Header Ads

ফুটপাথ যখন হয়ে ওঠে চিত্র গ্যালারি। এক অভিনব চিত্র প্রদর্শনী দেখলো তিলোত্তমা


রাস্তার ধারে ছবির মেলা। এক অভিনব চিত্র প্রদর্শনী দেখলো তিলোত্তমা কলকাতা। এর আগে এমন চিত্র প্রদর্শনী কলকাতার মানুষ কখনও দেখেননি। গত ২৩ শে ডিসেম্বর ও ২৪ শে ডিসেম্বর 'ছবিওয়ালা' গোষ্ঠীর উদ্যোগে আয়োজন করা হয় স্ট্রিট আর্ট এক্সিবিশনের। চাকচিক্যপনা কিংবা আভিজাত্য সবকিছুকে দূরে সরিয়ে ভিন্ন উপায়ে অনুষ্ঠিত হয় প্রদর্শনীটি। মহানগরী কলকাতার মোহরকুঞ্জের বাইরের ফুটপাথটি দুদিনের জন্য সেজে ওঠে নানাবিধ ছবির আঙিনায়।  


মানুষের মনে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে ছবি প্রদর্শনী মানেই ঝাঁ চকচকে স্থানে ছবি প্রদর্শন। যার মিথকে সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে দিল 'ছবিওয়ালা'। ফুটপাথের ধারে এমন আকর্ষণীয় চিত্র প্রদর্শনী ঘিরে উপচে পড়লো জনসমাগম। আগ্রহ সহকারে সাধারণ মানুষ মন দিয়ে দর্শন করেন প্রতিটি ছবি। প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিলেন মোট চৌদ্দজন শিল্পী। চিন্ময় মুখোপাধ্যায়, তৌসিফ হক, সৌরভ মিত্র, বিপ্লব ধর, শুভ্রজ্যোতি ভট্টাচার্য্য, পারিজাত ব্যানার্জী, শুভঙ্কর প্রামাণিক, সৌমিত্র মন্ডল, ঋজু হালদার, অভিষেক হালদার, অনুপ মিদ্যা, ঋষিত দত্ত ও চুমকি ভট্টাচার্য্য প্রমুখরা। 

শিল্পীর তুলির টানে ও পেন্সিলের ছোঁয়ায় মানুষের জীবনচিত্র, নিখুঁত বাস্তবানুগ থেকে শুরু করে বিমূর্তশৈলী প্রভৃতি উঠে এসেছে চিত্রপটে। প্রদর্শনীর বিষয় বৈচিত্র্য বাড়িয়ে দেয় চোখের খিদেকে। কোথাও মানসিক যন্ত্রণার গল্প তো কোথাও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ছবি উঁকি দিয়েছিল ফুটপাথের রেলিং এ। সাধারণ মানুষের মধ্যেও শিল্পের প্রতি যে একটা সম্মান লুকিয়ে রয়েছে। সেদিনের চিত্র প্রদর্শনী তারই জানান দেয়। 


স্ট্রিট আর্ট এক্সিবিশনের ব্যাপারে শিল্পী সৌরভ মিত্র বলেন - "আর্ট কলেজের প্রথাগত শিক্ষা ছাড়া শিল্পী হওয়া যায় না, এই বদ্ধ চিন্তাভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করেই আমি আর বিপ্লব ধর মিলে 'ছবিওয়ালা' দলটা তৈরি করি। যেখানে সদস্যরা সকলেই স্বশিক্ষিত। গ্যালারি গোল্ডে আয়োজিত প্রথম প্রদর্শনীতেই ব্যাপক সাড়া পাই মানুষের কাছ থেকে। আগামী ফেব্রুয়ারিতেও ওখানে প্রদর্শনী আছে। কিন্তু গ্যালারিতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাইনি৷ লক্ষ্য করেছি সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশিরভাগই শিল্প সংক্রান্ত ব্যাপারে আগ্রহী নন। এর কারণ খুঁজতে বেরিয়েছিলাম আমরা। যারা নিয়মিত গ্যালারিতে আসতে পারেন না, তাদের কাছেই গ্যালারিকে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলাম।'

মানুষের প্রবল উত্তেজনা দেখে চিত্র প্রদর্শনীর ওপর ভরসা পেয়েছেন অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত সকল শিল্পীবৃন্দরা। সকল মানুষের সাথে কথা বলে তারা জানতে পেরেছেন মানুষ কী ধরণের ছবি পছন্দ করতে চাইছেন। মানুষজনের দারুণ উৎসাহ দেখে তারা প্রত্যন্ত গ্রাম গ্রামান্তরেও প্রদর্শনীর আয়োজন করতে চায়। তাদের ইচ্ছে বাংলার প্রত্যেক জেলাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া। 
             
প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments