Header Ads

ইহলোক ছেড়ে পরলোকে পাড়ি দিলেন বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী ভীম চন্দ্র জানা


ইহলোক ছেড়ে পরলোকে পাড়ি দিলেন বিস্তৃত দেশপ্রেমিক ভীম চন্দ্র জানা। যার প্রয়াণের খবর বেশিরভাগ বাঙালির কাছে অজানা। তিনি নিঃশব্দে বিদায় নিলেন। দেশকে স্বাধীনতা দান করার পিছনে যে মানুষটি কাজ করে গেলেন। স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও অসংখ্য বাঙালির কাছে তিনি বিস্তৃতির অন্ধকারেই থেকে গেলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামী ভীম চন্দ্র জানা যিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সাথে কাজ করেছেন। তিনি স্বদেশী আন্দোলনের সাথে বিশেষভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৩০ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে স্বদেশী আন্দোলনের জন্য গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি।  


ভীম চন্দ্র জানা হাওড়ার শ্যামপুরের শশাটিতে নিজস্ব ভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০৭ বছর। তিনি তাঁর সমসাময়িক বাঙালি দেশপ্রেমিকদের কাছে পরিচিত ছিলেন নানু নামে৷ ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করার পর ভারত সরকার তাঁকে পুরস্কৃত করেছিল৷ গত শুক্রবার রাতে জীবনদীপ নিভে গেল তাঁর। ঐদিন রাতে ভীম চন্দ্র জানার পুত্র অশোক জানা তাঁকে দাহ করেন। সেখানকার স্থানীয় বিধায়কদেরও উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে দাহকার্যের সময়। শশাটি অঞ্চলের মানুষেরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিদায় দেয়। 

তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সেই কারণে ব্রিটিশদের নজর সর্বদা থাকতো তাঁর দিকে। পরপর তিনবার তিনি জেলে খেটেছেন। একবার হাওড়ার জাগচা পুলিশ স্টেশনে তাঁকে বন্দী করা হয়, সেখানে একইসাথে বন্দী ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশও। এই জেলের মধ্যেই চিত্তরঞ্জন দাশের সাথে তাঁর আলাপ হয়। তিনি জাগচা থানা বাদেও হিজলি ডিটেনশন ক্যাম্প ও আলিপুর জেলেও দিন কাটিয়েছেন৷ তাঁর স্ত্রী বাসন্তী দেবীর অনুপ্রেরণায় তিনি স্বদেশী আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন। 

শশাটি গ্রামে জড়িয়ে রয়েছে ভীম চন্দ্র জানার অজস্র স্মৃতি। এই অঞ্চলেই তাঁর জন্ম ও মৃত্যু দুটোই হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে গ্রামবাসীদের মনে কিছুটা হলেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে যাই হোক জন্মিলে মরিতে হবে, অমরকে কথা করে। সকল মানুষকেই একা একা চলে যেতে হবে এই পৃথিবী ছেড়ে। তিনি মারা গেলেও স্মরণীয় হয়ে থাকবেন দেশবাসীর মনে। কিন্তু আমাদের একটাই সংকট যে তাঁকে বেশিরভাগ মানুষই চেনেন না। তাই তাঁকে চেনানোর দায়িত্ব নিতে হবে সকল বাঙালিকে। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments