অমর শহীদ বাঙালির গর্ব বিপ্লবী গোপীমোহন সাহা
১৯২৪ সালের প্রথম ভাগের কথা।প্রেসিডেন্সি
জেলে জীবনের শেষ দিনগুলি কাটাচ্ছেন প্রাণদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত হুগলির এক যুবক।জেলের
চার দেওয়ালের মধ্যে বসে বই পড়ে ও কালীমূর্তির সামনে ধ্যান করে সময় কেটে যায় তাঁর।শীর্ণকায়
শ্যামবর্ণ যুবক ভীষণ শান্ত স্বভাবের যুবকটির প্রতি মায়া পড়ে গিয়েছে প্রেসিডেন্সি
জেলের প্রহরীরও। এই যুবক খুনী মানতে
মন চায় না তাদেরও।
১৯২৪ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী।জেলের
প্রহরীর উদ্দেশ্যে যুবক বললেন-
- একটা কাগজ কলম পাওয়া যাবে?
- নিশ্চয়ই।আর কিছু লাগলে বলতে পারো।কিছু খেতে
ইচ্ছে করলে বলো, ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
- না না, কাগজ-কলম হলেই চলবে।চিঠি
লিখব একটা।
চিঠি লিখতে শুরু করলেন যুবক।
"শ্রীচরণেষু মা,
সর্বশক্তিমানের কাছে
প্রার্থনা কোরো ভারতের প্রতিটি সংসার যেন তোমার মতো মা লাভ করে ধন্য হয় আর তাঁরা
যেন তোমার গোপীর মতো সন্তান প্রসব করেন, যারা অক্লেশে প্রাণ
দেবে দেশের জন্য।
তোমার স্নেহের গোপী।"
এই চিঠিটি লেখার দুদিন পর
১৯২৪-এর পয়লা মার্চ অমর শহীদ বিপ্লবী গোপীমোহন সাহার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।"ফাঁসির
মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান"-এর দীর্ঘ তালিকায় যুক্ত হল হুগলির যুবক
গোপীমোহন সাহার নাম।যার নামে একটি সেতু রয়েছে শ্রীরামপুরে।
বাঙালি কি তাঁর আত্মত্যাগ
মনে রেখেছে? দেশকে কতটা ভালোবাসলে এই
কথাগুলি বলা যায় একবার ভাববেন।
অমর শহীদ বাঙালির গর্ব
বিপ্লবী গোপীমোহন সাহাকে (মতান্তরে গোপীনাথ সাহা) আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য।
তথ্যসূত্র-স্বাধীনতাযুদ্ধে
অচেনা লালবাজার-সুপ্রতিম সরকার
Post a Comment