Header Ads

বাংলা পক্ষ আয়োজিত একটি বিশেষ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বার্তা দিলেন বরেণ্য সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

     
গত পয়লা ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতার সূর্য সেন মঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো বাংলা পক্ষ আয়োজিত একটি বিশেষ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলা পক্ষের অন্তর্ভুক্ত ৯৫ পল্লীর সদস্যদের উদ্দ্যোগে সাফল্যমন্ডিত হলো অনুষ্ঠানটি। প্রবল লোক সমাগম লক্ষ্য করা যায় এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাতে। অনুষ্ঠানের মঞ্চকে আলোকিত করতে উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। 


বাংলার সাহিত্যের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব হলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। যার লেখা গল্প, উপন্যাস বাঙালি পাঠকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাঁর লেখা গল্প ও উপন্যাস নিয়ে অসংখ্য চলচ্চিত্রও নির্মাণ হয়েছে। তিনি স্বতন্ত্র ভাবনায় প্রতিটি সৃষ্টি উপহার দিয়ে থাকেন আমাদের। সাহিত্যিক ছাড়াও একজন সচেতন বাঙালি হিসেবেও তাঁর নাম উল্লেখ করা যায়। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদকে মনপ্রাণে সমর্থন করেন। 

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মতো এমন একজন নক্ষত্রের আগমনে মঞ্চের ঝলমলে পরিবেশ যেন অন্য চেহারা নিয়েছিল। সন্ধ্যার নিস্তব্ধতা, ঝিঁঝিঁর ডাক, ঠান্ডা হাওয়া, শীতের আমেজে মনোমুগ্ধকর এমন সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় প্রতিভাবান মানুষদের উপস্থিতি বয়ে নিয়ে এসেছিল আলাদা অনুভূতি। বাংলা, বাঙালি ও বাঙালিয়ানার মধ্যে যে হাজারো সুখ ও শান্তি রয়েছে তারই পূর্বাভাস দিয়ে গেল বাংলা পক্ষের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

গানে-গল্পে-আলোচনায় বাঙালি জাতীয়তাবাদের বার্তাকে সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া হয় এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। অসংখ্য মানুষ ধৈর্য্য সহকারে দর্শন করেন পুরো অনুষ্ঠান। বাংলা পক্ষের বিশেষ নেতৃত্বরা বর্তমানে বাঙালির অবস্থার কথা, বাঙালির মধ্যে জাতীয়তাবাদ ঠিক কতটা প্রয়োজন, বাঙালিকে কীভাবে কেন্দ্র সরকারের তরফে কোণঠাসা করা হচ্ছে, বাঙালি কীভাবে বাংলার মাটিতে নিজের অধিকার হারাচ্ছে, কীভাবে বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে প্রভৃতি বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। 

মঞ্চে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক মাইতি, সুলগ্না দাশগুপ্ত ও প্রবাল চক্রবর্তী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আগত বেশ কিছু পেশাদার শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এবং সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বাঙালি সমাজের উদ্দেশ্যে জাতীয়তাবাদের পবিত্র লক্ষ্যের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চের আসন গ্রহণ করেন তিনি৷                                                                                                                                 
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তাঁর শীর্ষক আলোচনার মধ্য দিয়ে তুলে ধরলেন কীভাবে বর্তমান প্রজন্মের শিশুরা হীনমন্যতায় ভুগছে। এ প্রজন্মের বাঙালি শিশুরা চেষ্টা করছে হিন্দিতে কথা বলতে। ইংরেজিতে কথা বলতে না পারলে হিন্দিতে কথা বলে নাকি সেই ঘাটতি পূরণ করে দেওয়া যায় এমনই কিছু মন্ত্র তাদের অভিভাবকেরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন তাদেরকে। এই পটভূমিকাতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রত্যাবর্তনকে তিনি সাধুবাদ জানান। আলোচনার শেষে তিনি বলেন যে "বাঙালির অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন তখনই সফল হবে যখন আমাদের ভেতরে বাংলার হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য একটা অস্মিতা জেগে উঠবে"। অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটানো হয় 'ধন ধান্য পুষ্পে ভরা' গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে। এই অনুষ্ঠানে চোখের পড়ার মতো জনসমাগম প্রমাণ দেয় যে বাঙালির হৃতগৌরব আবারো ফিরবে। 

                                     
প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments