চার দেয়ালে বন্দী সময়, বন্দী এ শহর। 'পৃথিবী'র নিবেদন 'চার দেয়ালের শহর'
সেই ব্যস্ত পৃথিবীর মানুষগুলো আজ ঘরবন্দী। সকলেই অচেনা এক মায়াবী প্রতীক্ষায়। প্রতি মুহূর্তে দুশ্চিন্তা গ্রাস করছে আমাদের। বাড়ির বাইরে পা রাখলে কেমন যেন আতঙ্ক ভর করছে শরীরে। একটি রোগের সংক্রমণের কাছে হার মানছে মানুষের সকল ক্ষমতা। কোনো মানুষ জানেনা নিজেদের ভবিষ্যৎ কী? তবুও মানুষ বাঁচার চেষ্টায় ব্যাকুল। মানুষ মরছে কাতরে কাতরে। এটাই হয়তো ধ্বংসের সূচনাপর্ব। মানুষ কী পারবে ভয়ানক এক রোগের বিরুদ্ধে জয়ী হতে? তারই উত্তর খুঁজছে সারা বিশ্বের মানুষ।
মানুষের শরীর হলো সভ্যতা। এই সভ্যতা না বাঁচলে বদলে যাবে পৃথিবীর আগামী চিত্র। মানুষহীন পৃথিবী কল্পনা করা আমাদের পক্ষে বেশ কঠিন। এমন একটা জটিল পরিস্থিতির কথাকে পাখির চোখ করে একটি সমসাময়িক গানের জন্ম দিলো 'পৃথিবী' বাংলা ব্যান্ড। যারা বরাবরই তাদের গানে লিখে চলে আবহমান পৃথিবীর গল্প। যাদের গানে এই সময়ের কথাগুলো স্পষ্ট ভাবে ফুটে ওঠে। যাদের গান ভবিষ্যতকে নিমেষে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতে পারে৷ সেই 'পৃথিবী'র নতুন প্রয়াস 'চার দেয়ালের শহর'।
"মুখ ঢেকেছে এ শহর কাটে রাতভোর, ব্যস্ততায় চোখে ঘুম নেই তাদের।" গানের প্রতিটি লাইন যেন কথা বলছে বর্তমান অবস্থার। শহরের অলিগলিতে যে চেনা ভিড় চোখে পড়তো। আজকে কোথায় সেই চেনা ভিড়? তিলোত্তমা কলকাতার চেনা ইমেজ কদিনেই বদলে গেছে। হাতে এখনও কয়েকটা দিন পেরোলে গৃহবন্দী দশা থেকে মুক্তি পাবে মানুষ। তাই সকলের চোখেমুখে অস্বস্তির ছাপ। আজকে মানুষে মানুষে লড়াই কদিনের জন্য থেমে গেছে। এই কদিনের লড়াই একটি রোগের বিরুদ্ধে। যে লড়াইতে নতুন অক্সিজেন জোগিয়েছে 'চার দেয়ালের শহর।'
'পৃথিবী' অত্যন্ত যত্ন সহকারে অল্প সময়েই মানবসভ্যতাকে চোখে আঙুল দিয়ে করোনা যুদ্ধোত্তর সময়ে ঘরবন্দী শহরকে স্পষ্টভাবে দেখিয়েছেন। গানটির পরিবেশনায় টিম 'পৃথিবী'। এ গানের প্রসঙ্গে 'পৃথিবী' ব্যান্ডের ভোক্যালিস্ট কৌশিক চক্রবর্তী জানান "এই প্রথমবারের জন্য ঘরবন্দী হয়েও নিজেকে ভেঙেছি, নিজের থেকে বেরিয়েছি। বদলানোর আশ্বাস অনেক আগেই পেয়েছিলাম।সেটাকে কাজে লাগিয়েই আমার অবসরকে অন্যভাবে তুলে ধরেছি এই গানে।যে স্ট্রাকচারে গানবাজনা করে আমি অভ্যস্ত এবার তার পুরোপুরি উল্টোপথে হেটেছি আমি। রিজেকশন আসবেই। আর যত আসবে, জেদও তত বাড়বে।ওটাই একমাত্র সত্যি।
যাই হোক,আপাতত ঘরবন্দী পৃথিবীর সবাই। কিন্তু কাজ থামেনি। এই বন্দীদশা কিন্তু আমাদের ভালোর জন্যই। শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি শেষ দুদিনে নতুন গান লিখে তা রেকর্ডও করেছি,সবার মোবাইল ফোনে একটা ঘরোয়া ভিডিও বানিয়েছি। বড় বিষয় এটাই যে, যে যার নিজের ঘরে বসেই কাজ করেছি।'পৃথিবী'র এই 'চার দেয়ালের শহর' আপাতত মুক্তি পেয়েছে। গানটির মধ্যে দিয়ে নিজের অবসরকে তুলে ধরার পাশাপাশি কিছু টুকরো বার্তাও দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা।"
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment