লকডাউনে অবসর সময়কে রামধনুর সাতরঙে ভরিয়ে দিতে দোয়াত কলম মন ও ড্রইংরুমের যৌথ প্রয়াস কোয়ারান্টাইন আনপ্লাগড
সোশ্যাল ডিসটেন্সিং শব্দটা খুব একটা শ্রুতিমধুর নয়। যেটাকে সামাজিক দূরত্ব বলা হচ্ছে আসলে তা সামাজিক দূরত্ব নয় ওটা ফিজিক্যাল ডিসটেন্সিং। লকডাউনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা সঠিক কাজ নয়। সামাজিক দূরত্ব মানে হলো সমাজের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা। যেটা নিছকই ভুল কাজ। লকডাউনে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ফিজিক্যাল ডিসটেন্সিং বজায় রাখতে হবে। ফিজিক্যাল ডিসটেন্সিং মানে হলো শারীরিক দূরত্ব। করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হলে শারীরিক দূরত্বই হলো আসল৷
লকডাউনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে কিন্তু কোনোমতেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নয়। এই লকডাউনে সমাজের প্রতিটি মানুষের সাথে মিলেমিশে একসাথে করোনার বিরুদ্ধে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এই লকডাউনে অনেক মানুষই বাড়িতে একা একা বসে নানান সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে সময় অতিক্রম করছেন। সাংস্কৃতিক বিষয়ের সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত করে একটু অন্যরকম সময় কাটাচ্ছেন বহু মানুষ। এই পরিস্থিতিতে টিম দোয়াত কলম মন এবং ড্রইংরুমের যৌথ প্রয়াসে শুরু হয়েছে #QuarantineUnplugged. গান, গল্প, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, শর্ট ফিল্ম, স্পোর্টস ডিবেট ও আরো বেশকিছু বিষয় নিয়ে প্রতিদিন আলোচনা ও সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে আয়োজন করা হচ্ছে সাংস্কৃতিক আসরের।
প্রতিটি শিল্পীর শিল্পসত্ত্বাকে বেশি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তারা বদ্ধপরিকর। বাস্তব জীবনে আমরা দেখেছি অনেক সাধারণ মানুষের মধ্যে বহুমুখী প্রতিভা রয়েছে। যে প্রতিভাকে যথেষ্ট সম্মান দিতে তারা এগিয়ে এসেছে। শিল্পী ও শিল্পের গুরুত্ব যাতে মানুষ লকডাউনেও না ভুলে যায় তার জন্য এ সুন্দর আয়োজন। একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে তারা আয়োজন করে চলেছে এই অনুষ্ঠানগুলোর। এই প্ল্যাটফর্মে তারা প্রধানত হাজির করছেন বিভিন্ন শিল্পীদের। এই লকডাউনে তাদের সময় কাটানোর গল্প, তারা করোনার অসম লড়াইকে কোন চোখে দেখছেন এবং মানুষকে সচেতন করার বার্তা প্রভৃতি যাবতীয় বিষয়বস্তু তুলে ধরা হচ্ছে।
এছাড়াও তারা একটি অনলাইন সিরিজ শুরু করেছে যেখানে রাজনৈতিক কর্মী, খেলোয়াড়, প্রাক্তন খেলোয়াড়, ক্রীড়া সাংবাদিক, ক্রীড়া বিশ্লেষক, চলচ্চিত্র অভিনেতা, চিকিৎসক, গায়ক-গায়িকা, সংগীতশিল্পী, অধ্যাপক, নাট্যকর্মীর মতো ভিন্ন ভিন্ন পেশার মানুষ আলোচনায় থাকছেন। তাঁরা মানুষের সাথে এই সময়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন। এর পাশাপাশি চলছে শৈল্পিক চর্চা। তারা অনলাইনে পালন করেছে রবীন্দ্রজয়ন্তী। এমনকি তারা দুটো শর্টফিল্মও তৈরি করেছে। একটি নববর্ষকে নিয়ে যার নাম '১' লা বৈশাখ। চলতি বছরে লকডাউনের জন্য নববর্ষ ছিল অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় একটু আলাদা। এই নববর্ষে অনেক বন্ধুদের লুকিয়ে থাকা গল্প ও দেখা না দেখার গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে এই শর্টফিল্মটি। অন্য আরেকটি শর্টফিল্মের নাম 'লোভ'। মানুষের লোভ কতটা বিপদে ফেলতে পারে গোটা দুনিয়াকে সেই গল্পই উঠে এসেছে এই শর্টফিল্মে। অনিকেত, শুভঙ্কর, সৌত্রিক, অরিত্র, সায়ন, প্রজত, মৌপর্ণা, দীপা, সৌপ্তিক ও নির্মাল্য নামের কয়েকজন তরুণ-তরুণী একসাথে সকলে মিলে দোয়াত কলম মন ও ড্রইংরুমের যৌথ প্রয়াসে কাজ করছেন।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment