কিংবদন্তি নাট্যকার ও অভিনতা মনোজ মিত্রের জীবনাবসান
বাংলা বিনোদন জগতে শূন্যতা। বাঞ্ছারামের বাগানকে একলা ফেলে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন কিংবদন্তি নাট্যকার ও অভিনেতা মনোজ মিত্র। যার প্রাণবন্ত অভিনয়ে মুগ্ধ হতো আট থেকে আশি সকলেই। তাঁর লেখা নাটক বাংলা নাট্যজগতকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। পাঠ্যবইতে পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত হয় তাঁর লেখা নাটক। চলচ্চিত্র জগতে অনন্য প্রতিভার সাক্ষ্য বহন করেন তিনি।
মৃত্যুকালে মনোজবাবুর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা নাট্য ও চলচ্চিত্র জগতে নেমে এলো শোকের ছায়া। এর আগে তাঁর মৃত্যু নিয়ে বহুবার নানান গুজব রটানো হয়েছিল। কিন্তু এবারের খবরটি আর গুজব নয়। তবে এ খবরটা গুজব হলেই বেশি ভালো হতো।
তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই হার্টের কঠিন অসুখে ভুগছিলেন। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস মেলিটাস, ক্রনিক কিডনির অসুখ, সিওপিডি, ডিমেনশিয়ার মতো রোগও তাঁর ছিল। এছাড়াও তাঁর হার্টের কার্যক্ষমতাও বেশ কম বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা সবরকমভাবে চেষ্টা করলেও জীবনযুদ্ধে থেমে যেতে হলো মনোজবাবুকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এ বছরের শুরুতে তাঁর বুকে প্রেসমেকার বসানো হয়েছিল। তারপর সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন তিনি। চলতি বছরে এ নিয়ে মোট ৩ বার হাসপাতালে যেতে হয়েছিল তাঁকে। তবে এবার আর ঘরে ফেরা হলো না তাঁর। নাট্যজগৎ ও চলচ্চিত্র জগতকে কাঁদিয়ে বিদায় নিলেন তিনি।
মনোজ মিত্রের মুখটা ভেসে উঠলেই মনে পড়ে রাখী পূর্ণিমা সিনেমায় বিয়ের তত্ত্বে ছোটো মাছ নিয়ে যাওয়া সেই কিপ্টে শ্বশুরের অভিনয়, বহু সিনেমায় করা তাঁর কূট চরিত্রে অভিনয় ও হাস্যকৌতুক সব চরিত্রে অভিনয়ের কথা।
তিনি মৃত্যুর চোখে জল, অবসন্ন প্রজাপতি, চাক ভাঙ্গা মধু, সিংহদ্বার, চোখে আঙুল দাদা, সাজানো বাগান, অলোকানন্দর পুত্রকন্যা, ফেরা, কালবিহঙ্গ, পরবাস, নকর গুলজার ও নীলার মতো অসংখ্য নাটক লিখেছেন ও অভিনয়ও করেছেন। তিনি প্রায় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। দামু, তিনমূর্তি, শত্রু, গণশত্রু, ঘরে বাইরে, বাঞ্ছারামের বাগান, আদর্শ হিন্দু হোটেল, আদালত ও একটি মেয়ে, গৃহযুদ্ধ, চরাচর, ভালোবাসার অনেক নাম এবং হঠাৎ বৃষ্টির বহু ছবিতে তিনি অভিনয় করেন।
প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা
Post a Comment