আপনি কি জানেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামেও হয়েছে ডাইনোসরের প্রজাতির নামকরণ?
ভারতে যতজন বিজ্ঞানী
ডাইনোসর নিয়ে গবেষণা করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ড. শঙ্কর চ্যাটার্জী।
তিনি প্রায় ১২ টি প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম খুঁজে বের করেছেন এবং তাদের প্রজাতির
নামকরণ করেছেন। তিনি ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে বড়পাসরাস (Barapasaurus) নামের ডাইনোসর আবিষ্কার করেন। সবচেয়ে বড় কথা তিনি
নামটিও বাংলায় দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
প্রায় ১৯০ মিলিয়ন বছর
আগে সিনেমুরিয়ান যুগ থেকে প্লায়েন্সবাকিয়ান যুগের মধ্যবর্তী সময়ে এই শ্রেণির
ডাইনোসরেরা বসবাস করতো। বড়পাসরাস ডাইনোসরদের একটি মাত্র প্রজাতি এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার
হয়েছে যার নাম বি. টেগোরেই (Barapasaurus tagorei)। এই টেগোরেই কথাটা
নেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদবী অনুযায়ী।
এই শ্রেণির ডাইনোসর হল
সরিস্কিয়ান ডাইনোসর অর্থাৎ এদের পশ্চাদভাগের লেজ গিরগিটির মত হত। এরা সাধারণত নিরামিষাশী ও লম্বায় প্রায় ১৪ মিটার হতো। ছটি ডাইনোসরের ৩০০ টি হাড়ের
জীবাশ্ম পাওয়া যায় যার ফলে প্রায় সমপূর্ণ বর্ণনা পাওয়া সম্ভব হয়েছে এই শ্রেণির
ডাইনোসরদের। তবে এরা সরোপড কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক
ছিল ১৯৮৪ সালের আগে পর্যন্ত যদিও ১৯৮৪ সালে এদের ক্লেড সরোপডা তা সঠিক ভাবে
প্রমাণিত হয়।
বি. টেগোরাই ডাইনোসর
আবিষ্কার করেন শঙ্কর চ্যাটার্জী এবং সহ আবিষ্কর্তা ছিলেন জৈন, কুট্টি এবং রায়-চৌধুরী।
তেলেঙ্গানার নলগোন্ডা জেলার পোচাম্পালি গ্রামের পাশে এই শ্রেণির ডাইনোসরদের
জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছিল যা এখন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট কলকাতার
জিওলজিক্যাল মিউজিয়াম সংরক্ষিত আছে।
একসাথে ছটি ডাইনোসরের
৩০০ টি হাড়ের জীবাশ্ম পাওয়া যায় প্রায়
২৭৬ বর্গমিটার জায়গায়। যদিও বেশিরভাগ হাড় গুলিই ছিল ছিন্নবিচ্ছিন্ন
অবস্থায়।কোটা ভূতাত্বিক গঠনের নীচে থাকা বেলেপাথরে। তবে মাথার খুলির হাড় কেন
পাওয়া সম্ভব হয়নি শ্বাশ্বতী
বন্দ্যোপাধ্যায়, সংঘমিত্রা রায়, ধুর্ঝুটি প্রসাদ সেনগুপ্ত এবং ডেভিড. ডি. জিলেট
তাদের গবেষণাপত্রতে দেখান। ভারতে ডাইনোসর নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি। তবে সবচেয়ে
বেশি গর্বের ব্যাপার হল বেশিরভাগ ডাইনোসরের গবেষণা বাঙালিরাই করেছেন। আর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে ডাইনোসরের প্রজাতির নামকরণ হয়েছে এর চেয়ে বড় গর্বের আর
কিছু নেই।
Post a Comment