Header Ads

"আপনি কেন প্রযোজনা করছেন, সেটা সবার আগে প্রযোজক কে জানতে হবে।" মুখোমুখি আড্ডাতে প্রযোজক অমিত আচায্য



রবিবারের সকাল। ছুটির মরসুমে সকলের ছুটি কাটানোর ব্যস্ততা তুঙ্গে। এমন সময় প্রযোজক অমিত আচার্যের সাথে জমিয়ে আড্ডা লিটারেসি প্যারাডাইসের সাথে। 'কিছু না বলা কথা' ছবির প্রযোজক অমিত আচার্য। যিনি বর্তমানে প্রযোজনা সূত্রে মুম্বাইতে রয়েছেন। তারই একটি সাক্ষাৎকারের একঝলক উপস্থাপন করলাম আপনাদের জন্য।



লিটারেসি প্যারাডাইস- আপনি তো প্রডিউসার হিসেবে মুম্বাইতে কাজ করছেন। প্রযোজনা সূত্রে কত বছর আপনি এই শহরে রয়েছেন?

অমিত আচার্য্য- ছয় বছর বা তারও বেশি সাত কিংবা আট বছর হবে হয়তো। 

লিটারেসি প্যারাডাইস- পেশা হিসেবে প্রযোজনাকেই কেন আপনি বেছে নিলেন?

অমিত আচার্য্য- মূলত আমার একটা আলাদা ব্যবসা রয়েছে৷ সিনেমার প্রতি এমনিতেই প্রচুর ভালোবাসা জড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে বাংলা ছবির প্রতি একটা আলাদা ভালোবাসা ছিল। তারপর ভাবলাম যে কী করবো৷ (মৃদু হেসে) এমনিতেই কষ্ট করে সেই মুহূর্তে ফিল্ম ডিরেক্টর হওয়ার ইচ্ছেই ছিলনা আমার। আর ব্যবসাতেও মোটামুটি সফল ৷ তখন ভাবলাম যে ফিল্ম প্রযোজনাটা করা যেতে পারে৷ আমি আগে কখনোই ভাবিনি যে নিয়মিত ছবি প্রযোজনা করবো ৷ প্রথমে কেবল একটি ছবি করার পরিকল্পনা করেছিলাম। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নিজের ভাবনার পরিবর্তন করেছি। নিজের চেষ্টায় একটা ফিল্ম হাউসকে দাঁড় করিয়েছি। এখন চেষ্টা করছি অনেক ভালো ভালো ছবি প্রযোজনা করতে।     
               
লিটারেসি প্যারাডাইস- আপনি হিন্দি ছবি প্রযোজনা করছেন। বাংলা সিনেমাতে আপনাকে প্রযোজনা করতে কবে দেখা যাবে?

অমিত আচার্য্য- বাংলাতে আমার প্রযোজিত একটা ছবি হয়েছে। যেটা অনেক দিন আগেই মুক্তি পেয়েছে। ২০১৭ সালের শেষের দিকে ছবিটি মুক্তি পায়। ছবিটির নাম ছিল 'কিছু না বলা কবিতা'। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন পরিচালক সায়ন বসু। আরেকটি বাংলা ছবি করছি যার ষাট শতাংশ শ্যুটিং আমরা কমপ্লিট করে ফেলেছি৷ এই মুহূর্তে ঐ ছবিটি রিভিল করা যাচ্ছেনা কাস্টিং এর কিছু ব্যাপারের জন্য। এই ছবিটিও পরিচালনা করছেন সায়ন বসু৷ আগামী বছরে ছবিটি মুক্তি পাবে।  
           
লিটারেসি প্যারাডাইস- কিছু না বলা কথা ছবিটি কতটা সাফল্য পেয়েছে?

অমিত আচার্য্য-আমার প্রথম প্রযোজিত ছবি হিসেবে নিজের কাছে ছবিটি বানিয়ে খুবই ভালো লেগেছে। সফলতার দিক থেকে ছবিটি অতোটা বিশাল কিছু না হলেও আমার নিজের দিক থেকে প্রথম প্রযোজনা হিসেবে ছবিটি অনেকটা সফল। প্রযোজক হিসেবে যতটুকু এ ছবিটিতে দিতে পেরেছি তার জন্য আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট। 


লিটারেসি প্যারাডাইস- একজন সফল প্রযোজক হতে গেলে কোন বিষয়গুলোতে বেশি জোর দেওয়ার দরকার বলে আপনার মনে হয়?

অমিত আচার্য্য- আমার ব্যক্তিগত ধারণা যে একজন প্রযোজককেও ভালো ছবি সম্পর্কে বুঝতে হয়। অবশ্যই মার্কেটিং, বিজনেস সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ও জানতে হবে৷ আপনি কেন প্রযোজনা করছেন সেই বিষয়টাও সবার আগে জানতে হবে। এমন নয় যে চলো আমিও প্রযোজনা করি। একজন প্রযোজককে ভালো গল্প, মার্কেটিং সবকিছু মাথায় রাখতে হবে৷ প্রথম কথা হলো ছবি বুঝে ছবি করতে হবে৷ একজন পরিচালকের কথা অনুযায়ী চলো প্রযোজনা করি এসব কিন্তু নয়৷ তাহলে বিজেনেসের ক্ষেত্রে সেই প্রযোজক দীর্ঘস্থায়ী হয়না।  

লিটারেসি প্যারাডাইস-সাউথের ইন্ডাস্ট্রির সাথে আপনার কী ছবি প্রযোজনা করার ইচ্ছে কখনো রয়েছে?

অমিত আচার্য্য- ইচ্ছে তো আছেই। জানিনা হবে কিনা। আমি তো ওখানে কানেকশনও লাগিয়েছি৷ এরপর দেখা যাক কী হয়। আপাতত আমি হিন্দি ফিচারটা নিয়েই ব্যস্ত রয়েছি। ওটা নিয়ে খুব আশাবাদীও আমি৷ কারণ আমার প্রযোজনা সংস্থা থেকে এরকম একটা বড়ো প্রজেক্ট আসছে। 
        
লিটারেসি প্যারাডাইস- বর্তমানে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রযোজকদের অবস্থা কী রকম?

অমিত আচার্য্য- এই অর্থে যদি প্রযোজকদের কথা ধরি তাহলে দেখা যায় প্রতি বছর ছবির সংখ্যা বাড়ছে। তার মানে ধরে নিতে হবে প্রযোজকদের অবস্থা একদমই খারাপ নয়। আমাদের বাংলাতেও মাসে মাসে কত কত ছবি মুক্তি পাচ্ছে । ছবির সংখ্যার নিরিখে প্রযোজকদের অবস্থা সত্যিই ভালো। এরপর অন্যেরও কিছু ব্যক্তিগত মতামত থাকতে পারে৷ দেখতে হবে সে কোন চোখে প্রযোজকদের অবস্থাটা বিচার করছে। মার্কেটিং এরও একটা ব্যাপার রয়েছে। সে কীভাবে মার্কেটিং করে ছবিটি রিলিজ করছে তার একটা ব্যাপার আছে। তারপর এখনকার দিনে ডিজিটাল মিডিয়াও এতোটাই অ্যাক্টিভ যে শুধু হলের অডিয়েন্সকে টার্গেট রেখেই ছবি হচ্ছেনা আর। ডিজিটাল মিডিয়ার জন্যেও এখন ছবি বানানো হচ্ছে।   

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments