চোখ নিয়ে এক অজানা রহস্যের প্রতিফলন হলো 'ব্ল্যাক'
মানুষের চোখ চুরি নিয়ে তার কারবার। সকলের অজান্তেই খুবলে নেন চোখ। লোকে জানেন তিনি একজন অন্ধ ডাক্তার। নাম তার অনিন্দ্য চৌধুরী। অন্ধত্বের অভিনয় করে নিজের মস্তিষ্ক প্রয়োগ করে বিভিন্ন মানুষের চোখ সংগ্রহ করা তার এক ভয়ানক নেশা। তার বাড়িতে ভাড়া নিতে আসেন ঈশানী নামের একটি মেয়ে। বাড়িতে ঢোকার পর ঈশানী একটা অজানা গন্ধের আভাস পান। তবে অনিন্দ্য চৌধুরী তা পাত্তাই দিলেন না। অনিন্দ্য চৌধুরী ঈশানীর সাথে বেশ কিছুক্ষণ বাক্যালাপ চালাতে থাকেন। বাক্যালাপের মাঝেই অনিন্দ্য চৌধুরী তার একটি ড্রয়িং খাতা দেখালেন, যে ড্রয়িং খাতাটা মানুষের চোখের ছবিতে পরিপূর্ণ। যা দেখে ঈশানী অনিন্দ্য চৌধুরীকে নিজের চোখ আঁকার অনুরোধ জানান। অনিন্দ্য চৌধুরী তা অনয়াসে এঁকে ফেললেন৷ এরপর এক রহস্যময় ঘটনার স্বীকার হন ঈশানী। তার সাথে ঠিক কী হয়েছিল যেটা না বললেও চলে। কারণ এটা বললে অনেক দর্শকের আগ্রহ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমরা কথা বলছি পরিচালক শুভম দত্ত পরিচালিত বাংলা শর্টফিল্ম 'ব্ল্যাক' নিয়ে।
গত ১২ ই মে এসডিপি ভেঞ্চারের ব্যানারে তাদের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। যে ছবিতে অভিনয় করেছেন অনিন্দ্য ব্যানার্জি ও রয়তি ভট্টাচার্য। এ ছবির গল্পের কথা তো এই প্রতিবেদনের প্রথমেই বললাম। এবার ছবির স্ক্রিপ্ট, সম্পাদনা, কালার গ্রেডিং, ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল ও অভিনয় নিয়ে আলোকপাত করা যাক। এ ছবির অভিনয় এক্কেবারে সাবলীল। অভিনয়ের পাশাপাশি ছবির স্ক্রিপ্ট উন্নতমানের। এ ছবির স্ক্রিপ্ট ও ডায়লগ অত্যন্ত যত্ন সহকারে লিখেছেন নন্দিনী দাস। এরপর কালার গ্রেডিং সেটা তো যথেষ্ট নজরকাড়া। কালার গ্রেডিং ছাড়াও ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল ও সম্পাদনা বেশ ভালো। ছবির কালারে ব্যবহৃত হয়েছে একটা মিক্সড টোন। হিউ, স্যাচুরেশন ও ব্রাইটনেস নিখুঁত ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে ছবিতে। ক্যামেরা অ্যাঙ্গেলসের সাথে কথোপকথনও বেশ মানানসই। ছবির সম্পাদনাতেও কোনো ত্রুটি নেই৷ এ ছবির সম্পাদনা করেছেন রূজ৷
সবশেষে যেটা বাকী রইলো তা হলো সিনেমাটোগ্রাফি ও আবহসঙ্গীত। রাজদীপ দাশগুপ্তের উন্নতমানের আবহসঙ্গীত ছবিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে। সুশোভন চক্রবর্তীর সিনেমাটোগ্রাফিও দূর্দান্ত। তিনি বরাবরই শক্তিশালী সিনেমাটোগ্রাফি উপহার দিয়ে থাকেন দর্শকদের। পরিচালক শুভম দত্তের ছবিতে বরাবরই নতুন কিছু থাকে। এ ছবিতেও তার অন্যথা হয়নি। রহস্যের মায়াজালে তিনি অতীব সুন্দর করে গল্পটি প্রস্ফুটিত করেছেন। সব মিলিয়ে শুভাশিষ দত্ত প্রযোজিত এক অসাধারণ বাংলা ছবি হলো 'ব্ল্যাক'।
লকডাউনে যারা বাড়িতে বসে অস্বস্তিতে ভুগছেন তারা 'ব্ল্যাক' নামের এই শর্টফিল্ম একবার দেখেই নিতে পারেন। নির্ভেজাল মনোগ্রাহী ছবি হলো 'ব্ল্যাক'৷ পনেরো মিনিট পঁচিশ সেকেন্ডের এই ছবিটি আপনাকে এতটুকুও নিরাশ করবে না। কাজেই যারা দেখেননি নীচের লিঙ্কটি ক্লিক করে দেখে নিন এই ছবি।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment