শব্দছক নিয়ে বাংলার প্রথম পত্রিকার জন্ম দিলেন বাংলার 'পাজল-ম্যান' শুভজ্যোতি রায়
শব্দছক যে শব্দটির সঙ্গে কম-বেশি সবাই পরিচিত। অগোছালো অক্ষরের মধ্যে থেকে একগুচ্ছ শব্দ তৈরির একটি খেলা হলো শব্দছক৷ বিভিন্ন বাংলা সংবাদপত্রের বিশেষ পাতাতে মূলত রবিবার শব্দছকের জন্য একটি বিশেষ পাতা থাকে। এই পাতাতে কলমে অনেকে লিখে লিখে শব্দ তৈরি করেন৷ তার শব্দ গঠন আদৌ ঠিক আছে কিনা তা জানা যায় পরবর্তী সপ্তাহে৷ শব্দছক অত্যন্ত বুদ্ধি ও ধৈর্য্যের খেলা। যে খেলাটি বাংলা শব্দ সম্পর্কে তুখোড় জ্ঞান তৈরি করতে সাহায্য করে।
এই শব্দছকের ওপর ভিত্তি করেই বাংলার প্রথম ত্রৈমাসিক শব্দছক পত্রিকার জন্ম দিলেন যাদবপুর সন্তোষপুরের বাসিন্দা শুভজ্যোতি রায়৷ শব্দছকের এই ত্রৈমাসিক পত্রিকার নাম শব্দবাণ। যার প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে গত ১৫ ই সেপ্টেম্বর। এর দাম মাত্র ১০ টাকা। চার পাতার এই ট্যাবলয়েডে একাধিক বিষয়ের উপর শব্দছক আছে। এছাড়াও পাঠকদের জন্য প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাও আছে৷ সেই প্রতিযোগীদের মধ্যে থেকে বিজয়ীদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কারও।
শুভজ্যোতি রায়কে লোকে 'পাজল-ম্যান' নামেই বেশি জানেন৷ প্রতিনিয়ত যারা শব্দছক খেলতে ভালোবাসেন বা যাঁদের শব্দের ধাঁধা সমাধানের নেশা রয়েছে তাঁরা অনেকেই পরিচিত নামটির সঙ্গে। শব্দছকের ধাঁধা প্রস্তুতিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তিনি বাংলার এক ও অদ্বিতীয় ধাঁধা প্রস্তুতকারী। বাংলার প্রথম সারির বিভিন্ন সংবাদপত্রের জন্যও তিনি মাঝেমধ্যে শব্দছক বানিয়েছেন। ২০১৮ সালে তাঁর তৈরি শব্দছককে ফ্যাশন ডিজাইনাররা তাঁদের বস্ত্রসম্ভারে ব্যবহার করেছিলেন। সেই পোশাক পরে তা নিয়ে রেম্পে হেঁটেছিলেন মডেলরা।
স্কুল জীবন থেকেই তিনি শব্দ নিয়ে খেলার অভ্যাস তৈরি করেছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি শব্দছক তৈরি করা শুরু করেন৷ গোড়াতেই এই ব্যাপারে আপত্তি তোলেন তাঁর বাবা৷ তবে সেই আপত্তি ধোপেও টেকেনি, শুরুতেই তিনি নজরে পড়ে যান সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর। তারপর গুটি গুটি পায়ে তাঁর শুধুই এগিয়ে চলা। শব্দছক বানানোর জন্য দু'দুবার লিমকা বুক অফ রেকর্ডসেও নাম ওঠে তাঁর৷
ইতিমধ্যেই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোময় ভট্টাচার্যের মতো বিশিষ্টরা তাঁর এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তাই তাঁর এই শব্দবাণও লক্ষ্যভেদ করবে বলেই আশাবাদী শুভজ্যোতি বাবু। শব্দছক নিয়ে এমন কাজ ভূ-ভারতেও হয়নি বললেই চলে।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment