানা দেওয়ার কথা জানায়। এই রিপোর্টে ভারতকে তীব্রভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। ২০০৩ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত পশ্চিম আফ্রিকাতে পঙ্গপালের হানাতে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে পঙ্গপালের বংশবিস্তার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে এমনটা ঘটে থাকে। জলবায়ুর ওপর নির্ভর করে এই পতঙ্গটি তিন থেকে চার মাস বাঁচে।'হর্ন অফ আফ্রিকা'র প্রভাব ভারতে প্রচন্ড ভাবে পড়বে বলে উল্লেখ করা হয় রিপোর্টে। ভারতের কৃষিক্ষেত্র পঙ্গপালের হানাতে বিপর্যস্ত হতে পারে। ভারতের কৃষিতে বিপর্যয় ঘটলে ভেঙ্গে পড়বে অর্থনীতি। রাষ্ট্রসংঘের সেই রিপোর্টের একটি লিঙ্ক দেওয়া হলো- 

রাষ্ট্রসংঘের আভাস অনেকটাই সত্যি হলো৷ ভারতের উত্তরের রাজ্যগুলোতে নষ্ট হয়ে গেছে বহু ফসল৷ যা দেশকে খাদ্যসঙ্কটে ফেলে দেবে৷ পঙ্গপালের হানা রুখতে চরম ব্যর্থ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টকে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের পাত্তা না দেওয়ার কারণে এমনটা ঘটেছে। ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের পঙ্গপাল দমনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি আক্রমণের পূর্বে। ফলে এক বিশাল ক্ষতির বোঝা বয়ে বেড়াতে হবে গোটা দেশকে। 

পশ্চিমবঙ্গে আক্রমণের আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ এ রাজ্যের চাষীদের কপালে জমা হয়েছে  চিন্তার ভাঁজ। কিন্তু পঙ্গপাল দমনের জন্য ইতিমধ্যেই চাষীরা উদ্যোগ নিতে শুরু করেছেন। ১৯৬১ সালের সেই হানার কথা এখনও বাংলার চাষীরা ভুলতে পারেন নি৷ পঙ্গপালের হানার কারণে মহামারী ঘটে থাকে৷ এক একটা পঙ্গপালের ঝাঁক প্রায় ৩৫০০০ মানুষের খাবার ভক্ষণ করে রাখার ক্ষমতা রাখে। একদিকে করোনা, অন্যদিকে আমফান আর এবার পঙ্গপাল হানার সম্ভাবনা৷ দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না বাংলাকে। এই বছরটা বাংলার কাছে এক অন্ধকারতম অধ্যায়। 

পঙ্গপাল যখন হানা দেয় তখন তাদের দলে চার থেকে আট কোটি পঙ্গপাল থাকে। পঙ্গপালের হানা দেওয়ার ঘটনাকে বলা হয় 'গ্রেগরিয়াস'। বাতাসের উষ্ণতার গতি অনুযায়ী বিচরণ করে পঙ্গপালের ঝাঁক৷ একশো থেকে দুশো কিমি জায়গা জুড়ে এদের গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। এদের এতোটাই শক্তি যে ১২০ মাইল পর্যন্ত জমির ফসলকে আত্মসাৎ করে দিতে পারে। এই পতঙ্গ আকারে ক্ষুদ্র হলেও এদের ক্ষমতার বলে মহামারী ঘটতে পারে। বলা চলে করোনা ভাইরাসের থেকেও ভয়ানক এই পঙ্গপাল। আফ্রিকা থেকে বেলুচিস্থান, তারপর ভারতের উত্তরে প্রবেশ করে পূর্ব ভারতে পৌঁছে গেছে পঙ্গপালের ঝাঁক। এবার পঙ্গপালের আক্রমণের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তার কালো মেঘ বিরাজ করেছে বাংলার আকাশে। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments