Header Ads

বাউলসাধক মহাত্মা লালন শাহের আঁখড়ার দোল বাঙালি সংস্কৃতির এক অন্য নজির রাখে


বাউলের অন্যতম কান্ডারী হলেন লালন শাহ। শুধু সংখ্যাই নয় গুণমান, দর্শন, ভাবধারা সব দিক দিয়েই লালনের বাউল বাঙালিকে উদ্বেল করে তোলে।কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও যার গান থেকে বারে বারে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। লালনের গানগুলি সংরক্ষণের ব্যবস্থাও তিনি করেন। ঠাকুর বাড়িতে বহুবার আমন্ত্রিত হয়েছেন লালন। 


বাংলাদেশের কুষ্ঠিয়ার রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি থেকে লালন আঁখড়া ছিল সামনেই। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহতে পদ্মানদীর বোটে লালনের ছবি এঁকেছিলেন যা একমাত্র লালনের প্রামাণ্য ছবি।

লালনের ধর্মনিরপেক্ষতা, জীবনদর্শন, লোকসঙ্গীত,গৃহস্থের জীবন, প্রেম এসব নিয়ে গাওয়া গানগুলি তৎকালীন বাংলায় ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়। মুখে মুখেই তার গান ছড়িয়ে পড়তো সারা বাংলাময়। গান্ধীরও ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দেয়া হয়েছিল। লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেউড়িয়াতে একটি আখড়া তৈরি করেন, যেখানে তিনি তার শিষ্যদের নীতি ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতেন। তার শিষ্যরা তাকে “সাঁই’’ বলে সম্বোধন করতেন। এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে লালন মন্দির।   


প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে দোল পূর্ণিমার সময় এখানকার দোলে মেতে ওঠেন বাংলাদেশের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ।সারা দেশ থেকে বাউলসাধকরা অংশ নেন এই দোলে। লালনের সমাধিস্থলকে কেন্দ্র করে চলে লালন স্মরণ উৎসব। দোল হল বাংলার একমাত্র উৎসব যেখানে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে কোথাও ঝুমুর গান, ছৌ-নাচ, আদিবাসী নৃত্য, রবীন্দ্র সঙ্গীত, রবীন্দ্র নৃত্য, বাউল ইত্যাদির প্রভাবে স্থানে স্থানে আলাদা বৈচিত্রের উৎসব হয়। 

লালনের মত অনুসারে এই দোল ফাল্গুন মাসের পূর্নিমাতে হয়ে থাকে। এই উৎসব যেকোনো বাউলপ্রেমি মানুষকে চমৎকৃত করতে পারে।

No comments