Header Ads

রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরি সমগ্র বাঙালি জাতির এক কলঙ্কিত অধ্যায়


এশিয়ার প্রথম নোবেলজয়ী সাহিত্যিক বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নোবেল জয়ের মাধ্যমে সমগ্র বাঙালি জাতির মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন তিনি। বাঙালি জাতি আজও তাঁর নোবেল জয় নিয়ে গর্ব করেন। 'গীতাঞ্জলি' কাব্যের জন্য ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি নোবেল পান। আজকে তাঁর নোবেল জয় ইতিহাস। 


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কারটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পর রাখা হয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র সংগ্রহশালাতে। বহু বছর ধরে সংগ্রহীত ছিল নোবেল পুরস্কারটি। এরপর ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ শে মার্চ বাঙালির গর্বের নোবেল পুরস্কারটি চুরি হয়ে যায়। যার খবর আসে ঐদিন সকাল দশটা পনেরো মিনিটে। বিশ্বভারতীর ছাত্ররা ক্লাসে ব্যস্ত। হঠাৎ মাথায় বাজ পড়ার মতো ঘটনা। রবীন্দ্র সংগ্রহশালা থেকে চুরি গেছে নোবেল পুরস্কার সাথে রবীন্দ্রনাথের বেশ কিছু স্মৃতিমন্ডিত আসবাবপত্র। লোকচক্ষুর আড়ালে দিনের বেলাতে নোবেল চুরি যাওয়ার ঘটনা বাঙালির কাছে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। 

২০১১ সালে পরিচালক সুমন ঘোষ স্বতন্ত্র ভাবনাতে নোবেল চুরির ঘটনার প্রেক্ষাপটে 'নোবেল চোর' নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এখানে চলচ্চিত্রের গল্পে যা দেখানো হয়েছিল তা কিছুটা সত্য হতেও পারে বা নাও পারে। কিন্তু এই চলচ্চিত্রে নোবেল চুরির ঘটনাটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা থেকে মানুষের মনে বিশ্বাস জাগতেই পারে যে নোবেলটি এভাবেই হয়তো নিখোঁজ হয়েছে। 

কে করলো এই ঘটনা? দিনের পড়ন্ত আলোয় বা কী করে নোবেলটি চুরি হতে পারে? এ নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। ২০০৪ সালে পুরানো প্রশাসন তদন্ত করেনি নোবেল চুরির। এরপর কেটে গেল ষোলোটা বছর। আজও অজানা নোবেল চুরির রহস্য। বর্তমান প্রশাসন নোবেল চুরির তদন্ত করবে বলে কথা দেয়। ২০১৬ তে রাজ্য সরকার নোবেল চুরির তদন্ত নিয়ে কমিটি গঠন করবে বলে ঠিক করে। অথচ কাজের কাজ কিছুই হলোনা। তারাও কথা রাখতে পারলো না। 

প্রসাশনিক দুর্বলতা, বাঙালির অতিরিক্ত অসচেতনতা সাহায্য করেছিল নোবেল চুরি করতে। বহু বছর কেটে গেলেও রহস্যের দ্বার এখনও বন্ধ হয়ে যায়নি। অনেকেই চান নোবেল চুরির তদন্ত হোক। তবুও সাহস করে কেউ এগিয়ে আসেনি নোবেল চুরির তদন্ত করতে৷ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্যের মতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরির রহস্যও কোনো অংশে কম রোমহষর্ক নয়। আজকে এতো বছর পরে হয়তো বাঙালি সমাজ ভুলে গেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরির রহস্য এখনও পুনরুদ্ধার হয়নি। 

হয়তো কোনোদিনই আমরা জানবো আসলে কে বা কারা নোবেল চোর। কণিষ্কের মুখের ছবি যেমন আমরা কখনও দেখিনি তেমনই হয়তো নোবেল চোরের কথাও আমরা জানতে পারবো না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরি বাঙালিকে লজ্জিত করেছে। বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত অধ্যায় হলো নোবেল চুরি। এই কলঙ্কের অবসান খুব শীঘ্রই প্রয়োজন বাঙালির। তদন্ত হোক নোবেল চুরির রহস্য। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments