Header Ads

যারা মূলত রোমান্টিকধর্মী ছবি দেখতে ভালোবাসেন তারা অবশ্যই দেখতে পারেন 'যেতে যেতে পথে'


'প্রাক্তন' ছবিতে একটি কথা ছিল 'লোকে বলে প্যারিস ভালোবাসার শহর, আর আমি বলি কলকাতা প্যাশনের শহর।' অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠে শোনা গিয়েছিল এই কথাটি। সত্যিই কিন্তু তাই। কলকাতা শহরে যেন একটা আলাদা জীবন রয়েছে। যে শহরে যুগের পর যুগ বহু মানুষ ফিরে আসেন জাতিস্মর হয়ে। কলকাতার মধ্যেও কিন্তু আরেকটা কলকাতা রয়েছে। সেই কলকাতা হলো ভালোবাসার শহর। যে শহরে প্রতিদিন দেখা মেলে আবির ও দেবযানীদের মতো জুটিদের৷ যে জুটিগুলোর বসন্তের কোকিলের মতো আগমন ঘটে। আবার বসন্ত পেরিয়ে গেলে নিরুদ্দেশ। আপনারা কী চেনেন আবির ও দেবযানীকে? না চেনবারই কথা। আসলে আমরা কোনো বাস্তব জীবনের ঘটনা বলছি না। আমরা কথা বলছি সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা শর্টফিল্ম 'যেতে যেতে পথে' নিয়ে। চলুন ছবিটি কেমন হলো সেটি নিয়ে  একটু আলোচনা করা যাক। 


'যেতে যেতে পথে' হলো একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প। যে গল্পে নেই কোনো ন্যাকামি, যে গল্প শুধু উনিশ কুড়িই নয়, প্রতিটি মানুষের কাছের মানুষের কথা বলে। আমাদের প্রতিটি মানুষের জীবনেই কোন না কোন সময় প্রেম আসে। অনেক সময় আমাদের প্রিয় মানুষটি মাঝে মধ্যে নিজের খামখেয়ালে বহু দূরে হারিয়ে যায়। তাকে হয়তো ফিরে পেতে আমাদের বয়স বেড়ে যায়। এ ছবিটিও ঠিক সেরকমই। ছবির মুখ্য চরিত্র আবির ও দেবযানী। আপন ভোলা সাদা সিধে ছেলে হলো আবির। যার কলেজ জীবনে প্রতিটি দিন কাটতো রোমান্টিক কবিতা লিখে। তার কবিতায় মুগ্ধ হয়ে তার সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়িত হয়ে পড়ে দেবযানী৷ সেই সম্পর্ক হয়ে ওঠে বেশ গভীর। অগত্যা আবির ও দেবযানী দুজন দুজনের থেকে কোনোরকম অভিমান ছাড়াই বহুদূর চলে যায়। দীর্ঘ নয় বছর কোনো যোগাযোগ নেই তাদের মধ্যে। নয় বছর পর মহানগরের এক ব্যস্ততম সকালে আবারো দেখা হয় আবির ও দেবযানীর। এরপর তারা দুজনে ফিরে যায় তাদের পুরানো স্মৃতি রোমন্থন করতে। দিনরাত একসাথে হাসিখুশীতে সময় কাটতে থাকে তাদের। তারা আর কখনোই দূরে সরে যেতে চায়না। একসাথে সারাজীবন কাটাতে চায়। কিন্তু সময় কী বদলে দেবে তাদের? তারা কী আদৌ পারবে নিজেদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে? এরকমই একটি কাহিনীর জালবুনন করেছেন এ ছবির পরিচালক অভিজ্ঞান চ্যাটার্জি। 

ছবির গল্পের সাথে মিল রয়েছে বাস্তবের। ছবির গল্পকেও ছাড়িয়ে গেছে ছবির দুটো গান। অনির্বাণ শিকদার ও মনীষা সরখেলের গাওয়া মৌলিক গান 'তোমায় হঠাৎ কাছে পাওয়া' গানটি ছবির সাথে বেশ মানানসই। আর ছবির টাইটেল ট্র্যাক নিয়ে আলাদা করে কিছু না বললেও চলে। কারণ রবি ঠাকুরের গানে এক অদ্ভুত নস্টালজিয়া রয়েছে। এ ছবিকে 'চাঁদ উঠেছিল গগনে' গানটি আরো বেশি রোমান্টিক করে তুলেছে। 

এসডিপি ভেঞ্চারের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে 'যেতে যেতে পথে।' ইউটিউবে গত ২৮ শে মার্চ মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। ইতিমধ্যেই অসংখ্য মানুষের নজর কেড়েছে এই ছবি। আবিরের চরিত্রে ফিরোজ শাহ ও দেবযানীর চরিত্রে নীলাঞ্জনা পালের অভিনয়   সাবলীল। এ ছবিতে তাদের বিশেষ অভিনয় দক্ষতার পরিচয় পাওয়া গেছে। যারা মূলত রোমান্টিকধর্মী ছবি দেখতে ভালোবাসেন তারা অবশ্যই দেখতে পারেন এই ছবি। গান-গল্প থেকে শুরু করে অভিনয়, চিত্রনাট্য সব কিছুই অসাধারণ। বর্তমান জটিল পরিস্থিতিতে মানুষের মনে শান্তি দেওয়ার মতো ছবি হলো 'যেতে যেতে পথে'। আমাদের ব্যস্ত জীবনে তন্দ্রা নামিয়ে আনার ক্ষমতা রেখেছে এই ছবি।


প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments