Header Ads

একটি বাচ্চা ছেলের প্রশ্নের কাছে আজকের আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার নির্বিকার হয়ে ওঠার গল্প 'সেই ছেলেটা'


পরিচালক দেব গোপাল মন্ডলের ছবি 'সেই ছেলেটা'। যে ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে এই সময়ের কথা। যে সময়ে দাঁড়িয়ে সারা পৃথিবী ফাইভ জি পরিষেবা, ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, টুইটার, অনলাইন শপিং ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম শিখরে পৌঁছে যাবার তৃপ্তিতে মত্ত। যখন আমাদের দেশে ক্রমশ অনাহার আর অপুষ্টিতে ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে। যখন আমাদের রাষ্ট্র বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে, পাঁচ টাকায় ইন্টারনেট নিশ্চিত করছে এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পরিকল্পনা করছে। এমতাবস্থায় প্রান্তিক ভারতের একজন বাচ্চা দুমুঠো ভাতের জন্য কাজের সন্ধানে শহরে আসে। সেখানে ছেলেটি আবিষ্কার করে তার গ্রামের এক উচ্চশিক্ষিত দাদা রোজগারের জন্য ব্রাহ্মণ সেজে বাড়ি বাড়ি পুজো করে, মা-বাবা মারা যাওয়ার পর ধরা পড়ে যায় বলে সে এখন ভিক্ষে করছে। গ্রাম থেকে উঠে আসা অসহায় ছেলেটি নগরজীবন আবিষ্কার করে অবাক হয়ে যেতে থাকে। পুরো পৃথিবীকে অন্য চোখে দেখতে থাকে। যে বাড়িতে সে কাজ করে সেই বাড়িতে ভালো ভালো খাবার পায়, টাকা পয়সা পায়, ভালোবাসাও পায়। কিন্তু খেতে বসার সময় সে প্রত্যহ কাঁদতে থাকে৷



সে আরো বেশি অবাক হয় যখন জানতে পারে সময়টা এতোটাই এগিয়ে গেছে যে কেবল বাড়ির নাম ঠিকানা দিলেই বাড়িতে চাহিদা মতো গরম গরম খাবার পৌঁছে যাবে মাত্র ত্রিশ মিনিটে। তার ভেতর এক অদ্ভুত অনুরনন শুরু হয়। সে ভাবতে থাকে এই আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সাহায্যে কীভাবে তার উপার্জন, খেতে না পারা বাড়তি খাবার গ্রামে পৌঁছে দেবে তার অর্দ্ধভুক্ত মা-বাবা, ভাই-বোনের কাছে? এই সহজ সরল প্রশ্নের কাছে অসহায় ও নির্বিকার থাকে আজকের আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। 

বাংলাদেশের কবি আসরাফ সিদ্দিকী'র কবিতার অনুপ্রেরণায় সাজানো হয়েছে ছবির চিত্রনাট্য। এই ছবিটি এখন পর্যন্ত দুটো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়েছে। 'টেগোর ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল' ও 'বিয়ন্ড আর্থ' ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে' চলেছে এই ছবি। আরো অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ছবিটি পাঠানোর পরিকল্পনাও চলছে। এই ছবিটি প্রযোজনা করেছেন মুর সালিম। 



'সেই ছেলেটা' ছবিতে অভিনয় করেছেন নীল সরকার, তুলিকা বসু, সুমিত সমাদ্দার, মিঠু চক্রবর্তী, অরিজিৎ সেন, অনিকেত কর, অর্নব নাথ, সিদ্ধার্থ দে, নীলাক্ষী সরকার, রাণা মুখার্জি, অরিজিৎ বসু, সন্তু মণ্ডল, শঙ্খদীপ, প্রসেনজিৎ মণ্ডল ও বালি দ্বীপের গ্রামবাসীরা। এস.বি.এস এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে ছবিটি। আবহ সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন মেঘ ব্যানার্জী। এ ছবির চিত্রগ্রাহক তনয় রায়। ছবিটি সম্পাদনা করেছেন উজ্জ্বল মুখার্জী। ছবির সহকারী পরিচালক সিদ্ধার্থ দে ও কৃষ্ণেন্দু ঘোষ। ছবির সহকারী চিত্রগ্রাহক অরিজিৎ বোস। ছবিটির সৃজনশীল পরিচালনা করেছেন সিদ্ধার্থ শংকর। ছবির প্রযোজনা নিয়ন্ত্রণ করেছেন সন্তু মণ্ডল। ছবির রূপসজ্জা বানিয়েছেন রাকেশ নাথ। ছবিতে আলো দিয়েছেন শ্যাম বাবানি। বিশেষ সহযোগীতায় ছিলেন রানা মুখোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ মণ্ডল, পার্থ সুর ও শঙ্খদীপ।  
          
প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments