Header Ads

বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী 'শান্তিনিকেতন প্রেস'


বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে ফরমানি জারি। বন্ধ হতে চলেছে কবিগুরুর স্বপ্নের 'শান্তিনিকেতন প্রেস'। দীর্ঘ নয় বা দশমাসে কোন কিছুই প্রকাশিত হয়নি এই প্রেস সেন্টার থেকে। 'শান্তিনিকেতন প্রেস' কে বাঁচিয়ে রাখার মতো কোনো সাহায্য প্রদান করা হয়নি সরকারি তরফে। তাই কেন্দ্র সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেস সেন্টারটি বন্ধ করে দেবার। 


'শান্তিনিকেতন প্রেস' এর সাথে জড়িয়ে আছে কত শত ঐতিহাসিক নিদর্শন। ১৯১৭ সালের ৮ ই জানুয়ারি আমেরিকার অলিভার থিয়েটারে জাতীয়তাবাদ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বক্তব্য রাখেন।  লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর এমন অনবদ্য বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে একটি বই ছাপার যন্ত্র উপহার দেন কবিগুরুকে। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাঙালিদের লেখা ছাপানোর উদ্দেশ্যে 'শান্তিনিকেতন প্রেস' প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তা বিশ্বভারতীর আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়। 

'শান্তিনিকেতন প্রেস' এর এক বৃহত্তর গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত এই প্রেস সেন্টার বাঙালির কাছে এক অমূল্য সম্পদ। যার সংরক্ষণের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। এই প্রেসকে নিয়ে কবিগুরু অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন৷ এই প্রেসের মাধ্যমে তিনি বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করেছিলেন। আজকে সেই প্রেস আর থাকবে না৷ ফরমান জারি করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। 

গত দুই বছর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা কবিতা সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার কথা তুলেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের একজন নেতা। তিনি নাকি জাতীয়তাবাদের বিরোধী ছিলেন। এমন সব কুমন্তব্য করা হয়েছিল বিশ্বকবিকে নিয়ে৷ যার পরিপ্রেক্ষিতে বাঙালিরা জোর বিতর্ক করেছিল। অজস্র বাঙালি প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছিল। তাঁর সৃষ্টিকে বাঙালি বাঁচিয়ে রাখতে চাইছে প্রাণভরে। অথচ কেন্দ্রের সীমাহীন রাজনীতি পিছু ছাড়ছে না রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। 

পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ সরকার শত চেষ্টা করেও 'শান্তনিকেতন প্রেস' বন্ধ করতে পারেনি। রবীন্দ্রনাথের জন্মের একশো বছর অতিক্রম হওয়ার পরে আজকের স্বাধীন ভারতে কেন্দ্র সরকার সিদ্ধান্ত নিল এই প্রেসকে বন্ধ করার। ঐতিহাসিক মূল্যের যেন কোনো দাম নেই। তাদের কাছে যদি ঐতিহাসিক মূল্যের গুরুত্ব থাকতো তাহলে নিশ্চয় 'শান্তিনিকেতন প্রেস' সংরক্ষণের ব্যবস্থা হয়তো তারা করতো ৷     

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments