Header Ads

"লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন"। আপনি কী জানেন গৌরী সেন কে?


আমরা বিশেষ করে বাঙালিরা এক বিখ্যাত প্রবাদ বাক্য ব্যবহার করে থাকি-"লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন"। সাধারণত কােনো গরীব, দুঃস্থ মানুষের যখন অর্থের প্রয়োজন হয় তখন অর্থদাতার নাম হিসেবে আমাদের কােনো এক ব্যক্তি যাঁর নাম কিনা "গৌরী সেন" তাঁর কথাই মনে পড়ে। অথচ, আমরা কি জানি গৌরী সেন কে? আর অর্থের প্রয়োজনের কথা উঠলেই তাঁর কথাই বা মনে হয় কেন? চলুন পাঠকবন্ধু, আমরা এই প্রতিবেদনে জেনে নিই গৌরী সেন সম্পর্কে দু-চার কথা। 


গৌরী সেনের জীবীতকাল সপ্তদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে ছিল। তাঁর জন্ম হয় ১৫৮০ সালে হুগলী জেলার বালিতে। আবার অনেকের মতে তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে জন্মেছিলেন। তাঁর পিতার নাম নন্দরাম সেন। গৌরী সেন ছিলেন সুবর্ণ বণিক সম্প্রদায়ের মানুষ এবং তাঁর আমদানি ও রপ্তানির বংশগত ব্যবসা ছিল। সেই ব্যবসা থেকে তাঁর প্রচুর অর্থলাভ হয় আর এর ফলে তিনি সামান্য ব্যবসায়ী থেকে হয়ে ওঠেন এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। প্রচুর অর্থলাভের ফলে তিনি শুধু কলকাতার নয় সারা বাংলার ধনী সমাজে প্রতিষ্ঠালাভ করেছিলেন। এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ধনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সাথে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক কিংবদন্তি দাতা। দেনায় ডুবে রয়েছে কিংবা রাজদ্বারে বা রাজার দরবারে বিপদে রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তিনি দুহাত খোলা রেখে ও এক উদারতার সাথে সাহায্য করতেন। তাঁর সাহায্যলাভ করে অনেক গরীব ব্যক্তি ধন্য হয়েছিল আবার অনেকেই দেনার দায় থেকে মুক্তি পেয়েছিল। সফল ব্যবসার দরুন পর্তুগীজদের সাথে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল এবং সেই সুসম্পর্কের খাতিরে ১৫৯৯ সালে বিখ্যাত ব্যান্ডেল চার্চ নির্মাণের জন্যে তিনি নিজের জমি প্রদান করেছিলেন। অনেকেই বলে থাকেন যে,গৌরী সেন হুগলী জেলার গৌরীশঙ্কর মন্দিরও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 

তাঁর মৃত্যু হয় ১৬৬৭ সালে।

আজ থেকে তিনশো-চারশো বছর আগে এক বিখ্যাত ব্যবসায়ী ও এক কিংবদন্তি দাতা হিসেবে বাংলার সমাজে প্রতিষ্ঠালাভ করেন। গৌরী সেন আর এতটাই যে তাঁকে নিয়ে প্রবাদ বাক্য তৈরি হয়ে যায় যা আজও বাঙালির মুখে মুখে ঘােরে।

No comments