Header Ads

একের পর এক থিমের চমক বর্ষণ করে দুর্গোৎসবে মেতে উঠলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম আমলাশুলি


পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম আমলাশুলি। যেখানে বিগত কয়েক দশক ধরে জাঁকজমক ভাবে পালিত হচ্ছে দুর্গোৎসব। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর বা খড়গপুর শহরের পুজোর সাথে টেক্কা দিয়ে চলছে এই পুজো। গত কয়েক বছর ধরে আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসব জিতে নিয়েছে জেলার সেরার সেরা পুজোর শিরোপা। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে এই পুজো ছিনিয়ে নিয়েছে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মান। 


চলতি বছরে আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসব পদার্পণ করলো তেত্রিশ তম বর্ষে। অন্য বছরের ন্যায় এই বছরের পুজোতেও রয়েছে অসংখ্য চমক। যা দর্শনার্থীদের এককথায় মন জয় করে নিতে পারে। এই বছর পুজোর মন্ডপ দক্ষিণ ভারতের মন্দিরের আদলে ভুট্টা দিয়ে নির্মিত হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতিমার সাজও করা হয়েছে ভুট্টা দিয়ে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির শিল্পীদের গত দুই মাসের হাড় খাটুনির বিনিময়ে তৈরি হয়েছে পুজোর মন্ডপ। 

প্রতি বছর সুষ্ঠতা ও সততার সাথে আয়োজিত হয় আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসব। পুজোর সম্পাদক থেকে শুরু করে প্রতিটি সদস্য দর্শনার্থীদের প্রতি প্রচন্ড যত্নশীল। দর্শনার্থীদের যত্ন সহকারে পুজো দেখানোর জন্য এনারা নিদ্রা বিসর্জন দিয়ে পুজোর চারদিন পার করেন। কোনো দর্শনার্থী ভিড়ের মাঝে হারিয়ে গেলে বা কোনো দর্শনার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করে থাকেন পুজো কমিটি। 


প্রায় বাইশ লক্ষ টাকা খরচ করে আয়োজিত হয়েছে আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসব। মন্ডপ ও প্রতিমা দর্শন ছাড়াও দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে মেলার ব্যবস্থা। যেখানে বিকিকিনি স্টল থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্ট, খাবার দোকান সবের সমাহারে হয়ে ওঠে একাকার। দর্শনার্থীদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য কোনো কিছুরই খামতি রাখা হয়নি এই পুজোতে। 

আমলাশুলি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষেরা প্রত্যেক বছর ধূমধাম করে মেতে ওঠে এই পুজোতে৷ এই গ্রাম পুজোতে নিখাদ বাঙালিয়ানা বজায় রাখার চেষ্টা করে। গ্রামের ছেলেমেয়েরা নতুন বুনিয়াদি পোশাকে ছুটে আসে পুজোর মন্ডপে প্রতিমা দর্শনে। আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসবে সকল মানুষ জাতিভেদ ও ধর্ম ভুলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা বজায় রেখে আনন্দযজ্ঞে উজাড় হয়ে ওঠে। 

জেলা ও জেলার বাইরের লক্ষ লক্ষ মানুষ দূর-দূরান্তে ছুটে আসেন আমলাশুলি গ্রামের দুর্গাপুজো দেখতে। এমনকি শহরের খানকয়েক সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠান এই পুজোর উন্নতির জন্য স্পনসরও করে থাকেন। একটি গ্রামের কাছে এতো বড়ো পুজোর আয়োজন সত্যিই গর্বের।  
  

আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসবের সবচেয়ে বড়ো আকর্ষণ হলো প্রতি বছর চন্দননগরের আলোকসজ্জায় পুরো গ্রামকে সজ্জিত করা হয়। এই বছরও তা বজায় রাখা হয়েছে। যত দিন যাচ্ছে তত আমলাশুলি গ্রামের দুর্গাপূজার গুরুত্ব বাড়ছে। আমলাশুলির ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো আগামীদিনে আরো বড়ো আকার ধারণ করবে। 

লিটারেসি প্যারাডাইস টিম পুজো পরিক্রমার জন্য পৌঁছে গিয়েছিল আমলাশুলি সার্বজনীন দুর্গোৎসবে। সেখানকার পুজোর মন্ডপ, প্রতিমা ও আলোকসজ্জার দৃশ্য ক্যামেরাতে বন্দী করে সম্পাদনা করেছে এই পুজোর একটি স্পেশাল ভিডিও। নীচের লিঙ্কটি ক্লিক করে দেখে নিন এই স্পেশাল ভিডিওটি। 


প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments