Header Ads

বাউল, লোকশিল্প, লোকগীতি, লোকনৃত্য ও বাঙালীয়ানার খোঁজ পেতে পাড়ি দিন শান্তিনিকেতন পৌষমেলা


বাংলায় বারো মাসে তেরো পার্বন হয়। যা বাংলার এক ঐতিহ্য। শুধু দুর্গাপুজোর মতো বড় উৎসবই নয় বাংলার মেলাগুলিও আপনাকে মুগ্ধ করতে পারে। বড় বড় মেলাগুলির মধ্যে অন্যতম হল গঙ্গাসাগর মেলা, জয়দেব মেলা ও শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা। এই মেলা চালু করেছিলেন ঠাকুর পরিবার তথা ব্রাহ্মসমাজের কয়েকজন সদস্য।


প্রত্যেক বছর ৭ই পৌষ থেকে এই মেলা শুরু হয়। এমনিতেই রবীন্দ্রভূমি তার উপর মেলার একের পর এক আকর্ষণ যে-কোনো বাঙালির মনে বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ সঞ্চার করতে পারে এই মেলা। বর্তমানে এটি একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেলা। এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হল বাউল, লোকনৃত্য। সারা বিশ্ব থেকে লোক আসেন এই উৎসবে। শান্তিনিকেতন মেলা প্রাঙ্গনের এই উৎসব যেকোনো মানুষের মন ভরিয়ে দিতে পারে। বাংলার সমস্ত ঐতিহ্যপূর্ণ লোকনৃত্য, বাউল সাধকদের সমাবেশ, উপজাতি নৃত্য, বাংলার লোকশিল্প সব কিছু একত্রে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় এই মেলায়। সারা বাংলা থেকেই বাউল সাধকরা এসে এখানে গান গেয়ে মুগ্ধ করেন সকলকে যা এই মেলার একটি অন্যতম আকর্ষণ।

১৮৯৪ সাল থেকেই এই মেলা হয়ে আসছে ঠাকুর বাড়ির হাত ধরে। ১৮৯৪ সালে ব্রাহ্মমন্দিরের ২৫ বছর উপলক্ষে মন্দিরের উল্টো দিকে একটি ছোট মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মেলাই আজকের পৌষ মেলা। অর্থাৎ এই মেলা ১২৫ বছর হতে চললো। বর্তমানে ৭ দিন ধরে এই মেলা হয়ে থাকে। বিশ্বভারতীর ছাত্র-ছাত্রীরাও এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। 


এই মেলায় হস্তশিল্পীদের দ্বারা নির্মিত কাঠ, পোড়ামাটি, পাথর, উল, চিনেমাটি, বিভিন্ন রকম ধাতু, কার্পেট, বাঁশ, পাটের তৈরি বিভিন্ন রকমের হাজার রকমের দোকান এত সংখ্যক থাকে যে আপনি অবাক হবেনই। জামা কাপড়, তাঁতের শাড়ি, শাল চাদর সব কিছুই পাবেন এখানে। এখানের আর একটি আকর্ষণ হল চড়ক, বাচ্চাদের বিভিন্ন রকম চড়ক থেকে নাগরদোলা কী থাকেনা এখানে। বিভিন্ন রকম বাংলার মিষ্টির সম্ভারও খাদ্যরসিক বাঙালির জন্য একটা আকর্ষণ।

শীতকালে বনভোজন, ভ্রমণ, বইমেলা, মকরসংক্রান্তির মতো শান্তিনিকেতন পৌষমেলার সাথে দীর্ঘ বছর ধরে মিশে আছে বাঙালি আবেগ। কবিগুরুর মাটিতে এসে সকলে পূণ্য সঞ্চয় করুন আর মেলা উপভোগ করুন সাহিত্য জগতের মানুষদের কাছে তো কবিগুরু তো ঠাকুর-ই। আর মাত্র কয়েকদিন আছে এই মেলার, কালই আপনারা চাইলে ঘুরে আসতে পারেন।

No comments