Header Ads

'জয় বাংলা' নামে একটি গান বানানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে হুমকী দেওয়া হলো ত্রিপুরার কয়েকজন বাঙালি শিল্পীকে


'ফানহোলিক ছোকরে' নামের একটি বাংলা ইউটিউব চ্যানেলে কয়েকজন ত্রিপুরানিবাসী বাঙালি ছেলে-মেয়েরা 'জয় বাংলা' শিরোনামের একটি গান মুক্তি দেয়। যে গান ইতিমধ্যেই ফেসবুক ও ইউটিউব মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষ শুনে ফেলেছেন। বিশ্ব বাঙালিকে উপস্থাপন করা হয়েছে এই গানে। বাংলা, বাঙালি ও বাঙালিয়ানার আস্বাদ জাগাতে নির্মিত হয়েছে এই গান। 


'জয় বাংলা' গানটি লিখেছেন সৈকত সরকার। এ গানটি গেয়েছেন কিষাণ দাস, প্রসেনজিৎ ঘোষ ও তাপস ধর। এ গানটি মুক্তির পর থেকেই বাংলা গানের বাজার মাতাচ্ছে। সূদুর ত্রিপুরা থেকে বাংলা গান মুক্তি দিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের নিজস্ব গান হিসেবে বাংলা গানের নতুন বাজার তৈরি করা হলো তাদের লক্ষ্য। যে লক্ষ্য নিয়েই হৃদয় দিয়ে তারা বানিয়েছেন এই গানটি। 

সবকিছু ঠিক থাকলেও হঠাৎ করে কয়েকজন মানুষ এ গানটি বানানোর জন্য গীতিকার থেকে শুরু করে এ গানের সাথে যুক্ত সকল কলাকুশলীদের ক্রমশ হুমকি প্রদর্শন করছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। এ ঘটনাতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এ গানের গীতিকার সৈকত সরকার। তিনি বলেন 'আমরা বিশ্ব বাঙালিকে তুলে ধরেছি জয় বাংলা গানটির মাধ্যমে। আমার পরিচয় আমি বাঙালি। আমি ভালোবেসে বাংলা গান করেছি। এরপরও যদি কারও কাছে মনে হয় আমরা ভুল করেছি তাহলে কিছু বলার নেই। আমরা যেহেতু বাঙালি তাই আজকে বাঙালি নিয়ে গান করেছি, অদূর ভবিষ্যতেও করবো। এতে কে কী ভাবলো দেখার প্রয়োজনটুকুও বোধ করিনা। আমি বাঙালি, আমি একশো বার বাংলা গান করবো।"

ত্রিপুরার উপজাতি সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের কয়েকজন মানুষ ও অসুস্থ মানসিকতার কিছু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে নোংরা ভাষাতে গালাগালি করেছে এ গানের নির্মাতাদের। তাদের বক্তব্য কেন এই গানে ভারত ও বাংলাদেশের পতাকা একসাথে দেখানো হবে? কেন বাংলাদেশিদের প্রতি এতো দরদ দেখিয়েছে তারা? কেন নিজের ভাষাতে এমন গান বানাচ্ছে তারা? মানুষ কেন তাদের গানটিকে উৎসাহ নিয়ে শুনছে? এ গানের শিল্পীরা নিজেদের দেশদ্রোহীতার পরিচয় দিয়েছে। ওদের বাংলাদেশে পাঠানো হোক। ওরা বাঙালি নিয়ে কাজ করলো অথচ হিন্দুদের নিয়ে গান করলো না। এমন সব কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের মাধ্যমে বাঙালি বিদ্বেষ ছড়াতে ব্যস্ত হতে দেখা যায় তাদের। 

এ গানের বিরুদ্ধে যারা বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে তাদের মন্তব্যকে পাত্তা না দিয়ে গীতিকার সৈকত সরকার লিটারেসি প্যারাডাইসকে জানায় যে " আমরা দুর্গাপুজো নিয়ে গান বানিয়েছি, শিব নিয়ে গান বানিয়েছি, পুলওয়ামা অ্যাটাকের বিরুদ্ধে গান করেছি এরপর বাঙালি নিয়ে গান করলাম। এরপরও ওরা আমাদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। আমাদের দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশি বলে অপমান করা হচ্ছে। আমরা বিশ্ব বাঙালির স্বার্থে দুই বাংলাকে আমাদের গান দেখিয়েছি। এটা অপরাধের কী হলো? আমি এটাই বুঝতে পারছি না। এভাবে একটা শিল্পকে নগ্নভাবে আক্রমণ করার মানেই হয়না। যারা প্রকৃত বাঙালি, যারা বাঙালির গর্বে গর্বিত। এমনসব বাঙালি ভাই-বোনদের অনুরোধ করবো সোশ্যাল মিডিয়াতে আজকে আমাদের বিরুদ্ধে যেভাবে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে তার প্রতিরোধের ব্যবস্থা করো। আজকে একজন ভারতীয় বাঙালিকে বাংলাদেশি বলে অপমান করে বাংলাদেশে পাঠানোর কথা বলছে। এ সাহস তারা কোথা থেকে পাচ্ছে। আপনারা যদি সত্যিই বাঙালি হিসেবে নিজে গর্ববোধ করেন তাহলে বাঙালির স্বার্থে মুখোশধারী মানুষদের বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। নিজের মেরুদণ্ডকে শক্ত করুন। আজকে একটি বাংলা গানের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো মানে বাঙালি জাতিসত্বাকে আঘাত করা। যারা বাঙালির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে তাদের আপনারা ছিঁড়ে ফেলার ব্যবস্থা করুন। নাহলে হয়তো কালকে আপনার ওপরও আঘাত নেমে আসতে পারে।"



প্রতিবেদন- লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক

No comments