Header Ads

লকাডাউন চলাকালীন ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম ব্লকের আম্বিশোল গ্রামের দায়িত্ব নিলো বাংলা পক্ষ, চলছে মিশন আম্বিশোল


জঙ্গলমহলের জঙ্গল ঘেরা ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম ব্লকের আম্বিশোল গ্রাম। সুবর্ণরেখা নদীর তীরে অবস্থিত এই গ্রামে প্রায় একশোটি পরিবারের অবস্থা শোচনীয়। লকডাউনের ফলে খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছিলেন তারা। বেশ কষ্টে সময় কাটছিল তাদের। সরকার থেকে চাল দেওয়া হয়েছিল ঐ একশোটি পরিবারকে। তবে চাল ছাড়া আর অন্য কিছু তাদের দেওয়া হয়নি৷ ফলত ঐ পরিবারগুলোর কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ৷ তারা কীভাবে আনন্দে দিন কাটাবেন বুঝতে পারছিলেন না। অভুক্ত অবস্থা দিনযাপিত হচ্ছিল তাদের। তারা বেঁচে থাকার কোনো সম্বল খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পেটে নেই ভাত, হাতে নেই কাজ, কীভাবে চলবে? অপেক্ষায় তারা দিন কাটাচ্ছিলেন কখন লকডাউন কাটবে। 


আম্বিশোলের অভুক্ত মানুষদের কথা জানতে পারলো ভারতে বাঙালির জাতীয় সংগঠন 'বাংলা পক্ষ'। এই মানুষগুলোর মধ্যে সুখের বাতাবরণ তৈরি করতে এগিয়ে আসে 'ঝাড়গ্রাম বাংলা পক্ষ'। তাদের দিকে বিশেষ ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলো৷ লকডাউন চলাকালীন পুরো গ্রামের দায়িত্ব নিলো বাংলা পক্ষ। প্রাথমিক ভাবে ৪০০ টি পরিবারকে খাদ্যসামগ্রীর তারা আবেদন জানিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়াতে৷ তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন বহু বাঙালি। প্রথম পর্যায়ে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়ে গেছে। আবারও দ্বিতীয় দফায় দেওয়া হবে সামগ্রী। সাথে দেওয়া হচ্ছে মাস্ক, সাবানও। মানুষের সহায়তায় যে পরিমাণ অনুদান এসেছে তাতে এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ চালানো সম্ভব হবে। তাই আরো বেশ কিছু পর্যায়ে আম্বিশোলের দীনদুঃখী মানুষদের পাশে দাঁড়াতে সকল বাঙালির কাছে আর্জি জানিয়েছে বাংলা পক্ষ। সফলভাবে যাতে এ কাজ সম্পন্ন হয় তারই জন্য আবারো আবেদন জানানো হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। 

বাংলা পক্ষের এ কাজ গড়েছে এক অনন্য নজির। আম্বিশোলের দীনদুঃখীদের কঠিন সময়ে ঠেকনার মতো জড়িয়ে রয়েছে বাংলা পক্ষ। এ কাজের জন্য বহু শুভানুধ্যায়ী মানুষেরা বাহবা জানিয়েছেন। এই উদ্যোগের প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম বাংলা পক্ষের সহযোদ্ধা উৎপল দাস জানান "আসলে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম হলো প্রত্যন্ত একটা ব্লক। ওড়িশার সীমান্তবর্তী  একটি জঙ্গলমহল এলাকা। এখানকার মানুষের দৈনন্দিন আয়ও যথেষ্ট কম। এখানে জঙ্গলের মধ্যে যেসব গ্রামীণ মানুষেরা বসবাস করে, তাদের আয়ের উৎস লকডাউনের ফলে এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা সার্ভে করে দেখেছি প্রায় ৪০০ টি পরিবার কর্মহীন হয়ে পড়েছে, যাদের পরিবার চালানো বেশ মুশকিল। তাই আমরা এই এলাকার ৪০০ টি পরিবারকে সাহায্যের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে আবেদন জানিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম এই এলাকার দায়িত্ব নেবো৷ বাংলা পক্ষ এটার পাশে দাঁড়াবে। এরপর সরকার থেকে কিছু ত্রাণ আসে। কিন্তু একশোটি পরিবার যাদের সরকারি ত্রাণের পরও দেখা গেছে দারিদ্র্যসীমা এতোটাই নীচে যে স্কেল দিয়ে মাপা যাবেনা। আমরা বাংলা পক্ষের উচ্চস্থানীয় সকল সদস্যের সাথে আলোচনা করে ঠিক করি যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন ঐ ৪০০ টির মধ্যে ১০০ টি  পরিবার যারা দুবেলা খেতে পায়না তাদের আমরা খাবারের ব্যবস্থা করবো৷ বেশ কিছু স্থানীয় মানুষ ও প্রবাসী বাঙালিরা সর্বতোভাবে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। প্রথম পর্যায়ে খাদ্যসামগ্রী জোগাড় হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়েরও খাদ্যসামগ্রী  জোগাড় করে নিয়েছি। তৃতীয়  পর্যায়ের জন্য সকলকে অনুরোধ করবো কিছু আর্থিক অনুদান দিয়ে আমাদের এ কাজকে সফল করুন৷ এই অঞ্চলের মানুষদের পাশে দাঁড়ান৷" 

প্রতিবেদন- লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক

No comments