Header Ads

দৃষ্টিহীন হয়েও সুন্দরবন বাঁচানোর লড়াইতে পথ দেখাচ্ছেন অকুল বিশ্বাস



সুন্দরবনের ঝড়খালির বাসিন্দা অকুল বিশ্বাস। ২০০১ সালে গ্লুকোমা তে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারান। জীবনের এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে যখন তিনি মৃত্যু ছাড়া আর কোন রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলেন না ঠিক তখনই একজন সজ্জন ব্যক্তির পরামর্শে বেঁচে থাকার জন্য শুরু করলেন গাছ লাগানো। তিনি দু'চারটে আম গাছের চারা রাস্তার ধারে বসিয়ে পথচলা শুরু করেন। এখন তিনি জোর কদমে সুন্দরবনকে ম্যানগ্রোভে ভরিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি আসলে নদীবাঁধের চারিদিকে একটি ম্যানগ্রোভের দেয়াল তৈরি করতে চান, যাতে নদীর বাঁধ ভালো থাকে। এতে সুন্দরবন রক্ষা পাবে, আবার অন্যদিকে পৃথিবীর তাপমাত্রারও ভারসাম্য থাকবে কিছুটা।

অকুল বিশ্বাসের পথ চলার প্রথম দিকটায় তাঁকে শুনতে হয়েছিল চোখের সাথে মাথাও খারাপ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আস্তে আস্তে তাঁর এই উদ্যোগ জায়গা করে নেয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে সাথে পান কিছু মানুষকে মূলত সেই সব মহিলাদের যাদের স্বামীদের বাঘে টেনে নিয়ে গিয়েছে। ২০০৯ সালে তিনি  তৈরি করলেন 'সবুজ বাহিনী'। বর্তমানে সবুজ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৬০০ থেকে ৭০০ জন মহিলা।

গাছ লাগানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজ করে সবুজ বাহিনী। কখনও মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে, আবার কখনো ছোট ছোট বাচ্চাদের বিনা পয়সায় শিক্ষাও দান করে থাকে।

তবে অকুলবাবুর খুব দৃঢ় একটি  নীতি, কোন সহৃদয় ব্যক্তি থেকে পাওয়া কোন সাহায্যসামগ্রী অপাত্রে দান হতে দেন না, যে সমস্ত মানুষ কাজ করেন তারাই শুধু পান। তিনি লিটারেসি প্যারাডাইসকে বলেন "যারা কাজ করে না তাদের একটা লজেন্স দিয়েও সাহায্য করি না, কারণ আমি মনে করি তাদেরকে সাহায্য করলে তারা দুর্বল হয়ে পড়বে। তোমরা কাজ করো সবকিছু পাবে ধনী-গরীব নির্বিশেষে"

অকুলবাবু পুঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়েও জীবনের আসল মানে তিনি শেখান মানুষকে। পরিবেশ গড়ার কাজে তিনি এক শ্রেষ্ঠ কারিগর।

প্রতিবেদন- পৌলমী হালদার


No comments