Header Ads

পথিকৃৎ সাহা ওরফে 'রোলকাকু' হয়ে উঠেছেন সমাজের পথপ্রদর্শক


প্রত্যেকটি দেশের কান্ডারী হলো শিক্ষা, শিক্ষাই পারে এগিয়ে নিয়ে যেতে কিন্তু আমাদের দেশে এমন অনেক শিশু আছে যাদের শিক্ষিত হওয়া তো দূরের কথা বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাবারটুকুও পাওয়ার জন্য বেছে নিতে হয় ভিক্ষাবৃত্তি। এইসব শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো জ্বালানো খুব একটা সহজ কাজ নয়, কিন্তু এই কঠিন কাজকেই সহজ করছেন 'রোলকাকু' পথিকৃৎ সাহা।



তবে অবশ্য বুদো, মাম্পি, বাবাই, সেলিমের কাছে পথিকৃৎ পরিচিত ভালোবাসার রোলকাকু নামে। পেশায় জোমাটো ডেলিভারি বয় তার খাবারের সার্ভিসের 'ক্যানসেল' অর্ডারগুলো তুলে দেন পথ শিশুদের হাতে।

শুধুমাত্র খাওয়ালেই যে দায়িত্ব শেষ তা নয় এদের মধ্যে শিক্ষার আলো পোঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন পথিকৃৎ সাহা। তাদের পড়ানো, বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি করানো থেকে শুরু করে বই, খাতা, পেন এবং পড়াশুনা সম্পর্কিত নানান অনুষঙ্গিক সব দায়িত্বই তিনি নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।

প্রথমে যাত্রা টা দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এর ২ নং প্ল্যাটফর্ম দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে তার পরিষেবা পৌঁছে যায় প্রত্যন্ত সুন্দরবনেও। কুলতলী ব্লকের কৈলাস নগর পাকুড়তলা কেল্লা ও ডোঙ্গাজোড়ার মত এলাকায় ২১০ জন শিশুর শিক্ষার ভার বহন করছে তার তৈরি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'হেল্প'। ২০১৯ সালে রাষ্ট্রসংঘ স্বীকৃত 'কর্মবীর' সম্মানে রাজ্যের তৃতীয় বাসিন্দা হিসেবে ভূষিত হন পথিকৃৎ সাহা। তাঁর তৈরি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'হেল্প' আজ ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের 'ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া'র 'প্রোজেক্ট ফুড শেয়ারিং অ্যালায়েন্সে'র সদস্য। বাংলায় একমাত্র তাদের কাছেই এসেছে এই স্বীকৃতি। 

পথিকৃৎ ভালোবাসে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে এবং এগুলি তার জীবনে পরম প্রাপ্তি বলে মনে করেন। ২০১৮ তে গতে বাঁধা, পৌরসভার চাকরি ছেড়ে ডেলিভারির কাজ শুরু করেন। পথিকৃৎ সাহা লিটারেসি প্যারাডাইসকে বলেন "অর্থাভাবে উচ্চমাধ্যমিকের পর আর পড়তে পারিনি কিন্তু আমি চাই ওরা এগিয়ে যাক ওদেরকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করে বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে চাই"।

আমাদের দেশে এমন অনেক বুধো, মাম্পি আছে যাদের পাশে পথিকৃৎবাবুর মত মানুষের দাঁড়ানো দরকার। আমাদের দেশে এমন হাজার হাজার 'রোলকাকু' তৈরি হোক যারা হয়ে উঠবে সমাজের পথপ্রদর্শক।

প্রতিবেদন- পৌলমী হালদার



No comments