Header Ads

চিনে নিন পথশিশুদের ত্রাতা বাংলার 'ফুডম্যান' কে


স্পাইডার ম্যান, সুপার ম্যান, ব্যাট ম্যানের কথা আমরা সকলেই শুনেছি। কিন্তু ফুডম্যানের কথা কী শুনেছেন? না শুনে থাকলে এই প্রতিবেদনটি মন দিয়ে পড়ুন। এই ফুডম্যান একজন বঙ্গসন্তান। নাম তাঁর চন্দ্র শেখর কুন্ডু। বাংলা মায়ের তিনি সুযোগ্য সন্তান। তাঁকে পথশিশুদের ত্রাতাও বলা চলে। তাঁর মহান উদ্যোগ বাংলার ঘরে আলো জ্বালিয়েছে৷ 



হোটেল বা কোনো আচার-অনুষ্ঠানে বেড়ে যাওয়া খাবার সংগ্রহ করে আসানশোলের বাসিন্দা চন্দ্র শেখর কুন্ডু সেই খাবার তুলে দেন পথশিশুদের মুখে। তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'ফিড' প্রতিদিন হাজার হাজার পথশিশুর মুখে দু'বেলা দু'মুঠো খাবার তুলে দেয়। সাফল্যের সঙ্গে তাঁর সংস্থা 'ফিড' একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করে চলেছে। তিনি পথশিশুদের মুখে হাসি এনেছেন। 

'ফিড' গড়ে ওঠার পিছনে একটা লম্বা গল্প রয়েছে। চন্দ্র শেখর কুন্ডু ছেলের জন্মদিনে বেড়ে যাওয়া খাবার ডাস্টবিনে ফেলে দেন। এরপর তিনি দেখেন ঐ উচ্ছিষ্ট খাবার নোংরা ডাস্টবিনে বসে দুটো পথশিশু খাচ্ছে। এই দৃশ্যটি রীতিমতো চন্দ্র শেখর কুন্ডুর চোখে জল এনে দেয়। সেই থেকে তিনি স্থির করেন পথশিশুদের জন্য কিছু একটা করতে হবে। শুরু হলো নতুন স্বপ্নের ভোর। হোটেল বা আচার-অনুষ্ঠানের বেড়ে যাওয়া খাবার তিনি সংগ্রহ করতে লাগলেন চারিদিক থেকে। সেই খাবার তুলে দেওয়া হতে লাগলো পথশিশুদের। এমন মহান উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে এগিয়ে আসেন অনেক মানুষ। সকলের সাহায্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন 'ফিড'। অনাহার দূরীকরণের তিনি ক্রমাগত লড়াই করে যাচ্ছেন। এই লড়াই আজ অনেকটা সফল। 

স্বচক্ষে দেখা একটি দৃশ্যই বদলে দেয় তাঁর জীবনের মোড়। চন্দ্র শেখর কুন্ডুর সাথে অনেকাংশে মিল রয়েছে মানিক বন্দোপাধ্যায় রচিত গল্প 'কে বাঁচায় কে বাঁচে'র। যে গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় আপিস যাওয়ার পথে প্রথম মৃত্যু দেখে। অনাহারে মৃত্যু। যে মৃত্যু তাঁকে ভাবিয়ে তোলে। চাকরির মাইনের টাকা রিলিফ ফান্ডে জমিয়ে আর্তপীড়িত মানুষদের জন্য টাকা জমাতে থাকেন। একটা মৃত্যু তাঁর জীবন বদলে দেয়। গল্পের সাথে চন্দ্র শেখর কুন্ডুর একটাই তফাৎ গল্পের শেষ দৃশ্যের। গল্পের অন্তিমে দেখা যায় মৃত্যুঞ্জয় লঙ্গরখানাতে ময়লা জামাকাপড় পরে আর্তপীড়িতদের জীবন বেছে নেয়। আর চন্দ্র শেখর কুন্ডু তাঁর স্বপ্ন সত্যি করতে পেরেছে। 

প্রতিদিন কত শিশু অনাহারে দিন কাটায়। তাদের মুখচেয়ে কেউ সচরাচর এগিয়ে আসতে চায়না। অথচ চন্দ্র শেখর কুন্ডু এদের নিজের সন্তানের মতো দায়িত্ব সহকারে দু'বেলা অন্ন তুলে দেন। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। তিনি বাংলা ও বাঙালির গর্ব। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে                                                                                                          

No comments