Header Ads

সব হাঁচিই করোনা নয় এই বার্তাই উঠে এল হ্যাকছো সিনেমায়


এই লকডাউনের সময়ে যখন পৃথিবীর মানুষ  অস্থির হয়ে উঠছেন তখনও কিন্তু বসে নেই শিল্পী সমাজ। একটা সমাজকে সুস্থ রাখতে শিল্পীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য এই মূহুর্তও তার ব্যতিক্রম নয়। বরং এই সময়ে মানুষের মনের চঞ্চলতা দূর করতে একটা গান, একটা সিনেমা বা একটা বাদ্যযন্ত্র যেন খুব দরকারি হয়ে পড়েছে।



এই সময়ে দাঁড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব রেখে শিল্পীদের কাছে একটা নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে নতুনত্ব রেখে লকডাউন শিল্প করার।বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ভাবে কাজ করছেন।এরকম-ই এ সময়ের একটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র হল হ্যাকছো।এই হ্যাকছোর নিচেই লেখা আছে ‘All Sneeze Are Not Bad’  অর্থাৎ সব কাশিই খারাপ নয়, এ কথাটার মর্মার্থ আপনি এই সিনেমা দেখার সময় প্রথমে বুঝতে পারবেন না কিন্তু একদম শেষ মুহুর্তে এসে আপনি বুঝতে পারবেন এ কথাটা কতখানি সার্থক ভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। কেউ যদি হ্যাকছো বাদে এই সিনেমার অন্য কোনো নাম দিতে বলতো তো ‘All Sneeze Are Not Bad’  এই নামটার কথাই আগে বলবো।রূপকে ব্যবহৃত হ্যাকছো নামটিও যথার্থ হয়েছে।

এই সিনেমার পরিচালক ইন্দ্রনীল ব্যানার্জী এই বার্তাটাই দিতে চেয়েছেন যে হাঁচি মানেই কিন্তু করোনা নয়। এখানে নস্যি নিয়ে একটি ঘটনা দেখানো হয়েছে যেটা হয়তো ঘটতেই পারে এক্ষেত্রে হাঁচি স্বাভাবিক কিন্তু দেখা গেল এই হাঁচি দেখে একজন ফোন করছেন যে আমাদের পাড়াতে একজনের করোনা হয়ে গেছে।এই গল্পে দেখানো নস্যির ঘটনাটা পুরোপুরি বলছিনা কারণ এই কথা বললে যিনি এখনও দেখেননি তার জন্য সিনেমাটার রস নষ্ট করা হতে পারে।সিনেমার সূচনা হচ্ছে একটি বাড়ির সকলের ঘুম থেকে ওঠার দৃশ্য নিয়ে।সকালের একটা ছোট্টো পরিবারের প্রেমময় উঠকো ঝামেলা তারপর একজন বাজার যাচ্ছেন যেটা তিনি বেশ হাস্যরসের সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন এই সিনেমার পরিচালক।তাছাড়া একজন চাকরিজীবির বাড়ি থেকে কাজ করার ঘটনা বসের সঙ্গে হাল্কা মনোমালিন্য ও তার মাঝেই তাকে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন বস।বসের নিয়ে মিম বানিয়েছিলেন চাকুরীজীবি কিন্তু সেই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে বস দেখে ফেলেছেন।এসব বেশ হাস্যরসাত্মক কাহিনী রয়েছে এই গল্পে।

এই সিনেমার প্রযোজনা করেছে ইউনিটি পিকচার্স।পরিচালনা, চিত্রনাট্য এবং ইডিটিং এর কাজ করেছেন ইন্দ্রনীল ব্যানার্জী।এতে অভিনয় করেছেন দেবস্মিতা চক্রবর্তী, তুহিন দাশগুপ্ত, সৌনক রায়, সুদীপ বিশ্বাস, রাজীব বিশ্বাস(স্বামী), দেবপ্রিয়া চক্রবর্তী এবং প্রদীপ মাইতি।এই গল্পে সবার অভিনয়-ই ছিল একদম সাবলীল, তাদের মুখের ভঙ্গিমা ছিল অত্যন্ত মানানসই যা এই সিনেমাটিকে করে তুলেছে জীবন্ত।বৌদির চরিত্রে অভিনয় করেছেন দেবস্মিতা চক্রবর্তী যার অভিনয় ছিল একদম খাঁটি।বাকি সকলেরই অভিনয় ছিল অত্যন্ত ভালো।চরিত্র অনুযায়ী কাকেও এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখা দুস্কর।সকলের অভিনয়-ই ছিল ভালো।দেখে বোঝার উপাই নেই যে এটা লকডাউন ফিল্ম। সকাল বেলার ঘুম থেকে ওঠার সময় মুখের এক্সপ্রেসন সকলেই অত্যন্ত সুন্দর ভাবে রেখেছেন।

সিনেমায় ব্যবহৃত ক্যামেরার শট গুলো একদম ঠিকঠাক ছিল।এতে ডিওপি সুপারভাইজ করেছেন তুহিন দাশগুপ্ত।তাছাড়া শুরুতে সাদা কালো এবং রঙিন ছবির এই কম্বিনেশনটাও ছিল বুদ্ধিদীপ্ত।সিনেমায় ব্যবহৃত মিউজিকটির নির্বাচনও এই সিনেমার জন্য ছিল যথাযথ। ইডিটিংও হয়েছে সিনেমা-সায়েন্স মেনে।চিত্রনাট্যের লেখনীটিও এই সিনেমাটিকে একটি অন্য মাত্রা দিয়েছে।কথা, কাহিনী, হাস্যরস, অভিনয়, মিউজিক, সিনেমার বার্তা সবদিক দিয়ে এই সিনেমা দেখলে আপনার ১১ টা মিনিট ভালো যাবে এটা বলাই বাহুল্য।এই সিনেমাটি দেখতে হলে নীচের লিঙ্ক থেকে দেখে ফেলুন।


প্রতিবেদন- অমিত দে

No comments