Header Ads

জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহতে রচনা করলেন গীতাঞ্জলি, সোনার তরীর মতো কাব্যগ্রন্থগুলি


শিলাইদহের পদ্মা নদীর তীর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের খুব পছন্দের জায়গা ছিল। এ জায়গার সাথে ঠাকুর পরিবারের বহু স্মৃতি জড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায় অবস্থিত শিলাইদহ। এখানেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাটিয়েছিলেন তাঁর যৌবনকালের এক অংশ। এই গ্রামটির পূর্বনাম ছিল কসবা।


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি জড়িয়ে থাকা বিখ্যাত কুঠিবাড়ি এখানে অবস্থিত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৮৯ থেকে ১৯০১ পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ বছর এখানকার জমিদারী দেখতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ির পাশ দিয়েই বহে গেছে পদ্মা নদী যে নদী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনকে বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করেছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবনের বিখ্যাত বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলি রচনা করেছিলেন এখানেই। খেয়া, সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, কথা ও কাহিনীর মতো বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ গুলি তিনি এখানেই রচনা করেন। গীতাঞ্জলি, গীতিমালা ও নৈবেদ্য কাব্যগ্রন্থের অনেক কবিতা ও গান তিনি এখানেই রচনা করেছেন। ১৯১২ সালে তিনি শিলাইদহতে বসেই গীতাঞ্জলির ইংরেজিতে অনুবাদ করেন।



পদ্মা নদী কতটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রভাবিত করেছে এখানে লেখা তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলির নাম শুনলেই বোঝা যায়। খেয়া, সোনার তরী প্রতিটি নামের মধ্যেই নদীর ছোঁয়া রয়েছে।

এই শিলাইদহতে রীতিমতো বসবাস করতে শুরু করেন রবি ঠাকুর। এখানে তিনি তাঁর সন্তানদের গণিত শিক্ষার জন্য জগদানন্দ রায়কে নিযুক্ত করেছিলেন। এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে বিভিন্ন সময়ে দেখা করার জন্য প্রমথ চৌধুরী, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, দ্বীজেন্দ্রলাল রায়ের মতো সুপন্ডিত ব্যক্তিগণ আসতেন।

শিলাইদহের সাথে শুধু ঠাকুরবাড়িই নয় লালন ফকিরেরও কিছু স্মৃতি লুকিয়ে আছে। এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর লালন ফকিরের একমাত্র ছবি এঁকেছিলেন পদ্মার বুকে বোটে বসে।



এই জায়গাটি বর্তমানে রবীন্দ্রপ্রেমী মানুষদের জন্য একটি তীর্থস্থান। এখানে রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির পাশেই রয়েছে একটি সরোবর। কুঠিবাড়ির সরোবরে রক্ষিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক ব্যবহৃত বজরার অনুকৃতিও আছে এখানে। বর্তমানে এখানে টেগর মেমোরিয়াল মিউজিয়াম ও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেখানে কবিগুরুর ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিস যত্ন সহকারে রক্ষিত করা হয়েছে।

যে-কোনো রবীন্দ্রপ্রেমীর কাছেই শিলাইদহ হল পদ্মার ধারের আর এক শান্তিনিকেতন।



No comments