Header Ads

স্বাধীন ভারতের ব্যান হওয়া প্রথম চলচ্চিত্র 'নীল আকাশের নীচে'


চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ বা ব্যান হওয়া শুধু আজকের ঘটনা নয়, বহু দশক আগেও ছবি ব্যান হতো। অনেকেই হয়তো জানেন না যে স্বাধীন ভারতের প্রথম ব্যান হওয়া চলচ্চিত্র হলো "নীল আকাশের নীচে।"


১৯৫৯ সালে মুক্তি পেয়েছিল 'নীল আকাশের নীচে'। কিংবদন্তি পরিচালক মৃণাল সেনের এটি দ্বিতীয় ছবি। এই ছবিতে ব্রিটিশ ভারতের শেষ সময়ের প্রেক্ষাপটে কলকাতায় সমাজের সর্বস্তরের মানুষের জীবনধারাকে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে মূল চৈনিক ফেরিওয়ালা ও প্রধান মহিলা চরিত্র বাসন্তীর মধ্যে প্রেম ছবিতে চিত্রায়িত করা হয়েছে।

সালটা তখন ১৯৫৪, এপ্রিল মাস। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু'র সঙ্গে চিনের চৌ-এন-লাইয়ের উপস্থিতিতে ভারত ও চিন দুই দেশের মধ্যে তৈরি হয়েছে পঞ্চশীল শান্তিচুক্তি। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার প্রধান শীর্ষবিন্দু ছিল তিব্বত। দলাই লামা তখন তিব্বতে চৈনিক হানাদারদের আক্রমণের ভয়ে পলায়ন করলেন। ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা দানা বাঁধতে লাগলো। এমত পরিস্থিতিতেই এই শান্তিচুক্তি। 

এরকম এক রূদ্ধশ্বাস সময়ে দাঁড়িয়ে দেশের পুরো পরিস্থিতি লক্ষ্য করছেন পরিচালক মৃণাল সেন। গোটা সময়ের রাজনৈতিক টালবাহানা তিনি কড়া দৃষ্টিতে নজর রাখলেন। বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে লাগলেন। চতুর্দিক বিচার-বিশ্লেষণও করলেন। শেষমেশ সেই প্রেক্ষাপটেই সামনে নিয়ে এলেন নতুন একটি বাংলা ছবি 'নীল আকাশের নীচে'।

'নীল আকাশের নীচে' ছবিতে অভিনয় করেন কালী ব্যানার্জি, স্মৃতি বিশ্বাস, মঞ্জু দে, বিকাশ রায়, মনু মুখোপাধ্যায়, শৈলেন মুখার্জি, ভাস্কর দেব ও আরো অনেকে। ছবিটি ১৯৫৯ সালের ২০ শে ফেব্রুয়ারী মুক্তি পেলেও দুম করে ভারত সরকার ছবিটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। 

'নীল আকাশের নীচে' ছায়াছবিটির গল্পে ও চিত্রায়ণে সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকার ফলে স্বাধীন ভারতের প্রথম ব্যানড সিনেমায় পর্যবসিত হয়। এই ছবিতে সামাজিক ওপরতলার মানুষদের দরিদ্রদের প্রতি অবহেলার মানসিকতাকে তুলে ধরেছিলেন তিনি। যদিও ছবিটি ব্যান হওয়ার দু'মাস পরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments