Header Ads

চলচ্চিত্র জগতে ইন্দ্রপতন, চলে গেলেন প্রখ্যাত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত


বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ইন্দ্রপতন। চলে গেলেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। দক্ষিণ কলকাতার নিজস্ব বাসভবনে আজ সকাল ছটায় শেষ নিঃশ্বাস করলেন তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। বার্ধক্যজনিত সমস্যা ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি৷ ডায়ালিসিস চলছিল তাঁর। পরিবার সূত্রে খবর, গতকালও তাঁর ডায়ালিসিস হয়েছিল। আজ ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। এদিন সকালে দেখা যায়, তাঁর সাড়া মিলছে না। এরপর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।  


সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন এবং ঋত্বিক ঘটকের যোগ্য উত্তরসূরি বলা হত তাঁকে। তাঁর নির্মিত বিখ্যাত কয়েকটি ছবি হলো 'বাঘ বাহাদুর', 'তাহাদের কথা', 'চরাচার' ও 'উত্তরা'। তাঁর শ্রেষ্ঠ পাঁচটি চলচ্চিত্র 'বাঘ বাহাদুর', 'চরাচর', 'লাল দরজা', 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান', 'কালপুরুষ' ও 'দৌরাতওয়া' ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। তাঁর পরিচালিত 'তাহাদের কথা' বাংলাতে শ্রেষ্ঠ ফিচার ফিল্মের জন্য জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেছিল। তিনি পরিচালক হিসেবে 'উত্তরা' ও 'স্বপ্নের দিন' এর জন্য দুইবার সেরা নির্দেশনার জন্য চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। 

১৯৪৪ সালের ১১ ই ফেব্রুয়ারী পুরুলিয়ার আনাড়ার জন্মগ্রহণ করেছিলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। সেখানেই কেটেছে তাঁর শৈশবকাল। তাঁর বাবা রেলে চাকরি করতেন। ১২ বছর বয়সে হাওড়াতে তিনি আসেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা লাভের জন্য। তারপর অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন স্কটিশ চার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবেই কর্মজীবন শুরু করেছিলেন।  

চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করলেও তাঁর যোগাযোগ ছিল সাহিত্য জগতের সাথেও। তাঁর কলমে উঠে এসেছে একাধিক কবিতা, যা নিয়ে আজও চর্চা হয়। তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য 'রোবটের গান', 'ছাতা কাহিনি', 'গভীর আড়ালে' ইত্যাদি। পড়াশোনা ও সাহিত্য জগৎ থেকে পরিচালক হয়ে ওঠার পিছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি। সেখানের তাঁর পরিচয় ঘটে চার্লি চ্যাপলিন, আকিরা কুরোসাওয়া ও ইঙ্গমার বার্গম্যানের সাথে।  

পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের শেষ ছবি 'উড়োজাহাজ'। যা মুক্তি পেয়েছিল ২০১৮ সালে। যে ছবি বহু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তাঁর মৃত্যুতে অবসান হলো চলচ্চিত্রের এক সোনালী অধ্যায়ের। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত গোটা চলচ্চিত্রমহল। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments